Inqilab Logo

বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টি হবে না প্রিন্স ফিলিপের

করোনা সতর্কতা ও অনুরোধ প্রদর্শন করা হবে না লাশও

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০০ এএম

ডিউক অফ এডিনবার্গ প্রিন্স ফিলিপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পরিকল্পনা বেশ কয়েক বছর ধরে অপারেশন ফোরথ ব্রিজ কোড নামে আধ্যাত্মিকভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রিন্স ফিলিপের ব্যক্তিগত অনুরোধেই রাষ্ট্রের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া বা কোনও রাজ্যে জনসাধারণের উপস্থিতি থাকবে না, বরং এর পরিবর্তে রাজকীয় অন্ত্যেষ্টি হিসাবে পরিচিত সরকারিভাবে একটি মূল অনুষ্ঠান হবে। এ ঘোষণার পরে রানী এমআই ৫-এর প্রাক্তন প্রধান মিনস্মিরের ব্যারন পার্কার যিনি মাসের শুরুতে এই ভ‚মিকা গ্রহণ করেন, লর্ড চেম্বারলাইনকে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পরিকল্পনার বিবরণে তার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মূল পরিকল্পনার আওতায় হাজার হাজার লোক তার শেষকৃত্যের দিনে ফিলিপের কফিনের সামরিক শোভাযাত্রার জন্য লন্ডন এবং উইন্ডসর যাবেন বলে আশা করা হত।
সশস্ত্র বাহিনীর কয়েকশো সদস্যকে ডিউকের সম্মানে রাস্তার পাশে দাঁড় করানো হত, পাশাপাশি শত শত পুলিশ কর্মকর্তাকে ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও রাজপরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণ নিরাপদ করতে নিয়োগ দেয়া হত। তবে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের মধ্যে এখনো বিধিনিষেধের কারণে রানির স্বামীকে চ‚ড়ান্ত বিদায় দেওয়ার সরকারি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। একটি সূত্র বলেছিল যে, জনসমাবেশকে আকৃষ্ট করে এমন কোনো মঞ্চ না সাজাতে আয়োজকরা মরিয়া ছিলেন।
মহামারী শুরুর পর থেকেই পরিকল্পনাকারীরা সঙ্কটের সময় ডিউকের মৃত্যু ঘটলে একটি জরুরি কৌশল অবলম্বনের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। লন্ডনে সামরিক শোভাযাত্রা বা উইন্ডসর দিয়ে কোনো মিছিল না করেই প্রস্তুতিগুলো উইন্ডসর ক্যাসেলকে কেন্দ্র করে সম্পন্নের আশা করা হয়। ইংল্যান্ডে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পর্কিত বর্তমান বিধিগুলোর অর্থ কেবলমাত্র সর্বোচ্চ ৩০ জন উপস্থিত থাকতে পারে এবং তারা যদি একসাথে থাকে বা কোনো ভাগ না করে তবে তাদের সামাজিকভাবে দূরত্ব আবশ্যক।
এদিকে প্রিন্স ফিলিপের মৃত্যুর পর থেকেই বাকিংহাম রাজপ্রাসাদের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। ডিউকের শেষকৃত্য হওয়ার পরদিন সকাল আটটা পর্যন্ত সব সরকারি ভবনে পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ডিউকের জীবনের প্রতিটি বছরের স্মরণে গত শুক্রবার ওয়েস্টমিনস্টার গির্জায় বিশাল ঘণ্টায় প্রতি ৬০ সেকেন্ড পর পর ৯৯ বার ঘণ্টাধ্বনি করা হয়েছে। বহু মানুষ বাকিংহাম প্রাসাদের ফটকে এবং উইন্ডসর প্রাসাদের বাইরে ফুল রেখে প্রিন্স ফিলিপের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন। তবে সরকার মহামারির কারণে মানুষজনকে কোথাও জড়ো হতে বা পুষ্পস্তবক না দিতে অনুরোধ করেছে। রাজপরিবারের পক্ষ থেকেও জনসাধারণকে অনুরোধ জানানো হয়েছে ফুল দেবার বদলে ডিউকের স্মরণে দাতব্য প্রতিষ্ঠানে সেই অর্থ দান করার জন্য।
প্রিন্স ফিলিপ শারীরিক অসুস্থতার কারণে লন্ডনের কিং এডওয়ার্ড হাসাপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এ বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি। পরে লন্ডনে হৃদরোগের জন্য বিশেষ হাসপাতাল সেন্ট বার্থলোমিউ হাসপাতালে তার পুরনো হৃদযন্ত্রের সমস্যার কারণে তার সফল অস্ত্রোপচারও হয়েছিল।
এক মাস চিকিৎসার পর ১৬ মার্চ তিনি উইন্ডসর কাসেলে ফিরে যান। সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শুক্রবার সকালে।
রানির তিন পুত্র ‘বিধ্বস্ত’ মাকে সান্ত¡না জানাতে ছুটে আসেন
প্রিন্স ফিলিপের আকস্মিক মৃত্যুর পরে তার পাশে থাকা তিন পুত্র রানী এলিজাবেথকে সান্ত্বনা দিয়েছেন। ছেলেরা দ্রুত সেখানে আসার আগেই তিনি মারা গিয়েছিলেন। এসময় উইন্ডসর ক্যাসলে শুধু তার স্ত্রী এবং অল্প ক’জন কর্মচারী ছিল বলে মনে করা হয়। প্রিন্স অ্যান্ড্রু প্রথম রানী সান্ত¡না দিতে ছুটে আসেন। এরপর তার সাথে যোগ দেন অ্যাডওয়ার্ড এবং তারপরে চার্লস। সকাল দশটার দিকে পুলিশি তৎপরতার পর, উইন্ডসর এস্টেটের রয়্যাল লজের নিকটে বসবাস করা অ্যান্ড্রু মাত্র পাঁচ মিনিট পর এলিজাবেথের ব্যক্তিগত অ্যাপার্টমেন্টে পিছনের পথে প্রবেশ করেন। সকাল ১১.১৫ নাগাদ পরিবারের আরও একজন সদস্য সম্ভবত এডওয়ার্ড মায়ের পাশে এসে দাঁড়ান। প্রিন্স চার্লস, তার গেøৗচেস্টারশায়ার এস্টেট হাইগ্রোভ থেকে দীর্ঘ যাত্রার পর শুক্রবার বিকেলে উইন্ডসরে পৌঁছেছিলেন।
চার্লস এবং ফিলিপের সবসময়ই সবচেয়ে স্বচ্ছ সম্পর্ক ছিল না, তবে ডেইলি মেলের একটি সূত্র জানিয়েছে যে, স¤প্রতি নিয়মিত যোগাযোগ করা হয়েছিল বলে সবচেয়ে বড় ছেলে ‘সান্ত¡না পেয়েছিলেন’ এবং ‘যা বলা দরকার তা বলেছিলেন’। সূত্র : ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ড, মিরর ও বিবিসি বাংলা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ