পবিত্র জুমাতুল বিদা। শুক্রবার মাহে রমজানের শেষ জুমায় চট্টগ্রামের মসজিদে মসজিদে মুসল্লির ঢল নামে। নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতে করোনা মহামারি থেকে মুক্তি পেতে মহান আল্লাহর দরবারে করুণ আকুতি জানান ধর্মপ্রাণ মানুষ। এসময় তাদের আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে উঠে। পরম দয়াময় রবের দরবারে বিগলিত চিত্তে গুনাহ মাফ এবং পবিত্র রমজানে ইবাদত বন্দেগি কবুলের আবেদন জানান মুসল্লিরা। চোখের পানিতে মুসলিম উম্মার সুরক্ষা, অসুস্থদের দ্রুত আরোগ্য লাভ, মহামারি পরিস্থিতির উন্নতি এবং দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।
বারো আউলিয়ার চট্টগ্রামে পবিত্র মাহে রমজানের শেষ জুমাকে ঘিরে অন্যরকম এক ভাবগম্ভীর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সকাল থেকে শুরু হয় জুমার নামাজের প্রস্তুতি। মাসজুড়ে রোজা আর ইবাদত বন্দেগির মধ্যে পবিত্র এই মাসকে বিদায় জানাতে মুসল্লিরা হাজির হন মসজিদে। আজানের আগেই প্রতিটি মসজিদ কানায় কানায় ভরে যায়।
প্রতিটি মসজিদে খুতবায় উচ্চারিত হয় ‘আল বিদা, আল বিদা, ইয়া শাহরু রামাদ্বান।’ বিদায় রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস মাহে রমজান। জুমাতুল বিদা উপলক্ষ্যে বিশেষ খুতবা দেন ইমাম ও খতিবগণ। তারা মর্যাদাপূর্ণ এ দিনটির ফজিলত বর্ণনা করেন। খতিবগণ মাহে রমজানের শেষ দিনগুলোতে বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগি করার আহ্বান জানান। সেই সাথে জাকাত, ফিতরা বিতরণের বিভিন্ন মাসলা মাসায়েলও তুলে ধরেন।
স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পবিত্র জুমার নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। উপচে পড়া মুসল্লির ভিড়ে জুমার জামাত মসজিদ ছাড়িয়ে আশপাশের সড়ক ও খোলা মাঠ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। নগরীর সিমেন্ট ক্রসিং, বন্দরটিলা, ফকিটরহাট, আগ্রাবাদ চৌমুহনি, পাঠানটুলিসহ কয়েকটি এলাকায় মসজিদের সামনের সড়কে মুসল্লিদের নামাজ আদায় করতে দেখা যায়। এসময় ওইসব সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।
নগরীর ঐতিহাসিক আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ, লালদীঘি জামে মসজিদ, জমিয়াতুল ফালাহ, এনায়েত বাজার শাহী জামে মসজিদ, ধনিয়ালা পাড়া বায়তুশ শরফ জামে মসজিদ, হযরত আলী শাহ মসজিদ, মেহেদী বাগ সিডিএ আবাসিক এলাকা মসজিদ, চন্দনপুরা তাজ মসজিদ, অলি খাঁ মসজিদ, হযরত টাক শাহ জামে মসজিদ, হযরত আমানত শাহ (রহ) দরগা জামে মসজিদ, বায়েজিদ বোস্তামি দরগা মসজিদ, হযরত গরীবুল্লাহ শাহ জামে মসজিদ, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, জাম্বুরি ময়দান জামে মসজিদ,
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসহ বন্দর নগরী ও আশপাশের সব মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জুমার জামাত অনুষ্টিত হয়। নামাজ শেষে ধর্মপ্রাণ মানুষ পিতা-মাতাসহ মুরব্বিদের কবর জিয়ারত করেন। অনেকে এতিম মিসকিন ও হতদরিদ্রদের মাঝে দান খয়রাত করেন।