Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পুতিন-বাইডেন বৈঠক কার্যকরী সম্পর্ক হয়ে উঠতে পারে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ জুন, ২০২১, ১২:০৬ এএম

বুধবার জেনেভাতে তাদের বৈঠকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে কার্যকরী সম্পর্ক গঠনের চেষ্টা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে, বৈঠকের পর বাইডেন এবং পুতিনের পৃথক সংবাদ সম্মেলন দু’দেশের শীতল সম্পর্ককে প্রতিফলিত করেছে। এ সম্পর্কে বাইডেন বলেছেন, ‘এটি স্বার্থগত বিষয়।’

বৈঠকে একে অপরের সম্পর্কে তাদের মূল্যায়ন পেশাগত এবং সংযত ছিল। পুতিন বাইডেনকে ‘অত্যন্ত ভারসাম্যপূর্ণ, পেশাদার মানুষ’ এবং ‘খুব অভিজ্ঞ’ রাজনীতিবিদ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এতে অবশ্যই বোঝায় না যে, আমরা পরস্পরের চোখের দিকে চেয়েছিলাম এবং প্রাণ খুঁজে পেয়েছি বা চিরন্তন বন্ধুত্বের শপথ নিয়েছি।’ বাইডেনের কথায়, তাদের আলোচনা ‘কর্কশ নয়’, ছিল ‘ভাল এবং ইতিবাচক’।

পারস্পরিক সম্প্রীতির ক্ষুদ্র প্রয়াস হিসেবে বাইডেন তার এক জোড়া প্রিয় এভিয়েটর সানগ্লাস পুতিনকে উপহার দিয়েছেন, যিনি সানগ্লাস পরা পছন্দ করেন এবং পুতিন উল্লেখ করেছেন যে, বাইডেন তার মা সম্পর্কে পুতিনকে নানা গল্প বলেছেন, যেমনটি তিনি প্রায়শই করেন।

পরে প্রত্যেকেই বিবিধ বিষয়ে তাদের অবস্থান জানিয়ে বক্তব্য দেন। বাইডেন রাশিয়ান সাইবার আক্রমণ, আন্তর্জাতিক আগ্রাসন এবং ঘরোয়া নিপীড়নের নিন্দা জানান এবং পুতিন আপত্তিজনক আমেরিকান পদক্ষেপের উদ্ধৃতি দেন। তবে তারা উভয়ই ব্যক্তিগত সমালোচনা থেকে বিরত থাকেন। ২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার শাস্তিস্বরূপ তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার ভাইস প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সমর্থন নিয়ে পুতিনকে ৮টি শিল্পোন্নত দেশের জোট থেকে বহিষ্কার করে দিয়েছিলেন এবং তার সাথে সাক্ষাত করতে অসম্মতি দিয়েছিলেন। বাইডেন এবার কার্যকরভাবে তার পূর্ববর্তী পদ্ধতিকে অগ্রাহ্য করেছেন এবং মস্কোর সাথে তিক্ততা কমানোর প্রত্যাশায় চির শত্রæ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে আমেরিকান প্রেসিডেন্টের সাথে একটি ইতিবাচক বৈঠক করার সম্মান এবং মর্যাদা দেওয়ার কৌশল গ্রহণ করেছেন। আমেরিকার উদ্দেশ্য, দু’পক্ষের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি না হলেও যথাসম্ভব আরো অবনতি ঠেকানো।

সেই অর্থে কিছু বিশেষজ্ঞ বলেছেন যে, জেনেভা বৈঠকটি আমেরিকান প্রভাব, প্ররোচনা, চাপ এবং শাস্তিকে কাঁচকলা দেখানো এক সময়কার কে.জি.বি. কর্নেল পুতিনকে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আরো আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত করে থাকতে পারে। কারণ ইতোমধ্যে তিনি ইউক্রেন সীমান্ত কমপক্ষে থেকে কিছু সেনাদল প্রত্যাহার করেছেন এবং রামিশয়ার বিরোধীদলীয় নেতা কারাবন্দি আলেক্সেই এ. নাভালনি, যিনি মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে, তাকে চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছেন।

বাইডেন যদি প্রথম সাক্ষাতে পুতিনের সাথে ফাটল এড়িয়ে থাকেন, তাহলে এটি ছিল রাশিয়া-আমেরিকান সম্পর্কের সর্বশেষতম অধ্যায়ের নতুন সূচনা। ট্রাম্পের সিনিয়র রাশিয়া উপদেষ্টা ফাইওনা হিল বলেছেন, ‘তিনি অন্য প্রেসিডেন্টদের কাছ থেকে সমস্ত পাঠ সংশ্লেষিত করার চেষ্টা করছেন।’ তিনি বলেন, ‘প্রশ্ন হ’ল এরপর কী ঘটবে।’

রাশিয়ায় কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রাক্তন মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তা এবং পুতিন ও পাশ্চাত্য সম্পর্কে বিভিন্ন বইয়ের লেখক অ্যাঞ্জেলা ই স্টেন্ট এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘তাদের কেউই সত্যিই কোনও বিষয়ে হার মানেননি। তবে তাদের দেখে মনে হয়েছে যে, এমন কিছু প্রতিষ্ঠা হয়েছে যা কার্যকরী সম্পর্ক হয়ে উঠতে পারে।’ সূত্র : দ্য নিউইয়র্ক টাইম্স।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ