Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, ০৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

মাদারীপুরে জোড়া খুনের ঘটনা আড়াল করতে ভ্যান চালককে হত্যা

মাদারীপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ জুন, ২০২১, ১০:০৩ পিএম

মাদারীপুরের রাজৈরে ২০২০ সালে জানুয়ারী মাসে জোড়া খুনের ঘটনা আড়াল করতে এবং প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ভ্যান চালক আবদুস সালাম শেখকে (৫৫) হত্যা করেছে সালামের পক্ষের লোকজন। মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল ট্রিপল মার্ডারের লোমহর্ষক ও চাঞ্চল্যকর এ তথ্য দিয়েছেন। রাজৈর উপজেলার উত্তর হোসেনপুর গ্রামের সালাম শেখকে (৫৫) কুপিয়ে হত্যা মামলায় তিনজনকে গ্রেফতারের পর হত্যাকান্ডের রহস্য বেড়িয়ে আসে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো রাজৈর উপজেলার উত্তর হোসেনপুর এলাকার ছলেমান খালাসীর ছেলে সরোয়ার খালাসী (৬০), মোস্তফা মুন্সীর ছেলে সেরজান মুন্সী (৪৫) ও এলাজউদ্দিনের ছেলে রিপন মুন্সী (৪৭)। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সেরজন মুন্সী ১৬৪ ধারায় বিজ্ঞ আদালতে সরাসরি হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান পুলিশ সুপার। সেরজনের স্বীকারোক্তি মোতাবেক রিপনকে গ্রেফতার করা হয় । এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে । এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই কাওছার তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দ্রুত হত্যাকারীদের সনাক্ত করে রহস্য উদঘাটন করতে সমর্থ হয় ।

পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল আরো বলেন, ‘২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি প্রকাশ্যে দিবালোকে জুলফিগার খালাসী ও বাবুল মুন্সী নামে দুইজনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় জুলফিগার খালাসীর ভাই শহিদ খালাসী বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে ৮৬ জনের সম্পৃক্ততা পেয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। সম্প্রতি আলোচিত ওই মামলার বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী আসামী জামিনে বেরিয়ে আসে এবং আপোষের চেষ্টা চালায় । উক্ত মামলার আসামীরা জোড়া খুনের বাদী পক্ষের সাথে আপোষ করতে না পেরে বাদী পক্ষকে ঘায়েল করার জন্য ঘটনার ৭দিন পূর্বে নিজ দলীয় ভ্যানচালক সালাম শেখকে হত্যার পরিকল্পনা আটে । ঘটনার দিন ২৩ মে রাত ৯টার দিকে সেরজন ও রিপন গাঁজা খেয়ে সালামকে নির্জন স্থানে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পুলিশ সুপার আরও জানান, গত ২৩ মে (রোববার) রাত ৯টার দিকে ভ্যানচালক সালাম শেখকে (৫৫) উপজেলার উত্তর হোসেনপুর চান্দেরবাজার এলাকায় একা পেয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। গুরুতর অবস্থায় সালামকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পরদিন ৪১ জনকে আসামী করে নিহতের চাচাতো ভাই পূর্বের জোড়া খুনের আসামি হেমায়েত শেখ বাদী হয়ে রাজৈর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে । প্রসঙ্গত, হোসেনপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা আয়নাল শেখের সাথে একই এলাকার ইউপি সদস্য আতিয়ার মাদবরের সাথে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।

উল্লেখ্য ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি নিহত জুলফিগার খালাসী ও বাবুল মুন্সী আতিয়ার মাদবরের সমর্থক এবং ২০২১ সালের ২৩ মে নিহত ভ্যানচালক সালাম আওয়ামী লীগ নেতা আয়নালের চাচাতো ভাই। এলাকাবাসী জানায় এই হত্যাকান্ডকে ঘিরে বিশেষ সুবিধাবাদীরা নিজেদের আড়ার করতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলসহ নানান পন্থা অবলম্বন করে ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাদারীপুর

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ