পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : ফিলিস্তিন ভূখন্ডে ইসরাইলি দখলদারিত্বের অবসান না করা পর্যন্ত অঞ্চলটি থেকে সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রপন্থা নির্মূল করা এবং সেখানে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা যাবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্য পূরণ করতে চাইলে আগে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে ফিলিস্তিন ভূখ-ে ইসরাইলি দখলদারিত্ব অবসানের জন্য ২০১৭ সালকে আন্তর্জাতিক বর্ষ ঘোষণা করতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আব্বাস। গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রদত্ত ভাষণে এসব আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে ১৯১৭ সালে ফিলিস্তিনি ভূখ-ে জোরপূর্বক ইহুদি হোমল্যান্ড ঘোষণা করার জন্য ব্রিটেনের প্রতি ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন মাহমুদ আব্বাস।
সত্যিকার অর্থে শান্তি প্রতিষ্ঠা চান এমন এক নেতা ইসরাইল পাবে এমন আশা রেখে আব্বাস বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা আমাদের হাত বাড়িয়ে রেখেছি। তবে প্রশ্ন হলো সত্যিকার অর্থে শান্তি চান এমন নেতা ইসরাইলে আসবেন কিনা; যিনি কর্তৃত্ব ও সাম্রাজ্যবাদী মনোভাব ছেড়ে আমাদের জনগণের অধিকারকে স্বীকৃতি দেবেন এবং ঐতিহাসিক এ অবিচারের সমাপ্তি টানবেন। শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কোনও ধরনের অস্থায়ী সমাধান মেনে নেয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দেন আব্বাস। তিনি বলেন, ১৯৯৩ সালের অসলো চুক্তি অনুযায়ী পাঁচ বছরের মধ্যে দখলদারিত্বের অবসান এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বাধীনতা অর্জনের কথা ছিল। কিন্তু ইসরাইল চুক্তির প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে এবং তাদের দখলদারিত্ব ও অবৈধ বসতি স্থাপন বিস্তৃত করে যাচ্ছে। আব্বাস বলেন, আমাদের সঙ্গে ইহুদিদের কোনও সংঘাত নেই। আমাদের সংঘাত ইসরাইলি দখলদারিত্বের সঙ্গে। আমরা ইহুদি ধর্মকে সম্মান করি এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইউরোপে ইহুদিদের ওপর যে নির্যাতন হয়েছে তার নিন্দা জানাই আমরা এবং একে মানবতার বিরুদ্ধে ঘৃণ্য অপরাধ বলে মনে করি।
অপর এক খবরে বলা হয়, এর আগে একই অধিবেশনে দেয়া ভাষণে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু মাহমুদ আব্বাসকে ইসরাইলি পার্লামেন্ট নেসেটে এসে কথা বলার আহ্বান জানান। ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরাজমান সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘের কাছে সমাধান না চেয়ে দু’দেশের মধ্যে সরাসরি আলোচনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। জাতিসংঘের অধিবেশনে রাখা বক্তব্যে আব্বাসের উদ্দেশে নেতানিয়াহু বলেন, জেরুজালেমে এসে নেসেটে দাঁড়িয়ে ইসরাইলের মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। একইভাবে আমিও রামাল্লায় গিয়ে ফিলিস্তিনি পার্লামেন্টে কথা বলতে আগ্রহী। জেরুজালেম আর রামাল্লার পথ ধরে আসবে শান্তি। নিউ ইয়র্কে নয়। একইসঙ্গে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকট নিরসনে জাতিসংঘের কাছ থেকে আসা কোন একপাক্ষিক সমাধান-পরিকল্পনায় ইসরাইল কোন সায় দেবে না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ইসরাইলের ওপর কোনও নীতিমালা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা মেনে নেয়া হবে না। ইসলামি মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার ক্ষেত্রে ইসরাইলের কূটনৈতিক অবস্থান ও আরব দেশগুলোর সঙ্গে এর সম্পর্ক বিপ্লবের চেয়ে কোনও অংশে কম নয় বলেও মন্তব্য করেন নেতানিয়াহু। নেতানিয়াহু আরও জানান, আরব দেশগুলো যে ইসরাইলকে শত্রু হিসেবে না নিয়ে বরং বন্ধু হিসেবে নিয়েছে, এ বিষয়টি আশাবাদী করেছে তাকে। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী নিউ ইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘের সদর দফতরে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর উপস্থিতিতে সংস্থাটির ৭১তম সাধারণ অধিবেশন শুরু হয়। জেরুজালেম পোস্ট, বিবিসি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।