পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
শরণার্থী ও অভিবাসী বিষয়ক নিউইয়র্ক ঘোষণা অনুমোদন
ইনকিলাব ডেস্ক : সিরিয়ার আলেপ্পোয় ত্রাণবহরে বিমান হামলায় অন্তত একজন ত্রাণকর্মীসহ প্রায় ২০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ত্রাণকর্মীদের নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় দেশটিতে সবধরনের ত্রাণ কার্যক্রম স্থগিত করেছে জাতিসংঘ। ত্রাণবহরে সিরিয়া কিংবা রাশিয়ার বিমান হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে দ্য সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস। জাতিসংঘের এক মুখপাত্র বলেন, “যথাযথ অনুমোদন নিয়েই ত্রাণ বহরটি আলেপ্পোয় প্রবেশ করেছিল। যুদ্ধরত সবপক্ষ এমনকি রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে আগে থেকে জানানো হয়েছিল।” উরম আল কুবরা শহরের কাছে চালানো মঙ্গলবারের ওই বিমান হামলায় জাতিসংঘের ত্রাণ বহরে থাকা ৩১টি লরির মধ্যে ১৮টি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। লরিগুলোতে গম, শীতের কাপড় এবং ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম ছিল। হামলায় নিহতদের মধ্যে সিরিয়ান আরব রেড ক্রিসেন্টের স্থানীয় একজন শীর্ষ কর্মকর্তা রয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া, রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবক ও লরি চালকরাও রয়েছেন। এ হামলাকে ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের ঘোরতর লঙ্ঘন’ বলে বর্ণনা করেছেন ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রসের (আইসিআরসি) প্রেসিডেন্ট পিটার মাউরের।
আইসিআরসির মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা শাখার পরিচালক রবার্ট মারদিনি রয়টার্সকে বলেন, “এটি খুবই উদ্বেগজনক। আমরা নতুন করে আবার সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়তে দেখছি। বহু এলাকায় যুদ্ধের তীব্রতাও বেড়েছে।” “আমরা চারটি শহরে ত্রাণ বিতরণের পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে পুনর্মূল্যায়নের জন্য ওই পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছে।” সিরিয়ার সামরিক বাহিনী যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যস্থতায় দেশটিতে শুরু হওয়া সাতদিনব্যাপী যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার ঘোষণা দেয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এ হামলা চালানো হয়। এ হামলার পর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে বলা হয়, “সিরীয় সরকারের মিত্র রাশিয়ার সঙ্গে মিলে রাজনৈতিকভাবে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ অবসানে ভবিষ্যৎ আলোচনার সম্ভাবনার বিষয়টি পুনর্ম্যূলায়ন করবে।”
এদিকে, সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য রাষ্ট্রের ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে শরণার্থী ও অভিবাসী বিষয়ক নিউইয়র্ক ঘোষণা (দ্য নিউইয়র্ক ডিক্লারেশন অন রিফ্যুজিস অ্যান্ড মাইগ্র্যান্ট) অনুমোদিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বলছে, এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে ইউরোপসহ বিশ্বব্যাপী প্রবাহিত শরণার্থী-স্রোতকে মানবিক পথে মোকাবেলার পথ তৈরী হবে। তবে ওই নিউইয়র্ক ঘোষণাকে অস্পষ্ট ও বিমূর্ত বলছেন কোনও কোনও সমাজবিশ্লেষক। সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে এই সনদ গৃহীত হয়। এতে বলা হয়, শোষণ, বর্ণবাদ, জাতিবিদ্বেষ ও বৈষম্য মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। ইউরোপসহ বিভিন্ন স্থানে ধেয়ে আসা শরণার্থী স্রোত নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর ঘোষণাটি অনুমোদিত হয়। ২০১৮ সাল নাগাদ শরণার্থী ও অভিবাসীদের নিয়ে একটি সম্ভাব্য বৈশ্বিক চুক্তির প্রাথমিক উদ্যোগ হিসেবেই দেখা হচ্ছে এই ঘোষণাকে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দাবি, এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে যুদ্ধ ও দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে বাঁচতে চাওয়া হাজার হাজার মানুষের নিয়মিত ও নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে। শরণার্থীরা বিভিন্ন দেশে আশ্রয় পেতে যে যে পথে ভ্রমণ করছেন সেই জায়গাগুলোতে মানুষের প্রাণ বাঁচানো, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের বিষয়টিও গুরুত্ব পেয়েছে ওই ঘোষণায়। এই ক্ষেত্রে ইতিবাচক অবদানগুলো চিহ্নিত করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে ওই ঘোষণায়। জাতিসংঘের ওয়েবসাইট, শিকাগো ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।