মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের করোনা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। গতকাল একদিনে করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যুতে নতুন রেকর্ড হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই পরিস্থিতির নেপথ্যে রয়েছে করোনার নতুন ভারতীয় স্ট্রেন। নতুন এই স্ট্রেন ভারত থেকে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। করোনার নতুন ধরণ যদি ভারত শনাক্ত করতে না পারে তাহলে দেশটির পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়েছেন।
ভারতে প্রায় ১৪০ কোটি লোকের বসবাস। গত ১৪ দিন ধরে সেখানে দৈনিক করোনা সংক্রমণের সংখ্যা তিন লাখের উপরে রয়েছে। গত তিনদিন ধরে সেই সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়িয়েছ। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ২৪ ঘন্টা ভারতে ৪ লাখ ১৪ হাজার মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৯১৫। একদিনের হিসাবে দুটিই নতুন রেকর্ড। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ভারতে দৈনিক সংক্রমণ ৪ লাখের গণ্ডি পার করেছে। আর ৪ লাখ সংক্রমণের নজির বিশ্বে কেবল ভারতেরই রয়েছে।
এই প্রাদুর্ভাব থেকে উদ্ভূত করোনার নতুন রূপান্তরগুলি ট্র্যাক করতে ভারতের ব্যর্থতাই বিজ্ঞানীদের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। ব্রিটেনের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, অক্টোবরে প্রথম করোনায় ভারতীয় স্ট্রেনের হদিশ পাওয়া গিয়েছিল। সেই স্ট্রেনটি ছিল বি.১.৬১৭। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য যে ভারতীয় স্ট্রেনকে দায়ী করী হচ্ছে, সেটি হল বি.১.৬১৭.২। আগের স্ট্রেনের থেকে এই ভারতীয় স্ট্রেনটি আরও দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডের তরফে জানানো হয়েছে। এই বিষয়ে ব্রিটেনের বেশ কয়েকটি দৈনিক শুক্রবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ভারতীয় স্ট্রেন ছাড়াও দক্ষিণ পূর্ব ব্রিটনের কেন্টের একটি স্ট্রেন, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেন পাওয়া গিয়েছিল। প্রতিটি স্ট্রেন আসল করোনা ভাইরাসের থেকে দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
বি.১.৬১৭ স্ট্রেনের দ্বিতীয় বা তৃতীয়-প্রজন্মের সংস্করণও ইতিমধ্যে ভারতে ছড়িয়ে পড়তে এবং সম্ভবত আরও বিপজ্জনক হতে পারে বলে জানিয়েছেন হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের সাবেক অধ্যাপক ও অ্যাক্সেস হেলথ ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারপারসন উইলিয়াম হ্যাসেলটাইন। তিনি বলেন, ‘জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা ভারতের রয়েছে তবে এটির জন্য একটি গণ নজরদারি কর্মসূচী থাকা দরকার ছিল। তা হলে তারা নতুন রূপগুলির সন্ধান আগেই পেতেন এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া যেত।
এদিকে, ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যু দুটোই হু হু করে বাড়ছে। দেশটির মহামারী এখন ক্রমশ পূর্ব দিকে এগোচ্ছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সতর্ক করে দিয়েছে। আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশা, ঝাড়খণ্ড ও বিহার- পূর্ব ভারতের এই পাঁচটি রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আপদকালীন বৈঠকের পরই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এ মন্তব্য করা হয়েছে।
বিবিসি জানায়, এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওই রাজ্যগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে নেয়া হচ্ছে নানা ব্যবস্থাও। দক্ষিণ, পশ্চিম বা উত্তর ভারতের তুলনায় পূর্ব ভারতের পরিস্থিতি এতদিন কিছুটা ভালো ছিল। কিন্তু তা ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে ইঙ্গিত পাওয়ার পরই বুধবার বিকেলে পূর্বের পাঁচটি রাজ্যের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় আমলা ও বিশেষজ্ঞরা।
পরে রাতে দিল্লিতে জারি করা এক বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় সরকার বলেছে, ‘যাবতীয় সাক্ষ্যপ্রমাণ এদিকেই দিকনির্দেশ করছে যে, কভিড মহামারী এখন ক্রমশ পূর্ব দিকে এগোচ্ছে।’ ‘দেশের (পূর্ব প্রান্তের) এই রাজ্যগুলোতে দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে, যেমন বাড়ছে মৃত্যু হারও’ বলা হয় বিবৃতিতে। বিহারে সোমবারেও মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল সাড়ে ১১ হাজার। গত মাসের শেষ সপ্তাহেও সেই গড় ছিল দশ হাজারের নিচে। অথচ বৃহস্পতিবার সেই সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজারে পৌঁছেছে। রাজ্যে ১৫ মে পর্যন্ত জারি করা হয়েছে লকডাউন।
আসামে সপ্তাহদুয়েক আগেও দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল এক হাজারের নিচে। এখন তা পাঁচ হাজারের কাছাকাছি গিয়ে ঠেকেছে। পশ্চিমবঙ্গেও মাত্র দিনদশেক আগেও প্রতিদিন ১০-১২ হাজার করে নতুন কভিড রোগী শনাক্ত হচ্ছিলেন। এখন সেখানেও দৈনিক সংক্রমণ ১৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। সূত্র : টিওআই, বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।