গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
কাল থেকে শুরু হচ্ছে সপ্তাহব্যাপী কঠোর লকডাউন। একই সাথে আগামীকাল রমজানের প্রথমদিন। দুটি বিষয় মাথায় রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী কিনতে আজ ভোর থেকে রাজধানীর বাজারগুলোতে ক্রেতার ঢল নেমেছে। ক্রেতাদের আনাগোনা দেখে বোঝার উপায় নেই, দেশে কোনো মহামারি চলছে।
মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) ভোরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য দিনের চেয়ে আজ ক্রেতার উপস্থিতি বেশি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে ঘরের বাইরে বের হলেই সার্বক্ষণিক মুখে মাস্ক পরিধান, নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা ও জনসমাবেশ এড়িয়ে চলাসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা বার বার বলা হলেও যাত্রাবাড়ীতে এসবের বালাই নেই।
বিক্রেতাদের অধিকাংশের মুখেই মাস্ক নেই। ক্রেতাদের অবস্থা তথৈবচ। কারও কারও মুখে মাস্ক থাকলেও তা সঠিকভাবে পরিধান করা হয়নি। থুতনির নিচে বা কানের পাশে ঝুলে আছে। হৈচৈ চিৎকার চেঁচামেচিতে সরব বাজার দেখে বিন্দুমাত্র বোঝার উপায় নেই দেশে করোনাভাইরাস নামক কোনো মহামারি চলছে।
সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় ৮৩ জনের মৃত্যু হলেও এর কোনো প্রভাব নেই বাজারে। অসংখ্য ক্রেতা-বিক্রেতা যারা স্বাস্থ্যবিধিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাদের সচেতন বা বাধ্য করতে কোনো সরকারি সংস্থা কিংবা বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবক প্রতিষ্ঠানের কাউকে চোখে পড়েনি।
হারুন মিয়া নামে এক মুরগি বিক্রেতা আলাপকালে জানালেন, করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ভয় তারও আছে। তবে ছয় সদস্যের পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতে প্রতিদিন সকালে ফেরি করে মুরগি বিক্রি করেন তিনি। মাস্ক সঙ্গে রাখলেও ক্রেতার সঙ্গে দরদাম করায় ব্যস্ত থাকাতে পরতে ভুলে গেছেন।
যাত্রাবাড়ীতে একজন পুলিশ সদস্যকে ৪০ টাকা কেজি দরে কাঁচামরিচ কিনতে দেখা যায়। তার মুখের মাস্ক থুতনিতে নামানো। মুখে মাস্ক নেই কেন জিজ্ঞাসা করতেই তিনি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বললেন, ‘এই মাত্রই নামিয়েছি।’
শনিরআখড়া আন্ডারপাসের দুপাশেই রাস্তা দখল করে বিশাল বাজার। ক্রেতা-বিক্রেতার বেশ ভিড়ে হাঁটা যায় না। চলতে হয় ধাক্কাধাক্কি করে। বাজারে অধিকাংশের মুখেই মাস্ক নেই। এ নিয়ে তাদের কারও কোনো মাথাব্যাথাও নেই।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) এক জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান এখন দুটি, বাজার এবং গণপরিবহন। দেশে এখন পর্যন্ত যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের বড় অংশই হয় বাজারে গেছেন, নয়তো গণপরিবহন ব্যবহার করেছেন।
এদিকে গত নয়দিনের লকডাউনের মতো বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে শুরু হওয়া লকডাউন ‘গা ছাড়া’ হবে না বলে জানিয়েছেন সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল মন্ত্রী।
তারা বলেছেন, আগামীকাল থেকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করতে পারবেন না। যারা একান্ত জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হবেন তাদের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ ‘মুভমেন্ট পাস’ ইস্যু করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।