মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইউরেশিয়ার ভূ-রাজনীতি ধীরে ধীরে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) সমর্থিত আফগান-পাকিস্তান পুর্নমূল্যায়িত সম্পর্কের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে চলেছে। এই প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যকার সম্পর্ক ঐতিহাসিক কারণে বরাবরই জটিল ছিল, তবে আফগানিস্তান থেকে ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমেরিকার আসন্ন সৈন্য প্রত্যাহারের পরিপ্রেক্ষিতে কাবুলকে ইসলামাবাদের সাথে একটি শক্তিশালী সম্পর্কের নতুন যুগে প্রবেশ করতে প্রস্তুত দেখা যাচ্ছে।
গত সপ্তাহে পাক ও আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা কোভিড-১৯ এর কারণে এই বছর অনলাইনে অনুষ্ঠিত চতুর্থ ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যোগ দিয়েছিলেন। তাদের আলোচনা প্রসূত যৌথ বিবৃতিতে গাদারের সিপিইসি টার্মিনাল বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে আফগানিস্তানের আঞ্চলিক সংযোগ বর্ধিত করার উপর জোর দেয়া হয়েছে। চীন-পাকিস্তান ও আফগানিস্তান ঐক্য বিআরআই’র ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পের মাধ্যমে আফগানিস্তানের স্থল-সংযোগের আকাক্সক্ষার বহি:প্রকাশ, যা পাকিস্তানের বিষয়ে আফগানিস্তানের ইতিবাচক বাস্তববাদী নীতি পুর্ননির্ধারণ করেছে। অন্য কথায়, বিআরআই কেবল অর্থনীতিগুলিকেই সংযুক্ত করছে না, এই বৈশ্বিক নীতির মহা-প্রকল্পগুলির থেকে পারস্পরিকভাবে উপকার পাওয়ার জন্য এতে অংশগ্রহণকারী দেশগুলিকে একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত যে কোনও সম্পর্ককে মেরামত করতে আগ্রহী করে তুলেছে।
পাশাপাশি, সিপিইসি’র উপর আফগানিস্তানের বর্ধিত নির্ভরতা মূল এশিয়ার আরও গভীরে উত্তরের দিকে তাদের এবং উজবেকিস্তানের (পাকাফুজ) মধ্যকার ত্রিপক্ষীয় রেলপথের মধ্য দিয়ে এই করিডোরকে আরও সম্প্রসারণ করার প্রস্তাবের কার্যকারিতা প্রমাণ করে। আরেকটি প্রাসঙ্গিক পর্যবেক্ষণ হ’ল, ইরানের ভারত নিয়ন্ত্রিত চাবাহার বন্দর, যা নয়াদিল্লি প্রাথমিকভাবে তার সমুদ্র করিডোর হিসাবে কাজে লাহানোর পরিকল্পনা করেছিল, তাতে আফগানিস্তান আর সম্ভবত আগ্রহী নয়। বিষয়টি ভারতের আঞ্চলিক সম্পর্কের পরিকল্পনাগুলিতে একটি বিপত্তি তৈরি করেছে।
ইরান বন্দরটি নর্থ-সাউথ ট্র্যান্সপোর্ট করিডোরের (এনএসটিসি) একটি মূল সংযোগস্থল হিসাবে কাজ করবে বলে ধারণা করা হয়েছিল, যা রাশিয়ার উত্তরের প্রান্তগুলিতে সম্প্রসারিত হওয়ার কথা ছিল। তবে, ভারত স্বেচ্ছায় ইরানের ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত মেনে চলার পর থেকে এই প্রকল্পটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্থবির হয়ে পড়েছে। চূড়ান্ত পদক্ষেপই যাই হোক না কেন, অবশেষে এটি স্পষ্ট যে, বিআরআই-সমর্থিত আফগান-পাকিস্তান সম্পর্ক মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়াতে ভারতের প্রভাব হ্রাস করে আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে পুনর্গঠন করছে। ভারতকে এমনকি মেনে নিতে হতে পারে যে, তারা সম্ভবত মতো ইউরেশিয়ান শক্তি হয়ে উঠতে পারছে না।
এরফলে, ভারতকে এই অঞ্চলের আধিপত্যের প্রতিযোগিতা থেকে সম্ভাব্যভাবে বিদায় নিতে হবে। তারপর এঅঞ্চলের ৫ টি দেশের জন্য একমাত্র ভারসাম্য রক্ষাকারী অতিরিক্ত-আঞ্চলিক অংশীদার হিসেবে থাকে তুরস্ক। দেশটি তার ‘মধ্যবর্তী করিডোর’ এর মাধ্যমে এই অঞ্চলে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করছে। এই মুহূর্তে রাশিয়া-চীন দ্বৈত নীতিটি যৌথভাবে আঙ্কারার মধ্য এশীয়া বিষয়ক সিদ্ধান্তগুলি পরিচালনা করছে। বিআরআই-সমর্থিত আফগান-পাকিস্তান নীতির শেষ পরিণতিটি হ’ল, ভারত চাবাহারের মাধ্যমে বিস্তৃত আঞ্চলিক সংযোগের সুযোগটি হারানোর কারণে তুরস্ক শীঘ্রই মধ্য এশিয়ায় ভারতের চেয়ে আরও গুরুতর অতিরিক্ত আঞ্চলিক খেলোয়াড় হয়ে উঠতে পারে।
আফগানিস্তান এই গতিশীলতায় উৎসাহিত হয়ে পাকিস্তানের সাথে অর্থবহ সম্পর্কের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার ফলে, কাশ্মীরের বিষয়ে তাদের কিছু কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। বিস্তৃত অঞ্চলের ভূ-রাজনীতিগুলি তাই নতুন মাত্রা নিচ্ছে। যাই হোক না কেন, প্রবণতাগুলি ইতিবাচক, যা কার্যকর থাকলে ইউরেশীয় স্থিতিশীলতায় অবদান রাখবে। সূত্র : ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।