মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় রীতিমতো কাঁপছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। দেশটিতে ভয়াবহভাবে বেড়েই চলেছে ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে আশংকাজনকভাবে বেড়ে গেছে সংক্রমণ। এই অবস্থায় মুম্বাইয়ের পাঁচ তারকা হোটেলগুলোকে অস্থায়ী হাসপাতাল বা কোভিড সেন্টার হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) শহর কর্তৃপক্ষ একথা জানায়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, অপেক্ষাকৃত কম ঝুকিপূর্ণ বা করোনার হালকা উপসর্গ থাকা রোগীদের পাঁচ তারকা হোটেলে রেখে চিকিৎসা করা হবে। চিকিৎসকরাই নির্ধরাণ করবেন যে, কে হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন আর কে পাঁচ তারকা হোটেলে। আপাতত মুম্বাইয়ের দু’টি পাঁচ তারকা হোটেলে এই কার্যক্রম শুরু হলেও পরবর্তীতে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, করোনা মহামারির কারণে বিদ্যমান স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সংকট মোকাবিলায় মুম্বাইয়ের বেসরকারি হাসপাতালগুলো শহরের চার ও পাঁচ তারকা হোটেলগুলোর সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছেছে। সমঝোতা অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্ত হলেও শারীরিক অবস্থা গুরুতর নয় এমন রোগীদের হোটেলগুলোতে রেখে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে হাসপাতালগুলোতে রোগীদের জায়গা সংকুলান না হওয়ার যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, তা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হতে পারে।
এদিকে নির্দিষ্ট শয্যার অভাবে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা না দিয়ে রোগীদের ফেরত পাঠানো বন্ধ করতে মুম্বাইয়ের মতো শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে দিল্লির রাজ্য সরকার। বুধবার (১৪ এপ্রিল) শহরের করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত হাসপাতাল সংলগ্ন হোটেলগুলোকে হাসপাতাল বানানোর পরিকল্পনা নিয়েছে আম আদমি পার্টি (এএপি) সরকার।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রশাসন জানিয়েছে, দিল্লির ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে দিল্লির রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন হোটেলের সহায়তা চাওয়া হয়েছে ।
দেশটির সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বিভিন্ন হোটেলের সঙ্গে কথা বলে কেজরিওয়াল সরকার একটি তালিকা করেছে। তালিকায় নাম থাকা হোটেলগুলোকে হাসপাতালের বর্ধিত অংশ হিসেবে রূপ দিয়ে ব্যবহার করা হবে।
মোট ২৩টি হোটেল এই তালিকায় রয়েছে। এই ২৩টি হোটেলের মাধ্যমে ২ হাজার ১১২টি শয্যা বাড়ানো সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে কেজরিওয়াল প্রশাসন। প্রথম দফায় ২ হাজার ১১২টি ও দ্বিতীয় দফায় ২৮২টি শয্যা বাড়ানো হবে।
দিন দুয়েক আগেই ১৪টি হোটেলকে সম্পূর্ণ কোভিড হাসপাতালের মর্যাদা দেয় দিল্লি সরকার। এরপর বুধবার আরও কয়েকটি হাসপাতালকে এই তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করা হয়।
এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ছত্তিশগড়ের রাজনন্দগাঁওয়ে করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মৃতদেহ বহন করা হচ্ছে ময়লার গাড়িতে করে। সম্প্রতি এমন একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ওই ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, পিপিই পরা স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মৃতদেহগুলোর শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে শ্মশানে নেওয়ার জন্য আবর্জনার গাড়ির পেছনে তুলছে। করোনার বীভৎসতা কোন পর্যায়ে গেলে চিত্রটা এমন হতে পারে তা অনুধাবন করা মোটেই কঠিন কোনো কাজ নয়।
ভারতে করোনা মহামারি মারাত্মক ভাবে ছড়িয়ে পড়া ১০টি রাজ্যের মধ্যে রয়েছে ছত্তিশগড়ও। ফলে ক্রমবর্ধমান আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার কারণে ছত্তিশগড়ের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে।
আর ওই রাজ্যেরই এলাকা রাজনন্দগাঁওয়ের অবস্থা আরও খারাপ। রাজ্যজুড়ে সকল হাসপাতালে বেড সংকটের কারণে রাজনন্দগাঁওয়ের প্রেসক্লাব চত্বরকে কোভিড সেন্টার বানানো হয়েছে। দেশটির সংবাদ সংস্থা এএনআই’র খবরে বলা হয়েছে, মেডিকেল স্টাফদের একটি টিম রোগীদের যত্ন নিতে সেখানে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্বপালন করছেন।
ছত্তিশগড়ের রাজধানী রায়পুরের প্রধান সরকারি হাসপাতালও রীতিমতো সংকটের সঙ্গে লড়াই করছে। গত এক সপ্তাহ ধরে সেখানে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) ও অক্সিজেন যুক্ত কোনো বেড খালি নেই।
উল্লেখ্য, বুধবার ছত্তিশগড়ে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ২৫০ জন, মারা গেছেন ১২০ জন। রাজ্যটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪ লাখ ৮৬ হাজার ২৪৪ জনে। মোট মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ৩০৭। এরমধ্যে শেষ একমাসে মারা গেছে ১৪১৭ জন। সূত্র: এনডিটিভি
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।