নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ম্যাট হামেলস কি রাতে ঘুমাতে পেরেছিলেন? কে জানে। তবে দলকে গোল খাওয়া থেকে বাঁচাতে গিয়ে বনে গেলেন ভিলেন। প্রতিপক্ষের নেওয়া ক্রসটি ক্লিয়ার করতে গিয়ে ম্যানুয়াল নুয়ারকে ফাঁকি দিয়ে বল জড়িয়ে দিলেন নিজেদেরই জালে। আর ওই আত্মঘাতী গোলেই কপাল পুড়েছে জার্মানির। বিপরীতে উৎসবে মাতোয়ারা ফ্রান্স।
দুই বিশ্বচ্যাম্পিয়নের লড়াইয়ে উত্তাপ ছড়াচ্ছিল আগে থেকেই। ম্যাচটি জমলও বেশ। কিলিয়ান এমবাপের গতির কাছে বেশ কয়েকবার পরীক্ষা দিতে হয়েছে জার্মান রক্ষণকে। বিপরীতে ফরাসি রক্ষণ দেয়াল ভাঙতে পারেনি জোয়াকিম লোর শিষ্যরা। গতপরশু মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় হওয়া ইউরোর ‘এফ’ গ্রæপের হাইভোল্টেজ ম্যাচ ১-০ গোলে জিতেছে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। আর তাতে মুখোমুখি লড়াইয়েও ফ্রান্স এগিয়ে গেলো। এ নিয়ে বড় কোনও টুর্নামেন্টে তারা মুখোমুখি হলো ষষ্ঠবার। তবে গ্রæপ পর্বে এবারই প্রথম। তাতে করে ফ্রান্স তিনবার জিতেছে, আর জার্মানি দুইবার। আর ড্র একটি।
ম্যাচের ২০ মিনিটের সময় এমবাপেকে উদ্দেশ্য করে জার্মানির ডি বক্সের ভেতরেই বল বাড়িয়েছিলেন হার্নান্দেজ। ওই বল ক্লিয়ার করতে যান হামেলস। কিন্তু বল গোলপোস্টের উপর দিয়ে না পাঠিয়ে জড়িয়ে ফেলেন নিজেদের জালে। শেষ পর্যন্ত ওই গোলের ব্যবধানেই জেতে ফ্রান্স।
গোলকিপার ও ডিফেন্ডারদের কাজ হলো গোল ঠেকানো। এ কাজটি করতে গিয়ে গোল হজম করে বসলে কেমন লাগে! জিজ্ঞেস করুন, তুর্কি ডিফেন্ডার মেরিহ দেমিরাল, পোলিশ গোলকিপার ভয়চেখ সেজনি ও জার্মান ডিফেন্ডার ম্যাট হামেলসকে। এবারের ইউরোয় দলের গোল হজম ঠেকাতে গিয়ে তারা উল্টো বল পাঠিয়েছেন নিজেদের জালে! অবশ্যই তা অনিচ্ছাকৃত। গোলগুলো হজমের পর তাদের চোখমুখই সব বলে দিচ্ছিল, যাতনাটা কতখানি!
ইউরোর গ্রæপ পর্বে এ পর্যন্ত মাত্র ১২ ম্যাচের নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যেই তিন-তিনটি আত্মঘাতী গোল দেখা গেল। উদ্বোধনী ম্যাচে যার শুরুটা করেছিলেন দেমিরাল। তার সৌজন্যে এবার ইউরোর প্রথম গোলটাই ছিল আত্মঘাতী। তিনিও ইতালিয়ান উইঙ্গার দমিনিকো বেরার্দির ক্রস সামলাতে গিয়ে বল জড়ান নিজেদের জালে। ইউরোর ইতিহাসে এবারই প্রথমবার কোনো টুর্নামেন্টের শুরুটা হলো আত্মঘাতী গোলে। এরপর পোল্যান্ড-সেøাভাকিয়া ম্যাচে বল পোস্টে লেগে মাটিতে পড়ে থাকা গোলকিপার শেজনির পিঠে লেগে ঢুকে যায় জালে। ইউরোর ইতিহাসে আত্মঘাতী গোল করা প্রথম গোলকিপার বনে যান এই পোলিশ গোলরক্ষক।
আর হামেলস বড় টুর্নামেন্টে গত ৪৩ বছরের মধ্যে প্রথম জার্মান হিসেবে আত্মঘাতী গোলের ভাগ্য মেনে নিলেন। সর্বশেষ ১৯৭৮ বিশ্বকাপে এই দুর্ভাগ্য দেখেছিলেন জার্মানির সাবেক ডিফেন্ডার ও কোচ বার্টি ফোটস। তবে ইউরোর এবারের সংস্করণে আত্মঘাতী গোলের হার একটু বেশিই দেখা যাচ্ছে, পরিস্থিতি এমন যে আর একটি আত্মঘাতী গোল হলেই টুর্নামেন্টটির ইতিহাসে এক সংস্করণে সবচেয়ে বেশি আত্মঘাতী গোলের রেকর্ড হবে।
ইউরোর ইতিহাসে এক টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ তিনটি আত্মঘাতী গোল দেখা গেছে ২০১৬ সংস্করণে। এবারের টুর্নামেন্ট সেই রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছে পরশু রাতে হামেলসের সৌজন্যে। এবার যে হারে আত্মঘাতী গোল শুরু হয়েছে তাতে গ্রæপ পর্বেই অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গেলে অবাক হওয়ার কিছু নেই!
ইউরোর চলমান আসরটি ছিল জার্মানির জন্য ২০১৮ বিশ্বকাপের স্মৃতি ভুলে যাওয়ার মঞ্চ। উল্টো অভাবনীয় এক গোল দিয়েই শুরু হলো জার্মানির যাত্রা। খেলায় হার-জিত থাকবেই। তাই বলে এভাবে! টনি ক্রুস তাই বলছেন, মিউনিখের ম্যাচটা জার্মানদের জন্য ‘কপাল খারাপ’ ছাড়া আর কিছুই নয়। জার্মান মিডফিল্ডারকে বেশি পোড়াচ্ছে দুর্ভাগ্যজনক গোলে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হওয়াটা, ‘আমরা সুযোগ পেয়েছি গোল করার। ফ্রান্সের চেয়ে কম নয় মোটেও। কিন্তু ম্যাচের ফল একটা দুর্ভাগ্যজনক গোলে নির্ধারিত হলো!’ হামেলসের আত্মঘাতী গোলটা কীভাবে হলো, এটাই ভেবে পাচ্ছেন না ক্রুস, ‘এমন একটা ব্যাপার ঘটল। এটা তো আমরা প্রতি ১০ বারে ৯ বারই ঠেকিয়ে দেব।’
আর ওই আত্মঘাতী গোলই জয়ের উৎসবে মতোয়ারা ফ্রান্স, বিপরীতে হতাশায় মুখ লুকিয়ে মাঠ ছাড়ার দৃশ্য জার্মানদের! নিজেদের পরের ম্যাচে আগামী শনিবার হাঙ্গেরির বিপক্ষে খেলবে ফ্রান্স। একই দিনে পর্তুগালের মুখোমুখি হবে জার্মানি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।