বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সদর উপজেলার উত্তর শুল্লুকিয়া গ্রামে পুত্রবধূ মারজাহান বেগমকে (২৭) হত্যার অভিযোগে সৎ ছেলে মো. সোহাগ , রাজু ও স্বামী আবদুল খালেকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন রহিমা বেগম (৬৮) নামের এক নারী। বুধবার নোয়াখালীর সিনিয়র বিচারক মোহাম্মদ নাহিয়ানের ১ নম্বর আমলী আদালতে ৪জনকে আসামি করে এই মামলা দায়ের করেন রহিমা বেগম।
মামলার এজাহারে ওই নারী উল্লেখ করেন, প্রথম স্বামীর সাথে পারিবারিক কলহের জেরে তার বিবাহ বিচ্ছেদের পর উত্তর শুল্লুকিয়া গ্রামের আবদুল খালেকের সাথে দ্বিতীয় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। তার এই সংসারে কোন সন্তান জন্ম গ্রহণ করেনি। স্বামী, দুই সৎ ছেলে মো. সোহাগ ও রাজু এবং সোহাগের স্ত্রী মারজাহান বেগম ও তাঁর তিন শিশু সন্তান নিয়েই তাদের সংসার। গত কয়েক মাস যাবৎ তার সৎ ছেলে মো. সোহাগ প্রতিবেশী এক মেয়ের সাথে পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হওয়ায় তার স্ত্রী মারজাহানের সাথে পারিবারিক কলহ চলে আসছে। ওই কলহের জের ধরে সোহাগ তার স্ত্রী মারজাহানকে প্রায় শারীরিক নির্যাতনসহ মেরে ফেলার হুমকি দিতো।
গত ৩ এপ্রিল দুপুরে রহিমা বেগম পুত্রবধূ মারজাহানকে বাড়িতে রেখে বাবা বাড়িতে বেড়াতে যান। ওইদিন রাত ২টায় মারজাহান বিষপানে মারা গেছেন বলে স্বামী আবদুল খালেক মোবাইল ফোনে রহিমা বেগমকে জানান। পরদিন সকালে রহিমা বেগম বাড়িতে এসে জানতে পারেন ছেলে সোহাগের পরকীয়া প্রেমের প্রতিবাদ করায় সোহাগ তার ভাই রাজু, ভগ্নীপতি জামাল উদ্দিন ও সোহাগের বাবা আবদুল খালেক পুত্রবধূ মারজাহান বেগমকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে তিনি কান্নাকাটি করতে করতে পুত্রবধূর লাশ দেখতে গিয়ে দেখেন মৃত মারজাহানের গলা, হাত ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত ফুলা জখম রয়েছে। এসময় তিনি তার পুত্রবধূকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রতিবাদ করলে স্বামী আবদুল খালেক ও ছেলেরা তার মুখ চেপে ধরে ঘরে নিয়ে বলে এসব বললে পুলিশ এসে তোকেসহ আমাদের সবাইকে থানায় নিয়ে যাবে। এসব বলা যাবে না, বললে তোকেও হত্যা করে মেরে ফেলবো।
পরে স্থানীয়ভাবে মৃত মারজাহানের বাবা-মাকে ম্যানেজ করে তার শিশু সন্তানদের কিছু জমি ও নগদ টাকা দেওয়া হবে মর্মে থানায় খবর না দিয়েই ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিহতের লাশ দাফন করা হয়। ঘটনার বিষয়ে মারজাহানকে ধৌত করানো মহিলারা প্রকাশ করলে তারেও ম্যানেজ করার চেষ্টা করে সোহাগের পরিবার।
এদিকে সৎ মা রহিমা বেগমের মুখ বন্ধ রাখতে দীর্ঘ দুই মাস ৮দিন ঘরের মধ্যে বন্ধী করে রাখা হয়। পরে সুকৌশলে রহিমা বেগম স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বুধবার নোয়াখালীর সিনিয়র বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ১ নম্বর আমলী আদালতে পুত্রবধূ মারজাহান বেগমকে হত্যার অভিযোগে সৎ ছেলে মো. সোহাগ, রাজু, স্বামী আবদুল খালেক ও সৎ মেয়ের স্বামী জামাল উদ্দিনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
রহিমা বেগম জানান, তিনি স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে আসার পর থেকে পুত্রবধূ মারজাহান হত্যার বিষয়ে মুখ খুললে তাকে শারীরিক নির্যাতনসহ প্রাণে হত্যা করে লাশ গুম করা হবে বলে বিভিন্নভাবে হুমকি-দুমকি দিয়ে যাচ্ছেন স্বামী আবদুল খালেক ও ছেলে সোহাগ। তিনি প্রশাসনের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।