মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মহামারি করোনাভাইরাসে টালমাটাল ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি এরকমই। শ্মশানে জায়গা না-পেয়ে বাড়িতে মৃতদেহ ফিরিয়ে এনে পচন আটকাতে বরফ-চাপা দেওয়াটা দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে নিত্য-নৈমিত্তিক। একাকী যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের কারও কারও সৎকার হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে। অক্সিজেন নিয়ে হাহাকার অব্যাহত, নিভছে না চিতা। গড়ে প্রতি ঘণ্টায় দশ থেকে পনেরো জন কোভিড রোগীর দাহ হচ্ছে শ্মশানে।
অতিমারির শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত দিল্লিতে কোভিডে মৃতের সংখ্যা পনেরো হাজারের কিছু বেশি। গত তিন-চার সপ্তাহে শুধুমাত্র নথিভুক্ত মৃতদেহ ৩৯৮২টি। সূত্রের মতে, প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি, কারণ নথিভুক্ত না-করেই অগণিত মৃতদেহ দাহ হয়ে যাচ্ছে।
এগারো বছর ধরে দিল্লির দয়ানন্দ মুক্তিধাম শ্মশানে কাজ করছেন রাম পাল। জনে জনে প্রতিটি পরিবারকে বলছেন, ‘‘এখানে আসবেন না। জায়গা নেই।’’ কিন্তু সে কথায় কাজ হচ্ছে না। রাম পাল বলছেন, ‘‘এখানে প্রতিদিন ৩০টি দেহ দাহ করা সম্ভব। সেখানে গত পাঁচ দিনে রোজ চল্লিশ থেকে পঞ্চাশটি দাহকার্য করতে হয়েছে। সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, যমুনার তীরে দাহকার্যের ব্যবস্থা করুন। তা হলে অন্তত পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করা যাবে। এখানে তা সম্ভব হচ্ছে না। একটি দেহ দাহ করতে অন্তত ৩০০ কেজি কাঠ লাগে। এত কাঠই বা কে জোগায়? এখন তো কাঠের থেকে শবের সংখ্যা বেশি!”
মৃতদেহের দীর্ঘ সারির মাঝখানে দাঁড়িয়ে অসহায় সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষই। সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য, আইনজীবী অনীপ সচতে অক্সিজেন না-পেয়ে বাড়িতেই মারা যান। তাঁর স্ত্রী এবং কন্যা সকাল ১১টায় শ্মশানে গিয়ে শোনেন, ২৫ জনের পিছনে রয়েছেন তাঁরা। সচতের স্ত্রীর কথায়, “আমরা পুরো দিন অপেক্ষা করেছি, বিভিন্ন শ্মশানে ফোন করে গিয়েছি।’’ শেষে দাহকার্য হয় মাঝরাতে। এই শহরে যাঁরা একা রয়েছেন অথবা যাঁদের সঙ্গীও কোভিডে আক্রান্ত, তাঁদের পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর। দিল্লির বসন্তকুঞ্জের প্রবীণা বাসিন্দা সংঘমিত্রা সেন মারা গিয়েছেন কোভিডে। তাঁর স্বামীও করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে। একমাত্র ছেলে আটকে রয়েছেন বেঙ্গালুরুতে। যুব কংগ্রেস এবং একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহায়তায় সংঘমিত্রাদেবীর শেষকৃত্য হয়।
একটি চ্যানেলে দেখা গিয়েছে শ্রুতি সাহাকে। মাকে বাঁচাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে একটি কারখানায় লাইন দিয়েছিলেন শ্রুতি। সকলের হাতে-পায়ে ধরছিলেন, যদি ফাঁকা সিলিন্ডারটা একটু তাড়াতাড়ি ভরে দেওয়া হয়। তাঁকে বলা হয়েছিল, অপেক্ষা করতে। লাইনেই খবর এল, মা আর নেই।
চর্তুদিকে যখন শ্মশানের ছাই উড়ছে, সেই সময়েও কিছু মানুষের উদ্যোগে দিল্লিতে এখনও প্রতি সকালে সূর্য উঠছে বলে মনে করছেন বাসিন্দারা। দক্ষিণ দিল্লির গ্রেটার কৈলাসে ‘অক্সিজেন লঙ্গর’ খুলেছে গুরুদ্বার সিংহ সভা। তারা নিজ উদ্যোগে খালি সিলিন্ডার ভরে দিচ্ছে। দিল্লি গুরদ্বার কমিটির প্রাক্তন সভাপতি মনজিৎ সিংহ জানাচ্ছেন, তাঁরা পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা থেকে অক্সিজেন জোগাড় করছেন দিল্লিবাসীর জন্য। তিনি বলছেন, “যদি আরও জোগাড় করতে পারি, চব্বিশ ঘণ্টাই এই লঙ্গর চালু থাকবে।’’ অক্সিজেনের পাশাপাশি কোভিড আক্রান্তদের জন্য বিনামূল্যে খাবারও পাঠাচ্ছে এই গুরুদ্বার। সূত্র : আনন্দবাজার
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।