Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনাদ্ভূত মানসিক চাপ এবং করণীয়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০২১, ১২:০১ এএম

যদি আপনার মস্তিষ্কে আচ্ছন্নতা অনুভূত হয় এবং আপনি সবসময় ক্লান্ত থাকেন তবে আপনি একা নন। ক্লান্তি, বিরক্তি এবং মানসিক আচ্ছন্নতার অনুভূতি করোনাকালীন অস্বাভাবিক জীবনের প্রতি আমাদের দেহের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। এই ধরণের মানসিক সমস্যার আরও কয়েকটি আলাদা কারণ থাকতে পারে। তবে, মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই সমস্যার মূলে রয়েছে গত বছর থেকে শুরু হওয়া করোনা সংক্রান্ত মানসিক চাপ ও মানসিক আঘাত।
দীর্ঘস্থায়ী চাপ আমাদের ঘুমকে ব্যাহত করে অবসন্ন করে তোলে। সেন্ট লুইসের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ড. জেসিকা গোল্ড বলেন, ‘এত দিন পর বেশিরভাগ লোকের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ, হতাশা, ট্রমা ঘটেছে।’ তবে, করোনা মহামারীতে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের জন্য মানসিক আঘাত অনেক বড়। এর মধ্যে যারা নিজের প্রিয়জন হারিয়েছেন, চাকরি বা আবাসন হারিয়েছেন, বাচ্চাদের দেখ-ভাল করা নিয়ে লড়াই করছেন বা কোভিড-১৯ থেকে আরোগ্য লাভ করেছেন, তাদের অবসন্নতার অভিজ্ঞতা সব থেকে বেশি।

চাপের সময়গুলিতে মানুষকে যেসমস্ত সাধারণ বিষয়গুলি সহায়তা করে, তা মনে রাখার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন জন হপকিন্স উইমেন মুড ডিসঅর্ডারস সেন্টারের বিশেষজ্ঞ পাইন। সেগুলি হ’ল, শরীর চর্চা, একটি স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভাস, বাইরে বাইরে গিয়ে নেতিবাচক সংবাদ গ্রহন সীমিত করা, এবং প্রায়শই স্নায়ূ শিথিলকরার উপযোগী ক্রিয়াকলাপে যুক্ত হওয়া, যেমন মজাদার কোনও কিছু দেখা, বা পছন্দের কিছু শোনার, বা পছন্দের বই পড়া। তবে, যদি ক্লান্তি, অবসাদ ও বিষন্নতা মোকেিবলায় এই সাধারণ কৌশলগুলি কাজ না করে, তাহলে অবশ্যই দৈনন্দিন জীবন যাপন পরিবর্তন করার চেষ্টা করতে হবে। পেইন বলেন, ‘আপনি যদি প্রতিদিন হাঁটেন এবং এটি কাজে না আসে, তাহলে আপনি সাইকেল চালানোর চেষ্টা করুন।’

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ড. জেসিকা গোল্ড বলেন, ‘আপনার প্রয়োজন মতো ছুটি নিন।’ তিনি বলেন, ‘স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে আপনি নিজের যত্ন নিচ্ছেন তা নিশ্চিত করুন।’ জেসিকা আরও বলেন, ‘কারও সাথে কথা বলার জন্য ভুল সময় বলে কিছু নেই। আপনি যদি কোনও মনরোগ চিকিৎসকের সাথে অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে না পারেন তবে কোনও বন্ধু বা সহকর্মীর সাথে কথা বলুন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যদি কেবল এমন জায়গায় পৌঁছতে পারি, যেখানে আমরা বিভিন্ন বিষয়ে আরও খোলাখুলি কথা বলতে পারি, আমরা একা অনেকটাই চাপ কম অনুভব করব। আরও সাথে থাকার অনুভব করা আমাদের মানসিক চাপ এবং এ সম্পর্কিত ক্লান্তি কিছুটা লাঘব করতে সহায়তা করে।’ এছাড়া, বিভিন্ন গবেষণা দেখায় যে, কৃতজ্ঞতার অনুভূতি মানুষের মেজাজকে দমিয়ে দেয় এবং এটি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। পেইন কৃতজ্ঞ হওয়ার মতো বিষয়গুলি অনুসন্ধান করার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় কৃতজ্ঞ হওয়ার মতো জিনিসগুলি খুঁজে পেতে পারি।’
এর পাশাপাশি, স্বীকৃতি এবং স্ব-সহানুভূতি সাহায্য করবে। জেসিকা বলেন, ‘আমাদের নিজেদেরকে কিছুটা অনুগ্রহ করতে সক্ষম হতে হবে। অন্য কথায়, মেনে নিন যে, আপনি সম্ভবত দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারবেন না বা এখনই সম্পূর্ণটা সম্পন্ন করতে সক্ষম নন।’ বেশিরভাগের মানুষ যখন এভাবে জীবনে কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থা শুরু করতে সক্ষম হবে, তখন সম্ভবত মস্তিষ্কের এই চাপগুলি আরও হালকা হয়ে যাবে। সূত্র : এনপিআর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ