পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’র প্রভাবে উপকূলভাগে ঝড়ো হাওয়াসহ পানির মাঝারী বর্ষণ শুরু হয়েছে। পানির তোড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। এতে উপকূলে থাকা মানুষদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে আতঙ্ক। বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যে প্রতিবেদন :
বরিশাল : ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’র প্রভাবে হালকা থেকে মাঝরী বর্ষণ শুরু হয়েছে। সোমবার রাত ৯টার দিকে দক্ষিণাঞ্চলে স্বস্তির বৃষ্টি শুরু হয়ে ঘন্টা খানেকের বৃষ্টিতে জনজীবনে স্বস্তি নেমে আসে। রাতভর থেমে থেমে হালকা বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ১১ মিলিমিটারের পরে দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত আরো ৩.২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বরিশালে।
কক্সবাজার : কক্সবাজার উপকূলে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আঘাত হানার তেমন কোন আশঙ্কা না থাকলেও পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে সাইক্লোন শেল্টার ও স্বেচ্ছাসেবক দল। এদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-এর প্রভাবে কক্সবাজার উপকূলে সমুদ্র উত্তাল রয়েছে। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে উচ্চতায় কয়েক ফুট বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলে আছড়ে পড়ছে। ইতোমধ্যে কক্সবাজার উপকূলের ১০ লাখ মানুষকে সরিয়ে আনার প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। টেকনাফ, কুতুবদিয়াও কক্সবাজার সদরের বিভিন্ন পয়েন্টে বেড়ীবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানিতে তলীয়ে গেছে বসতি ও লবণ মাঠ।
নোয়াখালী : ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ঠ অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে হাতিয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে অন্তত ১১টি গ্রামের লোকালয়ে। প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে গৃহপালিত পশুগুলোকে পাশ^বর্তী আশ্রয়কেন্দ্র ও উঁচু জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে প্লাবিত হয় গ্রামগুলো।
জানা গেছে, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জোয়ার আসে। বেলা বাড়া সাথে সাথে জোয়ার বাড়তে থাকে। মেঘনা নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪-৫ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানি ডুকে পড়ে। এতে ৩-৪ ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে চরঈশ^র ইউনিয়নে ১ ও ২ নং ওয়ার্ড। এছাড়াও অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের মদিনা গ্রাম, বান্দাখালী গ্রাম, মুন্সি গ্রাম, মোল্লা গ্রাম, আদর্শগ্রাম ও ইউনিয়নের ১,২,৩ ৪ নং ওয়ার্ড।
খুলনা : পূর্ণিমার ভরা জোয়ারের কারণে খুলনার উপকূলীয় এলাকার নদনদীর পানির উচ্চতা কয়েক ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু কিছু স্থানে দূর্বল বেড়িবাঁধ উপচে জোয়ারের পানি প্রবেশের খবর পাওয়া গেছে। সামুদ্রিক ঝড়টি শক্তিশালী হওয়ার পর সোমবার রাত থেকে খুলনার বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশে রয়েছে মেঘের ঘনঘটা।
সময়ের সাথে সাথে ঝড় যতই স্থল ভাগের দিকে এগিয়ে আসছে, খুলনার উপকূলীয় অঞ্চল কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা ও বটিয়াঘাটায় সাধারণ মানুষের মাঝে ততই আতংক বেড়ে চলেছে। এদিকে, কোস্টগার্ড, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানিয়েছে, সোমবার রাত থেকে সুন্দরবনের আশপাশের নদ-নদীসহ শিবসা, কপোতাক্ষ, রূপসা নদীর পানি স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দুই থেকে চার ফুট বেড়েছে। উচ্চতা আরো দু থেকে তিন ফুট বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাউবো মোটামুটি এ অঞ্চলের ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাৎক্ষণিকভাবে তা মেরামতে ৫ হাজার জিও ব্যাগ ও সিনথেটিক ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।
উপকূলীয় এলাকা খুলনার দাকোপ উপজেলায় সকালে শিবসা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রচণ্ড স্রোত রয়েছে নদীতে। আর ৩ ফুট পানি বাড়লে বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যাবে। দাকোপে সুন্দরবনের ভিতরে থাকা বনবিভাগের সব টহল ফাঁড়ি থেকে কর্মীদের পাকা ভবনে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা আবু সালেহ।
খুলনার কয়রা উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে নদীর পানি বেড়েছে। স্থানীয়রা আশংকা করছেন, এভাবে পানি বৃদ্ধি চলতে থাকলে বাঁধ ভেঙ্গে অথবা উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করবে। এ উপজেলায় বেড়িবাঁধের ২৪ টি স্থান ঝুকিঁপূর্ণ। পাউবো’র পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশিদুর রহমান জানিয়েছেন, মঙ্গলবার জোয়ারে প্রায় ৪ ফুট পানি বেড়েছে। উচ্চতা ৭/৮ ফুট ছাড়িয়ে গেলে সেক্ষেত্রে ঝুঁকি দেখা দেবে।
বরগুনা : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে বরগুনার নদ-নদীতে জোয়ারের পানি বিপদসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার বিভিন্ন স্থানে অর্ধ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন এসব এলাকার হাজার হাজার মানুষ। স্বল্প উচ্চতার বেড়িবাঁধের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত ও নাজুক বাঁধের কারণে এসব এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে।
জোয়ারের পানি বৃদ্ধির কারণে বরগুনার বাইনচটকি, বড়ইতলা ও পুরাকাটা ফেরি ঘাটের সংযোগ সড়কসহ গ্যাংওয়ে তলিয়ে গেছে। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফেরি চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
সরেজমিনে বরগুনার রায়েরতবক, সোনাতলা, গোলবুনিয়া, বড় লবন গোলা, বড়ইতলা এবং ডালভাঙা এলাকায় ঘুরে দেখা দেছে, এসব এলাকার নদীর তীরের নদীর লোকালয় সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। ভেসে গেছে এসব এলাকার অসংখ্য ঘের ও পুকুরের মাছ।
বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক মো. মাহতাব হোসেন বলেন, বরগুনার নদ-নদীতে আজ ৩.৩২ মিটার উচ্চতায় জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়েছে। যা বিপদসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার উপরে।
এ বিষয়ে বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কাওসার আলম বলেন, জেলার বিভিন্ন স্থানে ২৯ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। উচু জোয়ারের কারণে এসব বাঁধ দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়াও উচু জোয়ারের কারণে বাঁধের বাইরের এলাকাগুলোও প্লাবিত হয়েছে।
বাউফল (পটুয়াখালী) : ঘূর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে পটুয়াখালীর বাউফলের চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চরমিয়াজন ও চরকচুয়া গ্রামসহ বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল। ফলে পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন কয়েক শত পরিবার। জোয়ারের পানিতে পুকুর ও মাছের ঘের প্লাবিত হওয়ায় কয়েক লক্ষ টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
এর আগে গতকাল সোমবার বিকাল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও চরাঞ্চলে আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তণ লক্ষ্য করা গেছে। ধীরে ধীরে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। কোন কোন এলাকায় গর্জনসহ হালকা বৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়া ও থেমে থেমে বৃষ্টি হতে দেখা গিয়েছিল। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টা থেকে তেঁতুলিয়া নদীতে জোয়ারের তীব্রতা আরো বাড়তে থাকে। ফলে প্লাবিত হয় চরাঞ্চালসহ নিম্নাঞ্চল। এতে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ভোলা : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে ভোলার চরফ্যাশনের কুকরী-মুকরি, ঢালচর ও চরপাতিলাসহ বেশ কয়েকটি নিচু এলাকা। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত ২ হাজার মানুষ। মঙ্গলবার (২৫ মে) সকাল ১০টা থেকে নদী ও সাগর মোহনা উত্তাল রয়েছে। এতে অতি জোয়ারে ভোলার নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো ক্ষয়-ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
চরফ্যাশন (ভোলা) : ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ভোলার দক্ষিণাঞ্চল বঙ্গেপসাগরের কোল ঘেষে চরফ্যাশন বিছিন্ন দ্বীপ ঢালচর ও চরকুকরী বৃষ্টপাত এবং বয়ে যাচ্ছে বাতাসের আদ্রতা বৃদ্ধি হয়ে চর দু‘টি তলিয়ে গেছে। সেই সাথে উপজেলার আরো কয়েকটি নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর থেকে কয়েক দফায় বৃষ্টির সাথে ধমকা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। আকাশ ক্রমান্বয়ে মেঘাচ্ছন্ন হচ্ছে।
এ ছাড়াও চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন্ন চর পাতিলা, ঢালচর, চর নিজাম ও চর মানিকাসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলের জোয়ারের পানি প্রবেশ করছে। এতে করে ওই এলাকার লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
ঝালকাঠি : ঝালকাঠিতে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সর্বত্র গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। দুপুরের পর সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। নদী তীরের মানুষের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে পড়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছে মানুষ। এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইয়াস মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) : ইয়াসের প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর। এটি পায়রা বন্দর থেকে আজ সকাল ৬ টায় ৪৮০ কিলোমিটার দক্ষিন-দক্ষিন পশ্চিমে অবস্থান করছিল। তাই পায়রা বন্দরকে ০২ নম্বর দূরবর্তী ণ্ডশিয়ারি সংকেত দেখিতে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গভীরে সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরা ট্রলারকে নিরাপদে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। ঘূর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বাতাসের গতিবেগ অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল বিকাল থেকে উপকূলীয় এলাকায় থেমে থেমে হালকা মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সাগর ও নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন থেকে পাঁচ ফটু উচ্চতায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে মঙ্গলবার সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সর্বত্র গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। সকাল থেকে পায়রা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে।পায়রা নদী তীরের মানুষের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢোকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে মানুষ। এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইয়াস মোকাবেলায় প্রস্ততি গ্রহণ করা হয়েছে। ৫৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রস্তত রাখা হয়েছে। এছাড়াও ৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রেগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
পটুয়াখালী : ঘূর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাব পটুয়াখালীর জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলের বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে পানিবন্দী হয়ে পরেছে জেলার কমপক্ষে ২৪ টি গ্রামের ১৮ হাজার মানুষ। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র মতে জোয়ারের পানি বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
সকাল থেকে থেমে দমকা হাওয়া সহ গুড়ি ওমাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ঘূর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার লালুয়ায় বিধ্বস্ত বেড়িবাধ দিয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চ জোয়ারের পানি প্রবেশ করে ১১ টি গ্রাম পুরোপুরি প্লাবিত হয়েছে। এতে পানি বন্দী হয়ে পরেছে ওইসব গ্রামের প্রায় ৮ হাজার মানুষ।
রামগতি (লক্ষীপুর) : হঠাৎ জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে লক্ষীপুরের রামগতি উপজেলার নিম্নাঞ্চল। এতে রবি ফসল বাদাম ও মরিচের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা এলাকাবাসীর। আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব ও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রবল বাতাস বয়ে যাচ্ছে এসব এলাকায়।
মেঘনায় উত্তালের ফলে জোয়ারের পানিতে রামগতির উপজেলার উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রবল বাতাসের ঢেউয়ের আঘাতে নদীতে ভাঙনও বেড়েছে। এভাবে প্রতিদিন জোয়ারের পানি বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার চরগাজী,বড়খেরী,চরআলগী ইউনিয়নের রামদয়াল ও আলেকজাণ্ডার ইউনিয়নের বালুরচর সহ নদীর তীরবর্তী এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে শত শত পরিবার এখন পনিবন্দি রয়েছে।এদিকে জোয়ারের প্রভাবে নদী ভাঙন বেড়ে গেছে।
রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) : ঘূর্ণিঝর ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের পানি অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলের বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করছে। মঙ্গলবার সকালে রাঙ্গাবালী উপজেলার চরআণ্ডা, দক্ষিণ চরমোন্তাজ, চালিতাবুনিয়া ও ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে। এতে পটুয়াখালীর উপকূলীয় রাঙ্গাবালী উপজেলার ১৩ গ্রাম প্লাবিত হয়। এছাড়াও বেড়িবাঁধের বাইরের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়।
জোয়ারের পানিতে প্লাবিত গ্রামগুলো হলো- চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআণ্ডা, নয়াচর, উত্তর চরমোন্তাজ, চরবেষ্টিন, মোল্লা গ্রাম, ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের চরনজির, কোড়ালীয়া, কাউখালীচর, চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের মরাজাঙ্গী, চিনাবুনিয়া, বিবির হাওলা, গোলবুনিয়া, চরলতা প্লাবিত হয়ে শত শত মানুষ পানি বন্ধী হয়ে পরেছেন। ঘূর্ণিঝর আঘাত হানার আগেই এসব এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় চরম আতঙ্কে রয়েছেন উপকূলবাসী। ধরণা করা হচ্ছে বিগত দিনের রেকর্ড অতিক্রম করবে এবারের ঘূর্ণিঝর।
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) : গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় তাণ্ডব চালিয়েছে কালবৈশাখী ঝড়। কালবৈশাখীর সঙ্গে হয়েছে ভারিবৃষ্টিপাত।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, ঝড়ের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়েছে উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আমির উদ্দিনের বসতঘর, আসবাবপত্র। নষ্ট হয়েছে ঘরের ধান,চাল। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সোমবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় এক ঘন্টার মতো ঝড়োহাওয়াসহ ভারী বৃষ্টিপাত হয়। ঝড়ে বিধ্বস্তের শিকার পরিবারটি আঙ্গিনায় খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। বাদামের চর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আমির উদ্দিন বলেন, সোমবার বিকেলে কালবৈশাখীর ঝড়ে বসত বাড়ির সবকটি ঘর ভেঙ্গে চুরমার হলেও এখন পর্যন্ত কোনো জনপ্রতিনিধি খোঁজ-খবর নেয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।