পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র চীনকে দেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার সামগ্রীর বিল ১ কোটি ৯৪ লাখ ৬৫ হাজার দুইশ’ টাকা দিচ্ছে না সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরস ডিপোর (সিএমএসডি) পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামান। সিএমএসডি’র পরিচালকের একগুয়েমির কারণে সরবরাহকৃত সুরক্ষা সামগ্রীর বিল না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সরবরাহকারী। বিষয়টিকে দুঃখজনক বললেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সিএমএসডি’র কর্মকর্তারা।
সূত্র মতে, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে করোনা মহামারির প্রাক্কালে চীনকে সুরক্ষাসামগ্রী উপহার দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সুরক্ষা সামগ্রীর বিল এখনও পরিশোধ করা হয়নি। একাধিকবার এ বিষয়ে পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি তাতে কোনোভাবে কর্ণপাত করেনেনি। সর্বশেষ গত ২৩ মে পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামানকে বিল পরিশোধের চিঠি দেয় জসিম সার্জিক্যালের স্বত্বাধিকারী মো. জসিম উদ্দিন। কিন্তু পরিচালক বিষয়টিকে কোনোভাবেই আমলে নিচ্ছেন না। বরং সরবরাহকারীর সঙ্গে খারাপ আচরণ ও প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে বারণ করেছেন।
সূত্র মতে, গত বছর করোনা মহামারি শুরুর প্রাক্কালে চীন ভয়াবহভাবে এতে আক্রান্ত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন সাহায্যের হাত বাড়ান চীন সরকারের প্রতি। ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি চীন সরকারকে ১০ লাখ হ্যান্ড গ্লাভস, ৫ লাখ ক্যাপ, ১ লাখ হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ৫০ হাজার জুতার কভার ও ৮ হাজার গাউন উপহার হিসাবে পাঠান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর যৌথভাবে এই তালিকা তৈরি করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সাহায্যে। অনেকটা আনুষ্ঠানিকভাবেই রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক, তৎকালীন স্বাস্থ্যসচিব আব্দুল মান্নান ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের উপস্থিতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন উপহারসামগ্রী চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের কাছে হস্তান্তর করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জরুরি চাহিদার ভিত্তিতে ও ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালকের নির্দেশনা অনুযায়ী দুই দিনের মধ্যে উপহারসামগ্রী জোগাড় করার দায়িত্ব দেয়া হয় সিএমএসডি’র তৎকালীন পরিচালক মরহুম ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল্লাহকে। তিনি তখন জরুরি ভিত্তিতে মৌখিক নির্দেশনায় ছয়টি প্রতিষ্ঠান থেকে গত বছরের ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে উপহারসামগ্রী সংগ্রহ করেন। ছয়টি প্রতিষ্ঠানের দেয়া সুরক্ষা পণ্য সামগ্রীর বিলের মোট মূল্য ১ কোটি ৯৪ লাখ ৬৫ হাজার দুইশ’ টাকা। সরকারের জরুরি চাহিদার ভিত্তিতে দ্রুত সরবরাহ করার পরও ১ বছর ৩ মাস পার হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের মালামাল সরবরাহ করেও প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও বিপাকে। ১ বছর ৩ মাস বেশি সময় ধরে বিভিন্ন দফতরে ঘুরেও কোনো সমাধান পাচ্ছেন না সরবরাহকারীরা। প্রধানমন্ত্রীর উপহার জেনেও আবু হেনা মোরশেদ জামান একক ক্ষমতা দেখিয়ে বিল আটকে দিয়েছেন।
সিএমএসডি’র তৎকালীন পরিচালক মরহুম ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ গত বছরের ৫ মার্চ উপহার সামগ্রীর বিল পরিশোধের জন্য স্বাস্থ্য সচিব বরাবর অর্থ বরাদ্দ চান। ওই অর্থ বরাদ্দ চাওয়া পত্রের এক বছর ৩ মাস সময় পরেও সরবরাহকারী কোনো প্রতিষ্ঠান এখনও বিল পাননি। বরং প্রধানমন্ত্রীর চীনকে দেয়া উপহার সামগ্রীর বিল পরিশোধ না করা ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে খারাপ আচরণ ও প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে বারণ করেছেন। যা অত্যন্ত দুঃখজনক বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র মতে, করোনার শুরুর দিকে সিএমএসডি পরিচালক ছিলেন ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. শহিদউল্লাহ। কয়েকমাস পর গত বছরের ২ জুন তাকে সরিয়ে দেয়া হয়। তার স্থলে ৩ জুন বসানো হয় বর্তমান পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামানকে। তিনি দায়িত্ব নিয়েই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সদ্য বিদায়ী বিতর্কিত স্বাস্থ্য শিক্ষা সচিব আব্দুল মান্নানের সঙ্গে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন। সিন্ডিকেটটি কেনাকাটায় একক কর্তৃত্ব দেখাতে শুরু করে। পরিচালকের পছন্দের নাম সর্বস্ব ও নতুন নতুন অনভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন সংবেদনশীল মেডিক্যাল সরবরাহের কার্যাদেশ দিয়ে বিল পাইয়ে দিচ্ছেন। একই সঙ্গে একগুয়েমি করে পূর্ববর্তী পরিচালকের দেয়া জরুরি কার্যাদেশগুলোর বিল আটকে দিয়েছেন। শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর চীনকে দেয়া উপহারের বিলই নয়; করোনার শুরুর দিকে যারা দেশের ক্রান্তিকালে সুরক্ষাসামগ্রী প্রদান করে মহামারি মোকাবিলায় বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন তাদের সকলের বিলও আটকে দিয়েছেন। এতে ১৯৬টি প্যাকেজের ১ হাজার ২৮৫ কোটি ২২ লাখ ৪১ হাজার টাকার বিল আটকে যায়। এরমধ্যে গত ১২ এপ্রিল অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরে ৫৭টি প্যাকেজের বিপরীতে ৩৪৩ কোটি টাকা সিএমএসডিকে বরাদ্দ দেয়। কিন্তু সিএমএসডি এসব সরবরাহকারীদের বিল পরিশোধে এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে নেয়া সব উদ্যোগেই তিনি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছেন।
জসিম সার্জিক্যালের স্বত্বাধিকারী মো. জসিম উদ্দিন ইনকিলাবকে বলেন, সিএমএসডি’র তৎকালীন পরিচালক মরহুম ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ তখন জরুরি ভিত্তিতে মৌখিক নির্দেশনায় মালামাল দিতে বলেছেন। আমার প্রতিষ্ঠানসহ ৬টি প্রতিষ্ঠান মালামাল সরবরাহ করি। কিন্তু এক বছর ৩ মাস সময় অতিবাহিত হলেও আজও বিল পাইনি। আমাদের কি অপরাধ জানতে চান জসিম উদ্দিন।
এ বিষয়ে সিএমএসডি’র পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ইনকিলাবকে বলেন, চীনকে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বিল সরবরাহকারীরা এখনো পায়নি, বিষয়টি দুঃখজনক। তিনি বলেন, দ্রুত এ বিষয়টি সমাধানের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।