Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাংবাদিকদেরও মামলা দিচ্ছে পুলিশ!

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০৬ এএম

পেশাগত দায়িত্বে বের হওয়া গণমাধ্যমকর্মীদেরও মামলা ও জরিমানা করছে পুলিশ। যদিও পেশাগত দায়িত্বের কারণে জরুরি সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি গণমাধ্যমকর্মীরাও চলমান বিধিনিষেধের আওতামুক্ত। তাহলে পুলিশ কেন নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ এনে সাংবাদিকদের মামলা বা জরিমানা করছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গত দুইদিনই পেশাগত দায়িত্বে বের হওয়া গণমাধ্যমকর্মীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, প্রথম দিন এমন পরিস্থিতির শিকার হন দৈনিক মানবজমিনের ফটো সাংবাদিক জীবন আহমেদ। পেশাগত কাজে বের হয়ে মামলা হওয়ার বিষয়টি তিনি তার ফেসুবক পোস্টে তুলে ধরেন। জীবন আহমেদ তার পোস্টে লেখেন, বুঝলাম না ডাক্তার ও সাংবাদিকদের গাড়িতে কেনো পুলিশ মামলা দিচ্ছে, এগুলো তো জরুরি সেবা। আমাকেও চার হাজার টাকার মামলা দিল। আমি পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ছবি তুলতে আগারগাঁওয়ে পুলিশের চেকপোস্টের সামনে দাঁড়িয়েছিলাম। ক্যামেরা বের করার আগেই আমাকে চার হাজার টাকার মামলা ধরিয়ে দেয়া হলো। জীবন আহমেদ বলেন, অন্য সবার সঙ্গে আমাকে লাইনে ফেলে মামলা দিয়ে দিল পুলিশ। আমি সাংবাদিক বলার পরেও আমাকে চার হাজার টাকার মামলা দেওয়া হয়।
এদিকে রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বর এলাকায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন ঢাকা পোস্ট.কম এর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সাঈদ রিপন। গতকাল সকালে ওই এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি নিজের মোবাইলে ধারণ করার সময় কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা তার ফোনটি নিয়ে নেন।
সাঈদ রিপন বলেন, আমি পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলাম। এমন সময় এক পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে কিছু না বলে মোবাইল ফোনটি নিয়ে যান। যদিও পরে ফোনটি ফেরত দেয়া হয়।
ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ডিএমপির মিরপুর জোনের ডিসি একজন সিনিয়র কর্মকর্তা। তিনি এটা কেন করলেন বুঝতে পারছি না। তাছাড়া সাংবাদিকদের আটকে রাখা বা মোবাইল নেয়ার কোনো নির্দেশনা ডিএমপি বা সরকার দেয়নি। এদিকে গত দুই দিন ধরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, শাহবাগ ও জাহাঙ্গীর গেট এলাকায় আরও বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী এমন হয়রানির শিকার হয়েছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জরুরি সেবা ও সাংবাদিকদের যে মুভমেন্ট পাস লাগে না সে বিষয়টি মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা অনেকেই জানেন না।
তাই তারা এমন আচরণ করছেন। তাদেরকে পুলিশ সদর দফতর থেকে এ বিষয়ে আরও সঠিক ও পরিষ্কার নির্দেশনা দেওয়া দরকার বলে ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা মনে করেন।
এছাড়া গত দুইদিন ধরে জরুরি চিকিৎসা সেবায় বের হওয়া চিকিৎসকদেরও বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছেন পুলিশ সদস্যরা। শুধু হয়রানিই নয়, অনেকে জরিমানারও শিকার হয়েছেন। এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতর থেকে জানানো হয়, জরুরি সেবা সংশ্লিষ্ট লোকজন যারা আছে তাদের কোনো ধরনের মুভমেন্ট পাস প্রয়োজন নেই। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এই সমস্যা দূর করার জন্য তারা কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু কঠোর বিধিনিষেধের প্রথম দিনেই হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন চিকিৎসক। ভুক্তভোগী অনেকেই এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, পুলিশের আইজিপি বেনজীর আহমেদের নির্দেশনা তৃণমূল পুলিশ সদস্যরা মানছেন না।
চিকিৎসকদের সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি রাইটস অ্যান্ড রেসপনসিবিলিটিজ (এফডিআরএস) জানিয়েছে, বিধিনিষেধের প্রথম দিনে কর্মস্থলে যাওয়া-আসার পথে ভোগান্তিতে পড়েছেন চিকিৎসকরা। অনেককেই গুনতে হয়েছে জরিমানা। অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে দেয়া কিংবা দুই ঘণ্টা পর্যন্ত পথে আটকে রাখার মতো ঘটনাও ঘটেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুলিশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ