Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইউক্রেন নিয়ে কি বাজবে যুদ্ধ দামামা

মার্কিন মিত্ররাই আর্কটিক অঞ্চলে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে : রাশিয়া

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০৩ এএম

রাশিয়া বলেছে, আর্কটিক অঞ্চলে সেদেশের তৎপরতা অন্য কোনও দেশের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে না। কিন্তু প্রাকৃতিক সম্পদ সমৃদ্ধ এ অঞ্চলে উস্কানিমূলক সামরিক তৎপরতা চালিয়ে আমেরিকাই প্রকৃতপক্ষে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা শুক্রবার মস্কোয় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন। রাশিয়া আর্কটিক সাগরে ‘অপ্রত্যাশিত সামরিক তৎপরতা’ চালাচ্ছে বলে আমেরিকা যে অভিযোগ করেছে তার প্রতিক্রিয়া জানান জাখারোভা। তিনি বলেন, “রাশিয়া আর্কটিকে এমন কোনও কাজ করছে না যা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে কিংবা কোনও দেশের জন্য হুমকি সৃষ্টি করে। যদি এ অঞ্চলে কোনও কারণে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েই থাকে তবে সেজন্য আমেরিকা ও তার মিত্রদের উস্কানিমূলক সামরিক তৎপরতা দায়ী।” রাশিয়ার এই মুখপাত্র বলেন, “ন্যাটো ও তার সদস্য দেশগুলো এমনকি আর্কটিক অঞ্চলের বাইরের দেশগুলো এখানে উস্কানি সৃষ্টি করছে এবং বিষয়টি ক্রমাগত বেড়ে চলেছে।” এর আগে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি গত সোমবার বলেন, আর্কটিক অঞ্চলে রাশিয়ার গতিবিধি পেন্টাগন ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তার বক্তব্যে ওই অঞ্চলে রুশ উপস্থিতি নিয়ে আমেরিকার ক্ষোভ প্রকাশ পায়। কিরবি আরো বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একথা উপলব্ধি করছে যে, আর্কটিক প্রতিযোগিতা বিস্তারের একটি নাজুক অঞ্চলে পরিণত হচ্ছে। আমেরিকা আর্কটিকে নিজের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করবে বলেও কিরবি হুমকি দেন। অপরদিকে, ইউক্রেন ঘিরে প্রস্তুত রাশিয়া। সীমান্তের চারপাশে তারা মোতায়েন করেছে সেনাবাহিনী, ট্যাঙ্ক, ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার। এর আগেই ইউক্রেনে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের হুমকি দিয়েছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার এমন আগ্রাসী অবস্থানের কারণে যুক্তরাষ্ট্র কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলে দুটি যুদ্ধজাহাজ পাঠাচ্ছে। বোসফোরাস হয়ে ১৪ এবং ১৫ই এপ্রিল তা ওই অঞ্চলে পৌঁছে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়াদখল করে নেয়ার পর এবারই প্রথম ইউক্রেন সীমান্তে সবচেয়ে বেশি শক্তি বৃদ্ধি করেছেন পুতিন। এরই মধ্যে যেসব ফুটেজ প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে ক্রিমিয়াও বিরোধপ‚র্ণ ডোনবাস অঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে ট্যাংক, ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ট্রাক ও ছোট আকারের কামান। ডোনবাসের ঠিক পূর্বদিকে ভোরোনেজ এবং ক্রাসনোদার প্রদেশে রাশিয়া নতুন নতুন অস্ত্র ও গোলাবারুদ দিয়ে ভরে ফেলেছে বলে দেখা যাচ্ছে স্যাটেলাইট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ছবিতে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দমিত্রি পেসকভ বলেছেন, প‚র্ব ইউক্রেনের পরিস্থিতি অত্যন্ত স্থিতিশীল রয়েছে। তবে উত্তেজনা ছড়ালে সেখানে প‚র্ণোদ্যমে যুদ্ধ শুরুর ঝুঁকি আছে বলে সতর্ক করেন তিনি। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলছেন, তার এই কর্মকান্ড একান্তই আত্মরক্ষার জন্য। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তার এ কর্মকান্ডে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইউক্রেনে সংঘাত শুরুর পর থেকে সীমান্তে রাশিয়ার বিশালাকায় সামরিক উপস্থিতিতে এমন উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র। এমন উত্তেজনার মধ্যে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সশস্ত্র অবস্থায় এবং হেলমেট পরে বৃহস্পতিবার ফ্রন্টলাইন সফর করেন। পুতিনের এক শীর্ষ উপদেষ্টা শুক্রবার সতর্ক করেছেন এই বলে যে, ওই অঞ্চলে রাশিয়ার নাগরিকদের ওপর কিয়েভ যদি কোনো হামলা করে তাহলে সেটাই হবে ইউক্রেন পতনের সূচনা। রাশিয়ার প্রেসিডেন্সিয়াল এডমিনিস্ট্রেশনের উপপ্রধান দমিত্রি কোজাক বলেছেন, এক্ষেত্রে মস্কো আগে কোনো হামলা চালাবে না। কিন্তু কিয়েভ যদি কোনো হামলা করে, তাহলে তার জবাব দেবে মস্কো। এক্ষেত্রে মস্কো পায়ে নয়, মুখের ওপর গুলি মারবে। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা রাশিয়ার এই আগ্রাসনকে সামনে রেখে কৃষ্ণ সাগরে দুটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করবে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন তুরস্কের কাছ থেকে বোসফোরাসের ভিতর দিয়ে এই যুদ্ধজাহাজ পরিচালনার জন্য অনুমোদন নিয়েছে তুরস্কের কাছ থেকে। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ ১৪ এবং ১৫ই এপ্রিল সঙ্কীর্ণ বোসফোরাস প্রণালী দিয়ে অতিক্রম করবে। এই প্রণালী নিয়ন্ত্রণ আঙ্কারার হাতে। তাই ১৫ দিন আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে তুরস্কের অনুমতি চায়। যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর জাহাজের এমন উপস্থিতি মস্কোর মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। আরটি, তাস, বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ