পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর উত্তরায় রাজউকের অ্যাপার্টমেন্টের বাসা থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. তারেক শামসুর রেহমানের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাসায় একা থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। উত্তরা-১৮ নাম্বার সেক্টরে রাজউকের আবাসিক প্রকল্পের দোলনচাপা ভবনের ১৩০৪ নম্বর ফ্ল্যাট থেকে গতকাল দুপুরে পুলিশ বাসার দরজা ভেঙে তার লাশ উদ্ধার করে।
গতকাল রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তারেক শামসুর রেহমানের মৃত্যুর কারণ পুলিশ জানতে ও জানাতে পারেনি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের ক্রাইমসিন টিম ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে পুলিশ সব বিষয়কে সামনে রেখেই তদন্ত করছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণ বলা যাবে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সকাল ১০টায় কাজের বুয়া দরজায় বার বার কড়া নাড়েন। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে তিনি বিল্ডিংয়ের সিকিউরিটি গার্ডকে ডেকে নিয়ে আসেন।
পরে কাজের বুয়া ও সিকিউরিটি গার্ডও অনেকবার কড়া নেড়ে কোনো সাড়া না পেয়ে আশপাশের ফ্ল্যাটের লোকজনকে ডাকেন। আশপাশের লোকজনও কোনো সাড়া না পেয়ে তুরাগ থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে দুপুর ১২টার পর থানা থেকে পুলিশের একটি দল এসে শিক্ষক ও কলামিস্ট ড. তারেক শামসুর রেহমানের ১৩০৪ নম্বর ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। ভেতরে প্রবেশ করে বাথরুমের দরজার সামনে তার লাশ পড়ে থাকতে দেখতে পায় পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের বর্ণনা অনুযায়ী, বাথরুমের দরজার সামনে বমির ওপর পড়েছিল শামসুর রেহমানের লাশ। এ সময় তার পা ছিল বাথরুমের ভেতর। বাকি শরীর ছিল দরজার সামনে। তার শরীরে ছিল সাদা রঙের সেন্ডো গেঞ্জি ও কালো রঙের প্যান্ট। আর তার ডান পায়ে ছিল মোজা। এছাড়া লাশের আশপাশে অনেক রক্তও দেখতে পান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
মাহমুদুর হোসেন রাসেল নামে শামসুর রেহমানের এক প্রতিবেশী বলেন, সকালে স্যারের সাড়া না পেয়ে বুয়া আমাদের খবর দেন। আমরা এসে দরজায় অনেক ধাক্কাধাক্কি করেও স্যারের সাড়া পাইনি। পরে পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে স্যারের ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। তখন পুলিশের সঙ্গে আমরাও ভেতরে প্রবেশ করি। ভেতরে গিয়ে দেখতে পাই, স্যারের লাশ বাথরুমের দরজার সামনে বমি ও রক্তের ওপর পড়ে রয়েছে। এছাড়া স্যারের ফ্ল্যাটের সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল। কোনো ধরনের দৃষ্টিকটু জিনিস আমাদের চোখে পড়েনি।
মাহমুদ হাসান মাসুম নামে আরেক প্রতিবেশী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন। আমি স্যারকে একাধিকবার শ্বাসকষ্টজনিত রোগের ওষুধ এনে দিয়েছি উত্তরা থেকে।
এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত শামসুর রেহমানের খালাতো ভাই বদরুল আলম বলেন, তার স্ত্রী ও কন্যা সন্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। তিনি একাই ফ্ল্যাটে থাকতেন। তার স্ত্রী এবং সন্তানের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। এছাড়া তার আপন ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। তাদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী করণীয় আমরা ঠিক করব। তবে আমার জানা মতে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন।
ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উত্তরা জোনের এসি শচীন মল্লিক বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, অধ্যাপক শামসুর রহমান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণ বলা যাবে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক সদস্য তারেক শামসুর রেহমান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। আন্তর্জাতিক রাজনীতি, আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক ও বৈদেশিক নীতি এবং তুলনামূলক রাজনীতি নিয়ে তার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।