পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বঙ্গোপসাগরে গর্জন করছে ঘূর্ণিঝড়। ‘আমফান’ আঘাত হানার ঠিক এক বছর পরই আসছে ‘যশ’ বা ‘ইয়াস’ (ণধধং, যার উচ্চারণ ণধংং)। ওমানী ভাষায় এই নামের অর্থ ‘দুঃখ-হতাশা’। করোনাকালে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে দিয়েছে ‘যশ’ নামের সম্ভাব্য দুর্যোগের শঙ্কা। গতকাল সন্ধ্যায় সর্বশেষ অবস্থান ও গতি-প্রকৃতি অনুযায়ী, এই ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর উপকূল থেকে ৫৮৫ থেকে ৬৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। আর এটির গতিমুখ বজায় থাকে উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে ভারতের উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অভিমুখে। আবহাওয়াবিদগণ জানান, যদি গতিপথ বদল না করে তাহলে আগামীকাল বুধবার ভোরে ভারতের উপকূলে ‘যশ’ আঘাত হানতে পারে। বাংলাদেশ এবং ভারতের আবহাওয়া বিভাগ এমনটি আভাস দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের উপকূল অনেকটা ঝুঁকিমুক্ত থাকতে পারে। ‘যশ’র প্রভাবে বিশেষত খুলনা উপকূলে ও দক্ষিণ-পশ্চিমে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ দেশের অনেক এলাকায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে বুধবার ভরা পূর্ণিমা ও এর সংলগ্ন চন্দ্রগ্রহণের প্রভাবকে ঘিরেও আছে শঙ্কা-ভয়। গতকাল প্রায় দিনভর ঘূর্ণিঝড়টি সমুদ্রে বাংলাদেশ থেকে ৬শ’ কিলোমিটার দূরে স্থিরাবস্থায় থাকে। এরফলে ঝড়ের শক্তিবৃদ্ধি পাচ্ছে নাকি কমছে- তা নিয়েও শঙ্কা।
তবে গতকাল সন্ধ্যা থেকে এটি আবার উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। সবকিছুই নির্ভর করছে ঘূর্ণিঝড়টির আগাগোড়া মতিগতি ও মর্জির উপর। ‘যশ’র প্রভাবে গতকালও বাতাসে অত্যধিক হারে আর্দ্রতা থাকায় রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ভ্যাপসা গরমে-ঘামে মানুষ কাহিল হয়ে পড়ে। কোথাও কোথাও দমকা বাতাসের সাথে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি হয়েছে। ‘যশ’র প্রভাবে গুমোট আবহাওয়ায় ভয়-আতঙ্কে ঘুম নেই উপকূলবাসীর। সরকারের পক্ষ থেকে উপকূলীয় জেলাসমূহের স্থানীয় প্রশাসনকে সবধরনের প্রস্তুতি ও সতর্কতার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানায়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়টি ধীরগতিতে উত্তর-পশ্চিম দিকে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের এই গতিমুখ বজায় থাকলে ভারতের উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে তেমন বড়সড় প্রভাব পড়বে না। বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদরাও জানান, সরাসরি উড়িষ্যার দিকেই ‘যশ’র গতিমুখ। গতিপথ বদল না করলে ঘূর্ণিঝড়টি সরাসরি বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানবে না। ঝড়ো হাওয়ার সাথে বেশ জোরালো মেঘ-বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।
তবে উপকূলে আঘাত হানার আগেই শেষ মুহূর্তে গতিপথ পরিবর্তন করেছে অতীতে অনেক ঘূর্ণিঝড়। তাও স্মরণ করিয়ে দেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞগণ। তবে ‘যশ’ কী আমফানের সমান শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হবে? সর্বশেষ গতবছর ২০ মে সংঘটিত ঘূর্ণিঝড় আমফানের শক্তিশালী থাকবে কিনা আগাম ধারণা করা কঠিন। যদিও তেমন আলামত নেই। আমফান আঘাত হানার সময়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৪০ কিলোমিটার। তবে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমসহ খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের একাংশে প্রবেশকালে ঝড়ের গতিবেগ নেমে আসে সর্বোচ্চ ২শ’ বা ১৮০ কিলোমিটার।
পশ্চিমবঙ্গের আলীপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদগণসহ ভারতের আবহাওয়া বিশেষজ্ঞগণ ঘূর্ণিঝড় যশ আমফানের সমান শক্তিশালী নাও হতে পারে বলে আপাতত ধারণা করছেন। যশ আঘাতের সময়ে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। এ অবস্থায় যশের গতিবেগ ঘন্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার হতে পারে।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় আবহাওয়া বিভাগের সর্বশেষ বুলেটিনে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানান, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় যশ উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে এর দূরত্ব ৫৮৫ থেকে ৬৫৫ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে।
অনুকূল আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে যেতে পারে। এটি আগামীকাল বুধবার ভোর নাগাদ ভারতের উত্তর উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের খুলনা উপকূলের কাছ দিয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় পৌঁছাতে পারে।
এর আগে রোববার এটি দিনে নিম্নচাপ এবং রাতে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। আর সকালে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কি.মি.র মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ কিমি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে সর্বোচ্চ ৮৮ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। হাজারো ট্রলার নৌযান ভিড়েছে পোতাশ্রয়ে, ফিশারি ঘাটসমূহে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।