বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে কুয়াকাটা সৈকত। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও দফায় দফায় পূর্ণিমা,অমাবস্যার প্রভাবে সৈকতটি শ্রীহীন হয়ে পড়েছে। এছাড়া ক্রমশই বিলীন হয়ে যাচ্ছে দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। ইতোমধ্যে সমুদ্রগর্ভে ভেসে গেছে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের শত শত গাছ। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে কুয়াকাটা পাবলিক টয়লেট, জাতীয় উদ্যান, পর্যটন পার্কসহ মসজিদ-মন্দির।
স্থানীয়রা জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সাগরের রুদ্র-রোষে হারিয়ে যাচ্ছে কুয়াকাটার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। দফায় দফায় বিধ্বস্ত হয়েছে সৈকত লাগোয়া জাতীয় উদ্যান। ভেসে গেছে অভ্যস্তরীণ ছোট ছোট স্থাপনা। জাতীয় উদ্যানের লেকের উপর সেতু, ঘাটলা, গোলঘর, শোভাবর্ধনের বাগান, বেঞ্চি, স্থায়ী ছাতা সবই সাগরে গিলে খেয়েছে। এরই মধ্যে ফয়েজ মিয়ার ‘ফার্মস এ্যান্ড ফার্মস লিঃ’-এর সারি সারি নারিকেল বাগান সাগর বক্ষে হারিয়ে গেছে। সাগরে আগেই গিলে ফেলেছে সরকারি ডাকবাংলো, এলজিইডির বায়োগ্যাস প্লান্ট। তবে ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় কুয়াকাটার স্থানীয় বাসিন্দাসহ বিনিয়োগকারীরা চরম উৎকন্ঠায় মধ্যে রয়েছে। তবে পরিবেশবিদেরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও সমুদ্রের তলদেশে পলি জমায় পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে সাগরের বিশাল বিশাল ঢেউ তীরে আছড়ে পড়ছে। আর বিপর্যস্থ হচ্ছে প্রকৃতি ও পরিবেশ।
সৈকতের বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে দেখা যায়, সম্প্রতি ঘূর্নিঝড় ইয়াস ও পূর্নিমার প্রভাবে সাগরের ঢেউয়ের ঝাপটায় সৈকতের গাছের গোরা থেকে বালু সরে শিকড় বেরিয়ে এসেছে। কোনো রকম দাঁড়িয়ে রয়েছে কিছু গাছ। সৈকতে বিশাল এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য গাছের মূল। জোয়ারের সময় ঢেউয়ের আঘাতে বালুতে লুটিয়ে পড়ছে বড় বড় গাছ। ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডরের পর থেকেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সামুদ্রিক ঢেউয়ের ঝাপটায় ভাঙনের মুখে পড়ে বনাঞ্চল। অমাবস্যা, পূর্নিমা কিংবা প্রাকৃতিক ঝড় ও জলোচ্ছাসে প্রতিবছর বনভূমি ধ্বংস হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
কুয়াকাটার স্থায়ীবাসিন্দা ইসাহাক শেখ বলেন, সাগরের ঢেউয়ের ঝাপটায় সৈকতের বালু ক্ষয় হয়ে বেশ কিছু গাছ পালা নষ্ট হয়ে গেছে। এভাবে প্রতিনিয়ত বালু ক্ষয় হলে সৈকতের সৌন্দর্য্য হারাবে। জরুরী ভিত্তিতে সৈকতের বালু ক্ষয় রোধে স্থায়ী পরিকল্পনা নেওয়া উচিৎ বলে তিনি জানিয়েছেন।
ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা টোয়াক’র সভাপতি ইমতিয়াজ রহমান তুষার বলেন, সৈকতে এক সময় সারি সারি নারিকেল বাগন ছিল। গাড়ি পার্কিং, পিকনিক স্পট,পর্যটকদের বিনোদন কেন্দ্র ছিল এ বাগানটি। কিন্তু কালের বিবর্তনে বাগানটি আজ শুধুই স্মৃতি।
মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো.আবদুল কালাম আজাদ জানান, কুয়াকাটা, খাজুরা, গঙ্গামতি বীটের বেশ ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত তালিকা করে উর্ধ্বতন কর্মকতার কাছে পাঠানো হয়েছে।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের তান্ডব ঠেকানের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড উদ্যোগে সৈকতে বালু ভর্তি জিও টিউব ফালানো হয়। জিও টিউব থাকায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তান্ডবে সৈকত কিছুটা হলেও রক্ষা পেয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কলাপাড়া সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.হালিম ছালেহী বলেন, সৈকতে পূর্ব সতর্কতা মূলক বালু ভর্তি জিও টিউব ফেলানো রয়েছে। সৈকত রক্ষা প্রকল্পের এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে স্থায়ী প্রটেকশনে জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রকল্প আকারে প্রস্তাবনা দেওয়া হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।