বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে কথিত পীরের দরবার শরীফে রাশেদ (২৮) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার দুপুরে মোবাইল চুরির অভিযোগে দৌলতপুর উপজেলার কল্যানপুরে কথিত পীর তাছের ফকিরের দরবার শরীফের ভেতরে ওই যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত যুবক দৌলতপুর উপজেলার রিফাইতপুর ইউনিয়নের হরিনগাছী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। হত্যার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর কল্যানপুর দরবার শরীফের কথিত পীর তাছের ফকির গ্রেফতার এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছে বলে জানাগেছে।
এদিকে হত্যার ঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে রোববার গভীর রাতে কল্যালপুর দরবার শরীফের কথিত পীর তাছের ফকির সহ ১০জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৫-২০জনকে আসামী করে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন যার নং-১৭। মামলা দায়েরের পর দৌলতপুর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে হত্যার সাথে জড়িত মামলার এজাহার নামীয় ৬জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে। এরা হলেন, পার্শ্ববতী ভেড়ামারা উপজেলার কাচারিপাড়ার মোসাব্বির হোসেনের ছেলে সাইদুর রহমান মিলন (৩৫), দৌলতপুর উপজেলার কল্যানপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে সামসুদ্দিন ওরফে শিমুল (২৮), সেনাইকুন্ডি গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে আব্দুস সাদি শিমুল (৩৫), ইনছাফনগর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে সুমন হোসেন (৩৫), হোসেনাবাদ গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে ইমরান আলী (২০) ও কল্যানপুর গ্রামের আফিরুল ইসলামের ছেলে শফিউল রহমান লিমন (১৯)। আসামীরা সকলে কথিত পীর তাছের ফকিরের ভক্ত এবং সবসময় তারা দরবার শরীফের ভেতরে অবস্থান করতো।
নিহত যুবকের পিতা সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক জানান, তার ছেলে রাশেদ ৫-৬ মাস ধরে কল্যানপুর দরবার শরীফে থাকতো এবং সে ওই দরবার শরীফের পীর তাছের ফকিরের ভক্ত ছিল। রোবববার সকালে দরবার শরীফের লোকজন তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে দরবার শরীফের ভেতরে ফেলে রাখে। পরে রাশেদের অবস্থা আশংকাজনক হলে দুপুরে দরবার শরীফের লোকজন তাকে উদ্ধার করে মোটরসাইকেল যোগে কুষ্টিয়া হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভেড়ামারা বারমাইলে সে মারা যায়। এসময় পার্শ¦বতী ভেড়ামারা ষোলদাগ উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিহত রাশেদকে রেখে মোটরসাইকেলে বহনকারী কল্যানপুর দরবার শরীফের লোকজন পালিয়ে যায়।
রিফাইতপুর ইউপি চেয়ারম্যান জামিরুল ইসলাম বাবু জানান, মোবাইলফোন চুরির অভিযোগে কল্যানপুর দরবার শরীফের লোকজন তার ইউনিয়নের সাবেক মেম্বর আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রাশেদকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। পরে পুলিশ নিহত যুবকের লাশ ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে থেকে উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে।
দৌলতপুর থানার ওসি নাসির উদ্দিন জানান, মোবাইলফোন চুরির অভিযোগে কল্যানপুর দরবার শরীফের লোকজন রাশেদ নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলার এজাহার নামীয় ৬জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাঁকী আসামীদেরও গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
অপরদিকে নিহত যুবকের ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে নিজ পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হলে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।
উল্লেখ্য, কল্যানপুর দরবার শরীফের কথিত পীর তাছের ফকির ও তার পোষা ভক্ত বা ক্যাডারদের বিরুদ্ধে দরবার শরীফ সংলগ্ন সরকারী হিসনা নদী ও স্থানীয় লোকজনের জমি জোরপূর্বক দখল করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। দরবার শরীফের সশস্ত্র ভক্ত ক্যাডারদের ভয়ে স্থানীয় লোকজন ভয়ে মুখ খুলতেও সাহস পাইনা। কেউ মুখ খুললে বা জমি দখলের প্রতিবাদ করলে তার ওপর চালানো হয় অমানষিক নির্যাতন ও অত্যাচার। করা হয় মিথ্যা মামলা।
হিসনা নদী দখল করে কল্যানপুর দরবার শরীফের জায়গা সম্প্রসারণের ঘটনায় সম্প্রতি দৌলতপুর উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. এজাজ আহমেদ মামুন, দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার, দৌলতপুর থানার ওসি নাসির উদ্দিন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাগণ গত ২৮ মে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হিসনা নদী দখলমুক্ত করার নির্দেশ দিলেও সে নির্দেশ অমান্য করে দরবার শরীফের ভক্তরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।