পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
খাগড়াছড়িতে উজাড় হচ্ছে অশ্রেণিভুক্ত বনের গাছ। পার্বত্য এলাকায় সংরক্ষিত বন, রক্ষিত বন, ব্যক্তি মালিকাধীন বন ও অশ্রেণিভুক্তসহ চার ধরনের বন রয়েছে। তবে বেশির ভাগই অশ্রেণিভুক্ত বনের আওতাভুক্ত। তবে গত কয়েক দশকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও অশ্রেণিভুক্ত বনাঞ্চল ব্যাপক হারে উজাড় হয়েছে। বনখেকোদের দৌরাত্ম্যে এসবে বনের কাঠ নির্বিচারে কাটা হচ্ছে।
দুর্গম এলাকা হওয়ায় এখানে তেমন নজরদারি নেই। পাহাড় থেকে পরিবহন করে সেসব কাঠ নেয়া হয় ইটভাটা, সমিলসহ বিভিন্ন জায়গা। এভাবে ধ্বংস হচ্ছে সবুজ পাহাড়। সা¤প্রতিককালে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ওপর বন বিভাগের উপর নজরদারি বাড়লেও একেবারেই অরক্ষিত অশ্রেণিভুক্ত বনাঞ্চল। এসব বনাঞ্চল নিয়ে এখনো কোন জরিপ হয়নি। সাধারণত খাস পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবে যে বনাঞ্চল গড়ে তা অশ্রেণিভুক্ত বনাঞ্চলের আওতাভুক্ত। এসব বন থেকে নির্বিচারে গাছ কেটে নিচ্ছে বন খেকোরা। সাধারণত পার্বত্য এলাকায় গাছ কাটতে হলে সরকারিভাবে অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু নজরদারি ও তদারকির অভাবে বিনা অনুমতিতে বন থেকে গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে বনখেকোরা।
অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে বনাঞ্চল উজাড়ের তথ্য। প্রতিদিন খাগড়াছড়ি বিভিন্ন অশ্রেণিভুক্ত বন উজাড় হচ্ছে ১৬ হাজার ৫শ’ মণ গাছ। যা ইট ভাটার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এভাবে বন ধ্বংসের পেছনে ইটভাটা মালিকদের ইন্ধন রয়েছে। একশ্রেণির দালাল চক্রের মাধ্যমে তারা বন উজাড় করছে।
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ও পানছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী সীমানাপাড়া এলাকা। পাড়া থেকে প্রায় এক ঘণ্টা হাঁটার পর বন খেকোদের দেখা মিলল। যেতে যেতে চোখে পড়ে বনের গাছ পরিবহন করার জন্য পাহাড় কেটে রাস্তা করা হয়েছে। আসন্ন বর্ষায় পাহাড়ের রাস্তা ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। গাছ কাটার কাজে নিয়োজিত সুলতান আনোয়ার হোসেন দেবপ্রসাদ ত্রিপুরাসহ একাধিক শ্রমিক জানান, এসব পাহাড় খাস হলেও স্থানীয়রা এর মালিকানা ভোগ করে। তারা পাহাড়ের গাছ চুক্তিভিত্তিক বিক্রি করে। ইটভাটায় গাছ সরবরাহকারী দালালরা (মাঝি) স্থানীয়দের কাছ থেকে পাহাড়ের গাছ কিনে নেয়।
তারপর সেসব গাছ নির্বিচারে কাটা হয়। গাছ কাটার কাজে নিয়োজিত প্রতিটি শ্রমিকের মজুরী ৪শ’ টাকা। শ্রমিকেরা আরো জানায়, বিকল্প আয়ের উৎস না থাকায় বাধ্য হয়ে এই কাজ করতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে পুরোটায় এ কাজ করে তারা। সীমানা পাড়া এলাকায় একসাথে গাছ কাটার সাথে নিয়োজিত রয়েছে প্রায় ২৫ জন শ্রমিক। গাছ কর্তন থেকে পরিবহন করে তারা। সারাদিনে অন্তত ৬শ’ মণ গাছ কর্তন করে তারা। তারা জানান, রতন কুমার দাস নামে একজন দালাল ৫০ হাজার টাকায় এই পাহাড়ের সব গাছ কিনেছে। তার নির্দেশে এসব গাছ কর্তন চলছে।
যে পাহাড় থেকে গাছ কর্তন করা হয়েছে সেখানে দেবপ্রসাদ ত্রিপুরাকে পাওয়া গেলেও তিনি গাছ কাটার সাথে নিজের সম্পৃক্ততার কথা অস্বাকীর করেন। বন ধ্বংস হওয়ায় বিপন্ন হচ্ছে পশু পাখির আশ্রয়স্থল। বিনষ্ট হচ্ছে জীবজগৎ। দুর্গম পাহাড় থেকে সহজে গাছ পরিবহনের জন্য পাহাড় কেটে রাস্তা বানায় বনখেকোরা। বনের গাছ কর্তন রোধে কঠোর পদক্ষেপ চাই পরিবেশ কর্মীরা। পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলনের সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী জানান, অনুমতি ছাড়া অশ্রেণিভুক্ত বনের গাছ কাটার কোন নিয়ম নেই।
কিন্ত খাগড়াছড়িতে নির্বিচারে বন কর্তন হয়। কোন বাধা ছাড়া বন উছাড় হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে একসময় সবুজ পাহাড় বলতে আর কিছু থাকবে না। বনের গাছ কাটা বন্ধে টাস্কফোর্স করে অভিযান জোরদার করার দাবি জানান খাগড়াছড়ির বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সরোয়ার জামান। তিনি বলেন, অশ্রেণিভুক্ত বনাঞ্চল মূলত জেলা প্রশাসকের আওতাধীন। ব্যবস্থা নেয়ার এখতিয়ার বন বিভাগের রয়েছে। বনবিভাগ অভিযান জোরদার করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।