মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের ড. দেবী শেঠি হলেন বিশ^খ্যাত কার্ডিয়াক সার্জন এবং নারায়ণ হেল্থ এর চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ভারতের করোনা বিপর্যয় এবং এটিকে ঘিরে ঘনীভ‚ত আসন্ন সঙ্কট মোকাবেলায় কিছু প্রস্তাবনা রেখেছেন। টাইমস অব ইন্ডিয়াতে প্রকাশিত তার নিবন্ধটির চুম্বক অংশগুলো তুলে ধরা হল:
অক্সিজেন ঘাটতি মোকাবেলার পর খবর শিরোনাম হতে চলেছে, ‘নার্স ও ডাক্তার নেই বলে আইসিইউতে রোগী মারা যাচ্ছে।’ প্রতিদিন ৩ লাখেরও বেশি মানুষের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ছে। পরিসংখ্যানগতভাবে, প্রতিটি সংক্রমিত রোগীর সাথে সম্পর্কযুক্ত কমপক্ষে আরো ৫ জন আছেন, যারাও পজিটিভ তবে পরীক্ষা করাননি।
তার মানে, প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫ লাখ মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে। ধরে নেই যে, তাদের মধ্যে ৫ শতাংশের আইসিইউ’র প্রয়োজন হতে পারে। দুর্ভাগ্যক্রমে, আইসিইউর বেডগুলো মহামারি বিপর্যয়ের শীর্ষে পৌঁছানোর আগেই পূর্ণ। আজ আমাদের নিজস্ব নিবিড় পরিচর্যাকারীরা নিশ্চিত নন যে, তারা সংক্রমিত হলে তারা যেখানে কাজ করছেন, সেই একই আইসিইউতে বেড পাবেন কিনা।
করোনার প্রথম ধাক্কার বিপরীতে এবার আইসিইউগুলো কম বয়সী রোগীতে পরিপূর্ণ হচ্ছে। তাই মারা যাওয়া বেশিরভাগ রোগী পরিবারের তরুণ উপার্জনকারী, যারা সর্বনাশা সামাজিক পরিণতি পেছনে রেখে যাচ্ছেন। দুর্ভাগ্যক্রমে বেডগুলো রোগীদের চিকিৎসা করে না। চিকিৎসক, নার্স এবং প্যারামেডিকরা করেন।
সরকারি হাসপাতালগুলোর বেশিরভাগ আইসিইউ অত্যাধুনিক নয় এবং কোভিড রোগীরা স্বল্প কর্মীসম্পন্ন বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ঠাঁই নেন। করোনার প্রথম আঘাতের সময় অসাধারণভাবে পরিষেবা দেয়া ফ্রন্টলাইনের কর্মীরা ক্লান্ত এবং অবসন্ন হয়ে পড়েছেন। যুদ্ধ জয়ের জন্য আমাদের কয়েক লাখ তরুণ, দক্ষ এবং টিকাপ্রাপ্ত নার্স, প্যারামেডিকস এবং ডাক্তার দরকার।
আইসিইউগুলো সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হ’ল নার্সের অভাব। নার্সিং এবং আইসিইউ পরিষেবা দানকারী প্যারামেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের স্নাতক হওয়ার জন্য পরীক্ষায় অংশ নেওয়া থেকে অব্যাহতি দেয়া উচিত এবং ভবিষ্যতের সরকারি চাকরীর জন্য অগ্রাধিকার দেয়া উচিত, যদি তারা কোভিড আইসিইউতে এক বছরের জন্য কাজ করে। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এ প্রস্তাব লুফে নেবে।
দ্বিতীয় বৃহত্তম বাধা হ’ল, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সহজলভ্যতা। যেসব তরুণ চিকিৎসক বিভিন্ন চিকিৎসা এবং শল্যচিকিৎসায় বিশেষত্ব অর্জনের প্রশিক্ষণ শেষ করতে চলেছেন, তারা যদি এক বছরের জন্য কোভিড আইসিইউতে কাজ করেন, তাদের এনবিই বা এনএমসির পরীক্ষা থেকে অব্যাহতি দেয়া উচিত এবং পূর্ববর্তী পরীক্ষাগুলোতে যারা ব্যর্থ হয়েছেন, তাদের ছাড় দেওয়া উচিত এবং একটি ডিগ্রি উপহার দেয়া উচিত।
ইনটেনসিভ কার্ডিওলজি বা ইমার্জেন্সি মেডিসিনের মতো সঙ্কটপূর্ণ বিষয়ে ডিপ্লোমাসহ কয়েক হাজার চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ রয়েছেন যারা মেডিকেল কাউন্সিলের স্বীকৃত নন। এনএমসি যদি এ ডিপ্লোমাগুলোকে স্বীকৃতি দেয়, তবে সারা দেশে কোভিড আইসিইউগুলো পরিচালনা করার জন্য আমাদের হাজার হাজার অনুপ্রাণিত এবং দক্ষ চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ পেয়ে যাব।
তরুণ ডাক্তার যারা পরীক্ষার মাধ্যমে একটি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট আসন সুরক্ষিত করতে একাধিক প্রশ্ন মুখস্থ করে ঘরে বসে আছেন, যদি তারা এক বছরের জন্য কোনো কোভিড আইসিইউতে কাজ করেন, তাদের পরবর্তী এনইইটি পরীক্ষায় জন্য গ্রেস নম্বর দেওয়া যেতে পারে।
কোভিড আইসিইউ হ’ল, পিপিই পড়ে কাজ করার জন্য নিকৃষ্টতম জায়গা। আমরা খুব কমই এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি, যার মধ্যে রোগীর জীবন বাঁচানোর আগে আমাদের নিজের জীবন নিয়ে প্রথমে চিন্তা করতে হচ্ছে। কোভিড আইসিইউতে একটানা কয়েক মাস করার জন্য কোনো আর্থিক উদ্দীপনাই যথেষ্ট হতে পারে না। এ যুদ্ধের মুখোমুখি হওয়ার জন্য আমাদের তরুণ নার্স এবং চিকিৎসকদের জীবন পরিবর্তনকারী উপহার দেয়া প্রয়োজন।
আসুন আমরা বাস্তববাদী হই এবং স্বীকার করি যে, আইসিইউ বেডগুলো বাড়ানোর জন্য আমরা বর্তমানে হাসপাতালের ভিতরে যা কিছু করছি, তা কাজ করছে না। আজ সারা দেশ অক্সিজেনের অভাবে ছটফট করছে। শিল্পসংস্থাগুলোর উদারতা এবং সরকারের হস্তক্ষেপকে ধন্যবাদ, অক্সিজেনের ঘাটতি শিগগিরই সমাধান হয়ে যাবে। তবে, জনশক্তি সঙ্কট মোকাবেলার এবং সর্বকালের অন্যতম সেরা মানবিক বিপর্যকে প্রতিরোধ করার একটি ছোট্ট সুযোগই আমাদের কাছে রয়েছে। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।