Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মক্কা ও মদীনার মসজিদে ইতেকাফ-ইফতার বন্ধ

আমিরাতের স্কুলে রমজানে ক্লাস হবে ৫ ঘণ্টা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০২ এএম

আসন্ন রমজান মাসে মক্কা শরীফের মসজিদুল হারাম ও মদীনায় মসজিদে নববীতে ইতেকাফ ও দস্তরখান বিছিয়ে ইফতার আয়োজন বন্ধ থাকবে। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারীর বিস্তার রোধে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দু’টি পবিত্র মসজিদ বিষয়ক প্রেসিডেন্সির প্রধান শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস।
তিনি বলেন, দু’টি মসজিদে আগত ব্যক্তিদের জন্য মক্কার আমিরের সহযোগিতায় প্রেসিডেন্সির পক্ষ থেকে ইফতারের জন্য আলাদা খাবার সরবরাহের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মসজিদে নববীর উঠোন এবং প্রাঙ্গণে দর্শনার্থী, মুসল্লি ও অন্যদের মধ্যে সুহুর (পূর্বের খাবার) বিতরণ নিষিদ্ধ থাকবে।

তিনি বলেন, মুসল্লিরা শুধুমাত্র নিজের ইফতারের জন্য পানি ও খেজুর নিয়ে মসজিদুল হারামে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে মুসল্লিদের মাঝে ইফতার বিতরণ করতে পারবেন না। এমনকি দস্তরখান বিছিয়ে ইফতারের আয়োজন করা যাবে না।

জমজম পানির স্বাভাবির সরবরাহ বন্ধ থাকবে, তবে প্রতিদিন স্বেচ্ছাসেবীরা ২ লাখ বোতল জমজম পানি মুসল্লিদের মাঝে বিতরণ করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। মাত্রাতিরিক্ত ভিড় এড়াতে প্রতিদিন ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী দুই মসজিদে দায়িত্ব পালন করবেন। শায়খ আস-সুদাইস গত রোববার আসন্ন রমজানের জন্য প্রেসিডেন্সির পরিকল্পনা সংক্রান্ত বার্ষিক মিডিয়া বৈঠকে এসব কথা বলেন।
ওমরাহত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য রমজান পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হ’ল মহামারী রোধের লক্ষ্যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা মেনে চলা, ‘যার মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে ভ্যাকসিন গ্রহণ। এছাড়াও রয়েছে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং মাস্ক পরা’।

শায়খ আস-সুদাইস ওমরাহযাত্রী ও মুসল্লিদের গ্রহণের জন্য প্রেসিডেন্সির সম্পূর্ণ প্রস্তুতি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘মাতাফ (পবিত্র কাবার চারপাশের প্রদক্ষিণ অঞ্চল) কেবল ওমরাহযাত্রীদের জন্য নির্ধারিত করা হবে এবং গ্র্যান্ড মসজিদ এবং এর পূর্ব অঙ্গনের পাঁচটি মনোনীত অঞ্চল থাকবে নামাজের জন্য’। ওমরাহ পালনকারীরা দ্বিতীয় তলাতেও তাওয়াফ করতে পারবেন বলে ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্সি প্রধান।
তিনি বলেন, ‘গ্র্যান্ড মসজিদে কর্মরত দোভাষীরা বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেবেন এবং ২৩টি ভাষায় ফতোয়া (ধর্মীয় নির্দেশ) প্রদান করবেন’। ‘শুক্রবারের খুতবায় সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ দোভাষীও থাকবেন- তিনি ইঙ্গিত করেন। শায়খ আস-সুদাইস বলেন, গ্র্যান্ড মসজিদের পূর্ব অংশে আজইয়াদ ব্রিজ এবং কিং ফাহাদ গেটের সামনে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের ইবাদাতের জন্য বিশেষ স্থান এবং শৌচাগার থাকবে।

উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে পুনরায় ওমরাহ চালু হবার পর থেকে ১ কোটি ৩০ লাখ মাস্ক পরিহিত মুসল্লি মসজিদুল হারামে ওমরাহ পালনের সুযোগ পেয়েছেন। সূত্র : সউদী গেজেট ও আরব নিউজ।

আরব আমিরাতে ক্লাস হবে ৫ ঘণ্টা
এদিকে খালিজ টাইমস জানিয়েছে, দুবাইয়ের বেসরকারী স্কুলগুলো পবিত্র রমজান মাসে পাঁচ ঘণ্টার বেশি ক্লাস করবে না। নলেজ অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএইচডিএ)-এর পারমিটস অ্যান্ড কমপ্লায়েন্সের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) মোহাম্মদ দারবিশ বলেছেন, ‘দুবাইয়ের বেসরকারী স্কুল রমজানে পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত ক্লাস করতে পারে। আমরা বিদ্যালয়গুলোকে তাদের শুরু এবং শেষ সময়টি অভিভাবকদের সাথে পরামর্শ করে বেছে নেয়ার অপশন দিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, ‘রমজানের সময় শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবকসহ স্কুল কমিউনিটি তাদের পরিবারের সাথে ইবাদাতে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করবে। আমরা প্রতিষ্ঠানগুলোকে শিক্ষার্থীদের জন্য হোমওয়ার্ক এবং অ্যাসাইনমেন্ট সম্পর্কে সচেতন হওয়ার আহŸান জানিয়েছি। প্রতি রমজানে আমরা ধৈর্য, একাত্মতা, সহানুভ‚তি এবং অভ্যন্তরীণ শক্তির গুণাবলী অনুশীলন করি এবং এই পবিত্র মাসে আমাদের আগের চেয়ে আরো বেশি এসব গুণ অর্জন করতে হবে’।

আবুধাবিতে, বেসরকারী স্কুলগুলোও রমজান মাসে তাদের স্কুলের সময়সীমা কমিয়ে পাঁচ ঘণ্টা করে দেবে বলে ঘোষণা করেছে আবু ধাবি শিক্ষা ও জ্ঞান বিভাগ (এডিইকে)। এডিইকে জানিয়েছে, তারা স্কুলগুলোকে রমজানের সময় সম্পর্কিত একটি গাইডলাইন প্রেরণ করেছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘স্কুল সকাল সাড়ে নয়টার আগে শুরু হতে পারে না এবং অবশ্যই তার আগের দিন বা বিকাল সাড়ে তিনটায় শেষ হতে হবে’।
এতে যোগ করা হয়েছে, ‘প্রতিটি বিদ্যালয় এ সময়ের মধ্যে মূল বিষয়গুলোর সম্পূর্ণ সিলেবাস কভার করবে এবং উপযুক্ত সময়সূচি নির্বাচনের সময় অভিভাবকের সাথে পরামর্শ করবে বলে আশা করা হচ্ছে’। গত রোববার থেকে শুরু হওয়া এবং এপ্রিল ৮ অবধি চলমান বসন্তকালীন ছুটি থেকে শিক্ষার্থীরা ফিরে আসার সাথে সাথে স্কুলে রমজানের সময় কার্যকর হবে।

শারজাহ প্রাইভেট এডুকেশন অথরিটি (এসপিইএ) স¤প্রতি আদেশ দিয়েছে যে, পবিত্র মাসের সময়কালে বিদ্যালয়ের সময়কাল পাঁচ ঘণ্টার বেশি চলবে না। শারজাহের প্রাইভেট স্কুলগুলো এসপিইএর নির্দেশনার সাথে মিল রেখে রমজান মাসে হোমওয়ার্ক এবং পরীক্ষার একটি বোঝা হ্রাস করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এসপিইএর পরিচালক আলী আল হোসানী জানিয়েছেন, শারজায় সকাল ৯টা থেকে ক্লাস শুরু হবে এবং তিন থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। ছাত্রদের গ্রেড এবং তাদের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে সময় নির্ধারণ করা হবে, তিনি যোগ করেন।

আল হোসানী বলেন, এসপিইএ জাতীয় জরুরি অবস্থা সঙ্কট ও দুর্যোগ পরিচালনা কর্তৃপক্ষের (এনসিইএমএ) শারজাহ ইউনিটের সাথে মিল রেখে কাজ করে। তিনি আরো জানান, কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের মধ্যে শিক্ষার্থী এবং সমাজের সদস্যদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।



 

Show all comments
  • Masum Shikder ৩১ মার্চ, ২০২১, ২:৪৩ এএম says : 0
    সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত, স্বাগত জানাচ্ছি।
    Total Reply(0) Reply
  • আবুতালেব মন্ডল ৩১ মার্চ, ২০২১, ৭:৩০ এএম says : 0
    মুসলীম জাতির জন্য দুর্ভাগ্য । মুসলীম জাতি গুরুতর নাফার মানিতে লিপ্ত থাকার কারনেই আল্লাহ হারামাইনের ফজিলত থেকে বঞ্চিত হওয়া হচ্ছে।
    Total Reply(0) Reply
  • ম নাছিরউদ্দীন শাহ ৩১ মার্চ, ২০২১, ১:৪৩ পিএম says : 0
    যেখানে অহরহ রহমতের স্রোতের প্রবাহ প্রতি মুহুর্তের জন‍্যে বিদ্ধমান চলমান অব‍্যাহত আছে থাকবেন। হেরাম পবিত্র নিষিদ্ধ স্থান যেখানের পবিত্রতা ওনিরাপত্তাব্যবস্থার দায়িত্ব মহান আল্লাহর কাছে। সেই মহান আল্লাহর হানায়ে কাবা শরিফ ও মদিনা মোবারক এবং আল্লাহরঘরশতভাগ নিশ্চিত নিরাপদ সমস্ত কিছু হতে পবিত্র মুক্ত। পৃথিবীতে আল্লাহর ঘরের মর্যাদা সম্মান ইজ্জত বিশ্বের মুসলমানদের জন্যেই নিজের জীবন মাল সম্পদ হতেও বেশী। কাবা ও শরিফ মদিনা মোবারকের মাঝেই রাতদিন কান্নাকাটির মাধ্যমে ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে ইতাকাফের মাধ্যমে বিশ্বে আল্লাহর গজব আজাব হতে পরিত্রান পেতে আল্লাহর জালালিয়াতের থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র পথআল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করা জরুরী । কেন আমরা বঞ্চিত হচ্ছি বিশ্বের মুসলমানরা বঞ্চিত হচ্ছে কেন?? মুসলমানদের নৈতিকতা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঈমান আকিদা দুর্ভাগ্যজনক জনক ভাবে দুর্ভল। এখন বিধর্মীদের বিভিন্ন কৌশলের মাঝেপড়ে গিয়েছে মুসলিম বিশ্ব। শয়তান কুমন্ত্রণাদাতা জেনে ঐ শয়তানের দল মুসলমানদের বন্ধু হয়ে গেছেন। কিয়ামতের আখেরাতের আলামত প্রকাশ হচ্ছে জেনেও হুুশ নেই আমাদের কেন?? ঈমান আকিদা বাচানো কঠিন হচ্ছে। সামনে ভয়াবহ কঠিন পথ গজবে এলাহীর মাঝে পড়েছে পৃথিবী শান্তি শৃংখলার মাঝে নেই। ক্ষুদ্র অতিক্ষুদ্র জীবনের জন্যে নৈতিকতা হারা ঈমানহারা হয়ে যাচ্ছি।অপুরান্ত আখেরাতের নাজ নিয়ামত ভুলে গেছি। ভয়ংকর কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হয়েও জেনেও বুঝেও অদৃশ্য শক্তির টানে হুুশ নেই আমাদের। জলজেন্ত সাতাশ লক্ষ মানুষ ভাইরাসের কারণে মৃত্যু আর কত লক্ষ মৃত্যু হবে জানিনা। ভাইরাসের গজবের মৃত্যুর লিষ্টে কার কার নাম লিপিবদ্ধ আছে জানিনা। আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন দয়া করুন রক্ষাকরুন। আল্লাহ আপনার পবিত্র বায়তুল্লার মাঝে পবিত্রতা নিরাপত্তা অহরহ বিদ‍্যমান আছেন। রহমতের স্রোতধারা প্রবাহমান আছেন। নিশ্চিতরূপে পবিত্র নিরাপদ আছেন এই পরম সত‍্যটুকু ঈমানী আকিদা মাঝে বিশ্বাস নিয়ে শাসক গোষ্ঠীর মাঝে হেদায়েতের মাধ্যম প্রতিষ্টিত করুন। আমিন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ