নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
আজ থেকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শুরু করছে বাংলাদেশ। ক্যান্ডির পাল্লেকেলে মাঠে সিরিজের দুটি টেস্টই যে বাংলাদেশের জন্য কঠিন পরীক্ষা, সেটি আর বলে দেওয়ার কিছু নেই। ক্রিকেটের বড় সংস্করণে সা¤প্রতিক কালে বাংলাদেশের যে পারফরম্যান্স, তাতে শ্রীলঙ্কার মাটিতে বাংলাদেশ দল নিয়ে শঙ্কার যথেষ্ট কারণ আছে। ঘরের মাটিতেই যেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় সারির দলের কাছে হোয়াইটওয়াশ হতে হয়েছে, সেখানে শ্রীলঙ্কার মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কতটা কী করতে পারে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
শ্রীলঙ্কাও বাংলাদেশের শক্তি ভালোই জানে। এটাও জানে গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ যে একটিমাত্র টেস্ট বিদেশের মাটিতে জিতেছে, সেটি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই। ২০১৭ সালের মার্চে লঙ্কানদের বিপক্ষে নিজেদের শততম টেস্ট জিতেছিল বাংলাদেশ। সেটিই শেষ। গত পাঁচ বছরে বিদেশের মাটিতে ৯টি টেস্ট হারতে হয়েছে মুমিনুল-তামিমদের। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি টেস্টে তো হয়েছে রীতিমতো ভরাডুবি। লঙ্কান গণমাধ্যম বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের দুর্বল টেস্ট রেকর্ডকেই সামনে নিয়ে এসেছে। কলম্বোর ইংরেজি দৈনিক দ্য আইল্যান্ড এক বিশ্লেষণধর্মী লেখায় বলেছে, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টেস্ট রেকর্ড এমনই যে এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, বিদেশের মাটিতে দলটা খুব একটা হুমকি নয়।’ বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সা¤প্রতিক ভরাডুবির পরিসংখ্যানও তুলে ধরা হয়েছে দ্য আইল্যান্ডের লেখায়।
কেবল বিদেশের মাটিতে ভালো করতে না পারার ব্যাপারটিই নয়, বাংলাদেশের আরও কিছু দুর্বলতার জায়গা তুলে ধরেছে তারা। এর মধ্যে আছে বাংলাদেশের বোলিংয়ের দুর্বলতা। টেস্ট ক্রিকেটে ২০ উইকেট নেওয়াটা যে বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ, আইল্যান্ড বলছে সে কথাই। পত্রিকাটি মনে করে, টেস্ট ক্রিকেটে নিয়মিত ২০ উইকেট নিতে না পারাটা বাংলাদেশের একটা বড় সমস্যা। আর টেস্ট ক্রিকেটে পদচারণার ২১ বছরের মাথাতেও বাংলাদেশ কেন টেস্ট জেতার মতো বোলিং-শক্তি তৈরি করে উঠতে পারেনি, তারা এরও একটা ব্যাখ্যা দিয়েছে, ‘টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সমস্যাগুলোর বড় একটি দিক হচ্ছে নিয়মিত প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নিতে না পারা। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে বাংলাদেশ মাত্র পাঁচবার প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নিতে পেরেছে। বাংলাদেশি স্পিনাররা ঘরের মাঠে সুবিধাজনক উইকেটে কার্যকর। আর এটা করতে গিয়ে পেস বোলারদের করার মতো কিছুই আর থাকে না। ব্যাপারটি বিদেশের মাটিতে সমস্যা তৈরি করে পেসারদের। তারা কেউই ছন্দে থাকে না। কেউই আর কার্যকর হয়ে উঠতে পারে না। বাংলাদেশের কোনো পেসার বিদেশের মাটিতে টেস্ট জয়ে ভ‚মিকা রেখেছেন, এমনটা ঘটেছে ৮ বছর আগে।’
যেকোনো বিচারে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সেরা তারকা সাকিব আল হাসান। তার উপস্থিতি দলকে অন্য রকম শক্তি দেয়। এটাই হয়ে আসছে ১০ বছর ধরে। সাকিবের না থাকা গোটা দলের ওপরই বাজে প্রভাব রাখে। দলের কম্বিনেশনে বড় সমস্যা তৈরি করে। সবশেষ দুই বছরে বাংলাদেশ যতগুলো টেস্ট হেরেছে, সেগুলোতে সাকিবের অনুপস্থিতি ভুগিয়েছে। নিউজিল্যান্ড, ভারত অথবা পাকিস্তান-টেস্টে সাকিবের না থাকা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে বাংলাদেশ। এবারের শ্রীলঙ্কা সফরেও সাকিব নেই। আর এটি যে বাংলাদেশের বিরাট এক দুর্বল জায়গা, সেটি দ্য আইল্যান্ড নিজেদের বিশ্লেষণে তুলে ধরেছে বিস্তারিত, ‘এ বছরের শ্রীলঙ্কা সফরটা বাংলাদেশের জন্য অনেক বেশি কঠিন হয়ে উঠবে তাদের দলের সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের না থাকায়। তিনি যে মাপের টেস্ট অলরাউন্ডার, তাতে খুব সহজেই তার মতো একজন ক্রিকেটারের বদলি খুঁজে বের করা মোটেও সহজ কোনো কাজ নয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মেহেদী হাসান মিরাজ ভালো করেছেন, কিন্তু তিনি এখনো প‚র্ণাঙ্গ অলরাউন্ডার হয়ে উঠতে পারেননি।’
দ্য আইল্যান্ড বাংলাদেশের দুর্বলতার আরও একটা বড় জায়গা চিহ্নিত করেছে। সেটি হলো ক্যাচিং। টেস্টে সুযোগ বারবার আসে না। কিন্তু আইল্যান্ড মনে করে ক্যাচিং দুর্বলতা বাংলাদেশকে অনেক দিক দিয়ে সমস্যায় ফেলে। ম্যাচের ফল তো আছেই, এই ক্যাচ মিস অনেক সময় বাংলাদেশ দলকে মাঠে বিব্রতকর অবস্থায়ও ফেলে দেয়। বাংলাদেশ দলের ক্যাচ মিসের প্রসঙ্গে দ্য আইল্যান্ড নিউজিল্যান্ড সফর থেকে ফিরে বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের সেই ‘বিখ্যাত’ হওয়া উক্তিরও উল্লেখ করেছে- ‘নিউজিল্যান্ডের আকাশ পরিষ্কার হওয়ায় আমাদের ক্যাচ পড়েছে।’
আইল্যান্ডের মতে, গত ফেব্রæয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর বাংলাদেশ দল এলোমেলো হয়ে পড়েছে। আর পুরো ব্যাপারটিই দলের আত্মবিশ্বাসকে তলানিতে ঠেলে দিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।