চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
মুসলমানদের উপর যে সমস্ত বিষয়ের প্রতি ঈমান আনা ফরজ, তারমধ্যে আখিরাত তথা পরকাল এবং সেখানকার নিয়ামত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। মানুষ পার্থিব জগত এবং তার বুক বিলাস এর মাঝে ডুবে থেকে পৃথিবীর এর মাধ্যমে পরকালের জীবনে পদাপর্ণ করার অনিবার্য ঘটনা কেয়ামত ও এর ভয়াবহতার কথা ভুলে যেতে পারে। ফলে আখেরাতের মঙ্গলের জন্য আমল করাও ছেড়ে দিতে পারে। এই জন্য মহান আল্লাহ তা’আলা কেয়ামতের পূর্বে এমন কতগুলো আলামত নির্ধারণ করেছেন যা আখেরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় এবং কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার অকাট্য প্রমাণ বহন করে এবং এ বিষয়ে সকল প্রকার সন্দেহ দূর করে দেয়। কেয়ামতের ছোট ছোট আলামত প্রায়ই প্রকাশ হইয়ে গিয়েছেন। যেমন সৎ কাজের আদেশ করা অসৎ কাজের নিষেধ করাকে ছেড়ে দেওয়া। আমানতের খিয়ানত করা। অন্যায়হীনতা মানুষরা সমাজের কাছে অন্যায়ের বিচার না পাওয়া। মূর্খ লোক সমাজের নেতা হওয়া। মসজিদের ভিতরে ফাসেকদের আওয়াজ বৃদ্ধি পাওয়া। দরিদ্র ব্যক্তিরা বড় বড় দালানকোঠা বিল্ডিং তৈরি করা। অন্যায়কারীর বিচার না হওয়া। গান-বাদ্য আওয়াজ বৃদ্ধি পাওয়া। আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা। মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া। দুনিয়াবী স্বার্থে ইলম অর্জন করা। মানুষের জন্য মানুষদের থেকে মায়া মহাব্বত ভালোবাসা উঠে যাওয়া। পর্দাহীনতা। ইত্যাদি।
কেয়ামতের বড় বড় আলামত গুলো প্রকাশ হওয়া, যেমন ইমাম মাহাদি আলাইহিস সালামের আগমন করা। দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ লাভ করা, ইয়াজুস এবং মাজুজের আবিভার্ব হওয়া- হযরত হুযাইফা ইবনে আসিদ ফাইল গিফারী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন একদিন আমাদের সমালোচনার মধ্যখানে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে উপস্থিত হলেন হুযুর সা বললেন তোমরা কি বিষয়ে আলোচনা করছ তারা বললেন আমরা কিয়ামত বিষয়ে কথা বলছি তিনি বললেন ১০ টি আলামত প্রকাশ হওয়ার পূর্বে কেয়ামত কখন সংঘটিত হবে না তারপর তিনি সেগুলো উল্লেখ করে বলেন ৬ নাম্বারে ইয়াজুস মাজুস স¤প্রদায়ের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে (সহীহ মুসলিম)
আল্লাহ তা’আলা বলেন আর তোমরা সে দিনকে ভয় কর, যেদিন কেউ কারো কোন কাজে আসবে না। আর কারো পক্ষ থেকে কোন সুপারিশ গ্রহণ করা হবে না এবং কারও কাছ থেকে কোন বিনিময় নেয়া হবে না। আর তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না। (আল-বায়ান)
আল্লাহ তা’আলা বলেন অতঃপর তোমরাই তো তারা, যারা নিজদেরকে হত্যা করছ এবং তোমাদের মধ্য থেকে একটি দলকে তাদের গৃহ থেকে বের করে দিচ্ছ; পাপ ও সমীলঙ্ঘনের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে সহায়তা করছ। আর তারা যদি বন্দী হয়ে তোমাদের নিকট আসে, তোমরা মুক্তিপণ দিয়ে তাদেরকে মুক্ত কর। অথচ তাদেরকে বের করা তোমাদের জন্য হারাম ছিল। তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশে ঈমান রাখ আর কিছু অংশ অস্বীকার কর? সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা তা করে দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা ছাড়া তাদের কী প্রতিদান হতে পারে? আর কিয়ামতের দিনে তাদেরকে কঠিনতম আযাবে নিক্ষেপ করা হবে। আর তোমরা যা কর, আল্লাহ সে সম্পর্কে গাফিল নন। (আল-বায়ান)
আল্লাহ তা’আলা বলেন আপনাকে জিজ্ঞেস করে কেয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে? বলে দিন এর খবর তো আমার পালনকর্তা কাছেই রয়েছে। তিনি তা অনাবৃত করে দেখাবেন নির্ধারিত সময়ে। আসমান ও জমিনের জন্য সেটি অতি কঠিন বিষয়, যখন তারা তোমাদের উপর আসবে অজান্তেই এসে যাবে তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করতে থাকে যেন আপনি তার অনুসন্ধানে লেগে আছেন বলে দিন এর সংবাদ বিশেষ করে আল্লাহর নিকট রয়েছে। কিন্তু তা অধিকাংশ লোকই উপলব্ধি করে না। (সূরা আরাফ ১৮৭)
কেয়ামত বিষয়ে যদি আমরা হাদিসের দিকে লক্ষ করতে যাই হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন আমার উম্মতের মাঝে শাহাদাত ও মাধ্যমগুলি সমপরিমাণ দূরত্ব রেখে আমাকে পেরন করা হয়েছে। (বুখারী)। আবু উমামা বাহেলি (রা) বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল (স) বলেছেন, ইসলামের কড়াগুলো একটি একটি করে ভেঙ্গে যাবে। একটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর মানুষ তার পরেরটি আঁকড়ে ধরবে। সর্বপ্রথম যে কড়াটি ভাঙবে, সেটি হল ইসলামী শাসন। আর সর্বশেষটি হল নামাজ। [মুসনাদ আহমাদ, হাকিম, ইবনে হিব্বান]
আব্দুল্লাহ(রা) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ(সা) বলেন: কিয়ামত যখন কাছে চলে আসবে তখন এমন দিন আসবে যখন মূর্খতা ছড়িয়ে পরবে, জ্ঞান তুলে নেওয়া হবে এবং প্রচুর ‘হারজ’ হবে। হারজ হল হত্যা। (সহীহ বুখারী)। আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (স) বলেন, কিয়ামত কায়েম হবে না যতক্ষণ না ফিতনা প্রকাশ পাবে এবং মিথ্যাচার বেড়ে যাবে এবং বাজার হবে কাছাকাছি’। (আহমদ সহীহ)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।