বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, সরকার অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে মানুষ হত্যা করতে দ্বিধা করছে না। নিজেদের ক্ষমতার কাছে মানুষের জানমালের কোন মূল্য নেই। তিনি বলেন, সারাদেশে অসংখ্য মানুষ হত্যা এবং শত শত মানুষের রক্ত ঝরিয়ে সরকারের আখের রক্ষা হবে না। তিনি বলেন, সারাদেশে হরতাল পালনকালে নিরীহ মাদরাসার ছাত্র ও তৌহিদী জনতার উপর সরকার দলীয় গুন্ডা-মাস্তান এবং রাষ্ট্রের কর্মচারি পুলিশ-বিজিবি নির্বিচারে গুলি করে বি-বাড়ীয়ায় এপর্যন্ত ১১জন, হাটহাজারীতে ৪জনকে শহীদ করে সরকার রক্তের নেশায় মেতে উঠেছে। পুলিশ বিজিবি মাফিয়াদের রক্ষা করতে সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে। জনগণ রাজপথে নেমে এসেছে, রক্তের বদলা না নেয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরবে না।
আজ রোববার বেলা ১২টা থেকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আহুত হরতালের সমর্থনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নেতাকর্মীরা নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীমের নেতৃত্বে পিকেটিং করেন। এ সময় পল্টন মোড়, বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট, দৈনিকবাংলা এলাকা তৌহিদী জনতার ¯্রােত নামে। পিকেটিংশেষে বায়তুল মোকাররম উত্তর চত্ত্বরে এক সমাবেশে মিলিত হন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা নেছার উদ্দিন, উত্তর সেক্রেটারী মাওলানা আরিফুল ইসলাম, ছাত্রনেতা শেখ মুহাম্মদ আলআমিন।
মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, বয়োবৃদ্ধ আলেমেদীন মাওলানা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুরকে পুলিশ গুলি করে আহত করে প্রমাণ করেছে এরা হিং¯্র হায়েনা। এদের কাছে দেশের কেউই নিরাপদ নয়। সমাবেশে ঘোষিত ৬ দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানানো হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, চট্টগ্রামের হাটহাজারী এবং বি-বাড়িয়ায় যে সব পুলিশ মিছিলে গুলি চালিয়ে হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তাদেরকে বরখাস্তÍ করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, হাটহাজারী থানার ওসিকে দ্রুত চাকুরী থেকে বরখাস্ত করতে হবে, প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপুরণ এবং আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে, মোদি বিরোধী আন্দোলনে যারা গ্রেফতার হয়েছেন, তাদের দ্রুত মুক্তি দিতে হবে এবং হয়রানিমূলক সকল মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরকারদলীয় যে সব গুন্ডাবাহিনী সাধারণ মুসল্লীদের ওপর আক্রমন করেছে, অপমান-অপদস্ত করেছে, তাদেরকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং সারা দেশে সকল মানুষের সভা-সমাবেশ, মিছিল মিটিং এবং প্রতিবাদ প্রকাশের সংবিধানিক ও মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। কর্মসূচী : আগামী ১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাব সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ।
মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বিক্ষোভরত জনতার ওপরে সরকর দলীয় বাহিনী ও পুলিশের সম্মিলিত হামলা ও গুলি করে মানুষ হত্যা করা স্বধীনতার মর্মকে আহত করেছে। ৭১-এর ২৬ মার্চের হানাদার বাহিনী যেভাবে আন্দোলনরত বাঙ্গালী জাতির উপরে নৃসংভাবে হামলা চালিয়ে ছিলো তেমনি গতকালও নিরস্ত্র নিরীহ জনতার উপরে হামলা করা হয়েছিলো। এধরণেল হামলা একটি সভ্য দেশে কারো কাম্য নয়। তিনি অবিলম্বে হামলা-মামলা, গ্রেফতার বন্ধ এবং দলীয় সন্ত্রাস, মাস্তান-গুন্ডাদের নিবৃত করে দেশের সম্প্রীতি বজায় রাখার দাবি জানান।
হরতাল সফল করায় দেশবাসীকে পীর সাহেব চরমোনাই’র অভিনন্দন : হরতাল সফল করায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই দেশবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন ও মোবারকবাদ জানিয়ে বলেছেন, আজকের স্বত:স্ফূত জনতার হরতাল প্রমাণ করেছে এ সরকার ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছে। তিনি জনগণের সেন্টিমেন্টের প্রতি সম্মান জানিয়ে জনদাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানান। অন্যথায় দেশময় যেভাবে শান্তিকামী জনগণ রাস্তায় নেমে এসেছে সরকারের আখের রক্ষা হবে না। তিনি সারাদেশে গুম, হত্যা ও নৈরাজ্যের রাজনীতির পথ পরিহার করে ইসলাম, দেশ ও মানবতার কল্যাণে সকলকে কাজ করার আহ্বান জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।