Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাগরে ফের লঘুচাপ হতে পারে ঘনীভূত

মৌসুমী বায়ু বিস্তার-সক্রিয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত নেত্রকোণায় ৯৮ মিলিমিটার

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৩ জুন, ২০২১, ১২:০২ এএম

ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’র ধকল ও প্রভাব কাটেনি এখনো। এ অবস্থায় উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন উপকূল এলাকায় গতকাল আবারও একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। তবে এটি আরও ঘনীভূত ও শক্তি সঞ্চয় করে পরবর্তী সময়ে যদি গভীর নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ে রূপ লাভ করে তখন নামকরণ হবে ‘গুলাব’ বা ‘গোলাপ ফুল’।

‘ইয়াস’র পরের সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের নামটি পাকিস্তানের দেয়া। এসকাপ’র এই অঞ্চলের প্যানেলভূক্ত দেশসমূহ ঘূর্ণিঝড়ের নাম আগেই নির্ধারণ করে রাখে। তবে এই লঘুচাপটি শেষ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে কিনা আবহাওয়াবিদরা সুনির্দিষ্ট আভাস দেননি এখনও। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ ও আন্তর্জাতিক আবহাওয়া স্যাটেলাইট সংস্থাগুলোর পূর্বাভাসে একথা জানা গেছে।

মৌসুমী বায়ুর বিস্তার : গতকাল সন্ধ্যায় সর্বশেষ পূর্বাভাসে আবহাওয়া বিভাগ জানায়, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু (বর্ষা) সারাদেশে বিস্তার লাভ করেছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় বিরাজ করছে। বর্ষারোহী মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরের প্রচুর মেঘমালা এবং জলীয়বাষ্প এখন বাংলাদেশমুখী। গতকাল ঢাকায় বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার হার ছিল সকালে ৯৮ শতাংশ এবং সন্ধ্যায় ৯৬ শতাংশ। জ্যৈষ্ঠ তথা গ্রীষ্ম ঋতু শেষের দিকে। পঞ্জিকার হিসাবে ‘বর্ষাঋতু’ (আষাঢ়-শ্রাবণ) আসার আগেই মৌসুমী বায়ুর হাত ধরে দেশজুড়ে বাস্তবেই বর্ষার আবহ শুরু হয়ে গেছে। প্রধান নদ-নদীসমূহের উজানভাগে উত্তর-পূর্ব ভারতেও মৌসুমী বায়ু বিস্তারের সাথে সাথে সক্রিয় এবং মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হচ্ছে।

আবহাওয়া বিভাগ জানায়, গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সারাদেশে হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণ, কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিবৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় নেত্রকোণায় ৯৮ মিলিমিটার। এছাড়া ঢাকায় ৪৮, টাঙ্গাইলে ৫৭, কিশোরগঞ্জে ৯২, কুমিল্লায় ২৩, টেকনাফে ৬২, সিলেটে ১৮, বগুড়ায় ২৩, তাড়াশে ৫৩, তেঁতুলিয়ায় ২৪, রাজারহাটে ২৮, সাতক্ষীরায় ২১, খেপুপাড়ায় ২৮, ভোলায় ২৬ মিলিমিটারসহ দেশের বেশিরভাগ জেলায় বর্ষণ হয়েছে।

আজ শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান খান জানান, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ এবং বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল নিকলিতে ৩৪.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় শেষের দিকে বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি বৃদ্ধি পেতে পারে। এরপরের ৫ দিনে আবহাওয়ায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।

নদ-নদী পরিস্থিতি : পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহের প্রবাহের পরিস্থিতি ও পূর্বাভাসে গতকাল জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং যমুনা নদের পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা নদীর পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং পদ্মা নদীর পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। তা আগামী ২৪ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আপার মেঘনা অববাহিকায় প্রধান নদ-নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে। তা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

প্রধান নদ-নদীসমূহের ১০১টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ৫৭টিতে পানি বৃদ্ধি ও ৩৭টিতে হ্রাস পায়। ৬টি স্থানে পানির সমতল অপরিবর্তিত থাকে। আগের দিন বৃহস্পতিবার ৬২ পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি, ৩৭টিতে হ্রাস ও একটি স্থানে অপরিবর্তিত ছিল। বুধবার ৫৬টিতে পানি বৃদ্ধি, ৪০টিতে হ্রাস ও ৪টিতে ছিল অপরিবর্তিত।

মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের প্রধান নদ-নদী এলাকায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এরমধ্যে দুর্গাপুরে ৭৯ মিলিমিটার, নওগাঁয় ৭০, নারায়ণহাটে ৬০ মিলিমিটারসহ বিভিন্ন স্থানে ভারী বর্ষণ রেকর্ড করে পাউবো। অন্যদিকে প্রধান নদ-নদীসমূহের উজানে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন স্থানে ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। এরমধ্যে ২৪ ঘণ্টায় শিলচরে ৬৫, ডিব্রুগড়ে ৫৪, আইজলে ৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

নদী বন্দরে সতর্কতা : দেশের অভ্যন্তরীণ নদী বন্দরসমূহের জন্য পূর্বাভাসে জানা গেছে, রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, ঢাকা, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলের উপর দিয়ে দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদ-নদী বন্দরসমূহকে ১ নম্বর নৌ হুশিয়ারী সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।



 

Show all comments
  • Nabiul Islam ১২ জুন, ২০২১, ১০:০৪ এএম says : 0
    May Allah Save us
    Total Reply(0) Reply
  • Anwar Hossain ১২ জুন, ২০২১, ১০:১৫ এএম says : 0
    আল্লাহ দেশ এবং বিশ্বের সবাইকে হেফাজত করুক আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঘূর্ণিঝড়

২৬ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ