Inqilab Logo

রোববার ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১, ৩০ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

হেফাজতে ইসলামের সাম্প্রতিক কর্মকান্ড ও বিতর্কিত মামুনুল হক ইস্যুতে বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামিক পার্টীর গোলটেবিল বৈঠক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ এপ্রিল, ২০২১, ৪:০৭ পিএম

স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর তিনটি ম্যুরাল, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে থাকার দু’দিনব্যাপী উন্নয়ন মেলার প্যান্ডেল, একই চত্বরে থাকা শহর সমাজসেবা প্রকল্পের অফিস, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের অফিস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা কার্যালয়, পৌর মেয়রের বাসভবন, সুরসম্রাট আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যালয়, ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব, বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ব্যক্তিগত অফিস, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, জেলা মৎস্য অফিস, সার্কিট হাউজ, জেলা পরিষদ কার্যালয় ও ডাকবাংলো, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব, খাঁটি হাতা হাইওয়ে থানা ভবন, সুরসম্রাট আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গন, মাতৃ সদন, সদর উপজেলা ভূমি অফিস, সরকারি গণগ্রন্থাগার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারের বাসভবন, তার শ্বশুরের বাড়ি, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ কালীবাড়ি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির বাসভবন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসভবন, আশুগঞ্জ টোলপ্লাজা, আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু নাছেরের বাসভবন, বিজয়সনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বাসভবন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়সহ প্রায় অর্ধশতাধিক সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) রাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন থানায় মোট ৪৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় এজাহারনামীয় ২৮৮ জন ও অজ্ঞাতনামাসহ ৩৫ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার হন ১৬ জন। এ নিয়ে এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৫৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

পুলিশ জানায়, ৪৯টির মধ্যে সদর মডেল থানায় ৪৩টি, আশুগঞ্জ থানায় ৩টি, সরাইল থানায় ২টি এবং আখাউড়া রেলওয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে সদর মডেল থানায় ৩টি মামলা দায়ের করা হয়।

 

যদিও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের কোনো নেতাকর্মী তাণ্ডব চালায়নি বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা সাজিদুর রহমান। হরতাল চলাকালে ভাঙচুর ও হত্যাকাণ্ডেরও নিন্দা জানান তিনি।

 

তাছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে তাণ্ডবের সময় এক পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ২০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার সুহিলপুর বাজারের একটি মিষ্টির দোকান থেকে গুলিগুলো উদ্ধার করে পুলিশ। গুলি খোয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দু'জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

 

এমতাবস্থায় সরকারের সাথে কোন প্রকার সংলাপের উদ্যোগ না নিয়ে হেফাজতে ইসলাম কেবল মাত্র প্রতিশোধ পরায়নতার খাতিরে যেই অগ্নিসংযোগ চালায় তা নিঃসন্দেহে সাধারণ জনগণের জানমালের নিরাপত্তার উপর হুমকি স্বরূপ এবং দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার জন্য যথেষ্ট।

 

বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার এবং সরকারের প্রশাসন মুসলমানদের প্রতি যথেষ্ট সংবেদনশীল এবং অধিকার আদায়ে সচেষ্ট। তবুও হেফাজত ইসলামের মত এত বড় একটি অরাজনৈতিক দল যখন কোন প্রকার সমঝোতা বা সংলাপের প্রয়াস ছাড়াই সংঘাতের পথে পা বাড়ায় সেটা দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি আমার জন্য যথেষ্ট। হেফাজতে ইসলাম এবং সরকারের দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা এবং পারস্পরিক সৌহার্দ্য বোধ এর অভাবে মোদি বিরোধী আন্দোলন এবং এর পরবর্তী ইস্যুতে ২৬ টি তাজা প্রাণ ঝরে যায়। তার সাথে জাতীয় সম্পদের শতকোটি টাকার অধিক ক্ষয় ক্ষতি হয়। সে কারণে উভয় পক্ষই জনগণের কাছে দায়বদ্ধ এবং প্রত্যেক সচেতন নাগরিক তাদের থেকে যথাসময়ে জবাবদিহিতা আদায় করে ছাড়বে কেননা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এ জাতি স্বাধীন হয়েছে এবং এ জাতিকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না।



 

Show all comments
  • Tareq+Sabur ১২ এপ্রিল, ২০২১, ৪:৫৫ পিএম says : 0
    এরা কোথা থেকে নামল আবার?
    Total Reply(0) Reply
  • Jack+Ali ১২ এপ্রিল, ২০২১, ৫:২৫ পিএম says : 0
    আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি সমগ্র বিশ্ব ও মহাবিশ্বের মধ্যবর্তী প্রতিটি জিনিসের মালিক .. প্রতিটি জিনিসই মানুষ ও জিনস ব্যতীত আল্লাহর ইবাদত করে, আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এবং জিনদের কেবল তাঁরই ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছেন, আইন করেছেন [কোরআন] যা আমাদের প্রিয় নবী [সা।] খুব সরল পদ্ধতিতে দেখিয়েছেন যাতে এটি বুঝতে পারে। আমাদের দেশ মুসলিম দ্বারা জনবহুল যেমন আমাদের দেশে আল্লাহর আইন দ্বারা শাসিত হওয়া উচিত তবে আমাদের দেশটি ইসলামফোবি শাসক দ্বারা শাসিত হয় যেমন সমস্ত অপরাধ / নিপীড়ন / হত্যা / মানুষ অদৃশ্য হয়ে যায় এবং তারা কখনও তাদের পরিবারে ফিরে আসে না, ধর্ষণ / অন্যায় / ঘুষ / শাসকের দল চাদবাজ হ'ল আমাদের প্রিয় দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি, আমাদের কঠোর উপার্জিত অর্থ লুট করে বিদেশে প্রেরণ, নির্দোষ লোকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের, চাদবাজ তারা জোর করে জনগণের সম্পত্তি দখল করে এবং আরও অনেক কিছু তারা আমাদের বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধ করছে যা আমরা যদি এটি তালিকাভুক্ত করি তবে এটি বড় বই হবে। যদি আমাদের দেশ কোরআন দ্বারা শাসিত হয় তবে আমাদের উপরের অমানবিক অপরাধের মুখোমুখি হতে হবে না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বৈঠক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ