মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
১৯৯৫ সালে ব্রিটেনের প্রিন্সেস ডায়ানার সাক্ষাৎকার নিতে বিবিসির সাংবাদিক মার্টিন বশির প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন। আর ওই সাক্ষাৎকার ডায়ানা ও চার্লসের সম্পর্কের অবনতি ঘটায় বলে অভিযোগ তুলেছেন তাদের বড় ছেলে ডিউক অফ ক্যামব্রিজ প্রিন্স উইলিয়াম। শুক্রবার (২১ মে) উইলিয়াম এ অভিযোগ তোলেন বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
প্রিন্স উইলিয়াম বলেন, ‘আমি খুবই বেদনাহত। কারণ আমার মা মৃত্যুর আগে জেনে যেতে পারেননি যে, তার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। ডায়ানা কোনো দুর্বৃত্ত প্রতিবেদকের খপ্পরে পড়েননি, বরং বিবিসির হর্তাকর্তাদের ফাঁদেই পা দিয়েছিলেন তিনি।’
ডায়ানার ছোট ছেলে ডিউক অফ সাসেক্স প্রিন্স হ্যারি তার মায়ের মৃত্যুর জন্য বিষাক্ত সংবাদমাধ্যমের সংস্কৃতিকে দায়ী করেছেন। এক বিবৃতিতে প্রিন্স হ্যারি বলেন, শোষণ ও অনৈতিক চর্চার সংস্কৃতির ক্ষতিকর প্রভাব শেষ পর্যন্ত তার মায়ের জীবন কেড়ে নিয়েছে। এ ধরনের চর্চা এখনও প্রভাববিস্তারকারী উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রিন্স হ্যারি।
হ্যারি বলেন, ‘আমার মা এ জন্য প্রাণ হারিয়েছেন। তবে কিছুই পরিবর্তন হয়নি। ডায়ানার পরম্পরা রক্ষার মধ্য দিয়ে আমরা সবাইকে রক্ষা করতে পারব। একই সঙ্গে তার মর্যাদাবোধও আমরা তুলে ধরতে পারব।’
এদিকে ডায়ানার দুই ছেলে প্রিন্স উইলিয়াম ও হ্যারির কাছে লিখিত ক্ষমা চেয়েছে বিবিসি। পাশাপাশি ডায়ানার ভাই আর্ল স্পেনসার ও সাবেক স্বামী প্রিন্স চার্লসের কাছেও ক্ষমা চায় সংবাদমাধ্যমটি।
ব্রিটিশ পুলিশ জানিয়েছে, নতুন তদন্ত প্রতিবেদন মূল্যায়ন করে দেখা হবে। এর আগে বৃহস্পতিবার প্রিন্সেস ডায়ানার সেই সাক্ষাৎকার নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারক লর্ড ডাইসন।
এতে বলা হয়, বিবিসির প্রযোজনা নীতিমালা ‘ভয়াবহ লঙ্ঘন’ করেছিলেন ব্রিটিশ সাংবাদিক ও উপস্থাপক মার্টিন বশির। ওই সময় ‘প্রতারণামূলক আচরণের’ পাশাপাশি ভুয়া ব্যাংক স্টেটমেন্টও ব্যবহার করেন তিনি। ১৯৯৫ সালে বিবিসির প্যানারোমা অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকারে হাজির হন ডায়ানা। সাক্ষাৎকারটি নেন মার্টিন বশির। তবে সাক্ষাৎকারটি নেয়ার ক্ষেত্রে সততা ও স্বচ্ছতার বিষয়ে বিবিসির যে মানদণ্ড রয়েছে, তা মানা হয়নি।
বিবিসির মহাপরিচালক টিম ড্যাভি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘লর্ড ডাইসনকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। ১৯৯৫ সালের সাক্ষাৎকার ঘিরে তার তদন্ত প্রতিবেদন পূর্ণাঙ্গ ও বিস্তারিত। বিবিসি তার প্রতিবেদনের পুরোটাই গ্রহণ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রিন্সেস অফ ওয়েলস ডায়ানা বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দেয়ার বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন। তবে এটি পরিষ্কার, সাক্ষাৎকারটি নিতে যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা বিবিসির মানদণ্ড অনুযায়ী ছিল না। এ জন্য আমি ক্ষমা চাইছি। লর্ড ডাইসন আমাদের ব্যর্থতাগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পেরেছেন।’
বিবৃতিতে ড্যাভি আরও বলেন, ‘সাক্ষাৎকার গ্রহণে বিবিসির পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া এখন অনেক উন্নত। ডায়ানার সাক্ষাৎকারটি নিতে যে প্রক্রিয়া ওই সময় অবলম্বন করা হয়েছিল, তা পরিহার করা যেত। সাক্ষাৎকারটি নেয়ার সময় কী কী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তা জানার চেষ্টা করা উচিত ছিল বিবিসির।’
তিনি বলেন, ‘বিবিসির পক্ষে ২৫ বছর আগের সময়ে ফিরে যাওয়া সম্ভব না। পুরো ঘটনার জন্য আমরা এখন নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছি।’
ডায়ানার সাক্ষাৎকার সাংবাদিক বশিরকে রীতিমতো জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দেয়। বিশ্বজুড়ে ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ওই সাক্ষাৎকার দেখেছিল। সেখানে নিজের জীবন ও বিয়ে নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেন ডায়ানা।
সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ রাজপরিবার নিয়ে ডায়ানা এমন অনেক বিষয় জানান, যা নিয়ে এর আগে কখনো মুখ খোলেননি তিনি। ডাচেস অফ কর্নওয়েল ক্যামিলাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছিলেন, প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে তার বিয়েতে দুজন নয়, তিন ব্যক্তি ছিলেন। সাক্ষাৎকারের দুই বছর পর ১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট প্যারিসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ডায়ানা। সূত্র : বিবিসি
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।