পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গতকাল বুধবারও গ্যাস ছিল না রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। গ্যাস না থাকায় রান্না করতে হচ্ছে স্টোভের চুলায়। আবার গ্যাস না থাকায় অনেকই প্রাইভেটকারে চলাচল করতে পারেনি সব মিলে ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ। আবার হঠাৎ করেই কমে গেছে এলএনজি সরবরাহ। এতে রাজধানীর প্রায় সব এলাকায় কম বেশি গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। কোথাও একেবারে গ্যা নেই, কোথাও চুলা জ্বললেও চাপ এত কম যে রান্না করার উপায় নেই। বাসা-বাড়িতে রান্না করতে না পারায় চরম বিপাকে পড়েছে অনেক মানুষ হোটেলের খাবার কিনে খাচ্ছে। এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন গ্যাস পাম্পগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে গ্যাসবাহি গাড়ি ও সিএনজি চলছে না।
গত সোমবার রাতে আমিনবাজারে রাস্তা মেরামত করতে গিয়ে তিতাসের সিটি গেটের গ্যাসের পাইপলাইন ফুটো করে ফেলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এতে রাজধানীর ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর এবং মিরপুর এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। রাতে মেরামতের কাজ শুরু করলে গত মঙ্গলবার সারা দিনের পর রাত থেকে অল্প অল্প করে গ্যাস আসতে শুরু করে। গতকাল বুধবার সকাল থেকে আবারও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আবারও গ্যাসের সংকট তৈরি হয়েছে। গতকাল সন্ধা পর্যন্ত মেরামতের কাজ শেষ করতে পারেনি তারা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে গ্যাস ঘাটতি বলে তিতাসের একটি সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এ বিষয়ে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী ইকবাল নুরুল্লহ ফোনে ইনকিলাবকে বলেন, আমরা মেরামতের কাজ মোটামুটি শেষ করে গ্যাস সরবরাহ শুরু করেছিলাম কিন্তু এরমধ্যে আবার এলএনজি সঙ্কটে কমে গেছে সরবরাহ। সরবরাহ না বাড়লে আমাদের হাতে কিছু নেই। গরমের কারণে বেড়ে গেছে চাহিদাও।
এদিকে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ সাভারের আমিন বাজারে কাজ করার সময় তিতাসের ফিডার লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গতকাল তাৎক্ষণিকভাবে গ্যাস শাটডাউন (বন্ধ) করে দেয়া হয়েছিল। সেখানকার কাজ এখনো শেষ হয়নি। ফলে গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক করা যাচ্ছে না। এখানে আরো সময় লাগবে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (অপাশেন) গাজীপুরের প্রকৌশলী রেদওয়ান বলেন, আমাদের টিম সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সবকিছু পজিটিভ থাকলে সন্ধ্যার মধ্যে গ্যাস সরবরাহ ঠিক হতে পারে। তবে রাতে না হলে আজ বৃহস্পতিবার সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে।
তিতাস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে গ্যাসের চাহিদা গড়ে প্রায় ৩৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট। চাহিদার তুলনায় আগে থেকে সরবরাহ করা হয় গড়ে ২৯০০ মিলিয়নের মতো। আগের ঘাটতিই ৬০০ মিলিয়নের মতো। মঙ্গলবার এলএনজির সরবরাহ ছিল ৬৪০ তা কমে গিয়ে হয়েছে ৫৭০ মিলিয়ন ঘনফুট। ফলে ৬০০ মিলিয়ন ঘাটতির সঙ্গে আরো প্রায় ৭০ মিলিয়ন যুক্ত হওয়ায় পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
এলএনজি সরবরাহের বিষয়ে জানতে চাইলে এলএনজি সেলের এক কর্মকর্তা ইনকিলাবকে জানান, আমাদের সরবরাহ কিছুটা কমেছে। এখন গড়ে ৬০০ মিলিয়নের মতো আমরা সরবরাহ করতে পারছি। আগামী পরশু থেকে সরবরাহ বাড়বে। ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো সরবরাহ করতে পারব বলে আশা করছি আমরা।
এদিকে রাজধানীর কলাবাগান, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, টোলারবাগ, গ্রিনরোড কলাবাগান এলাকায় গতকাল থেকেই গ্যাস সরবরাহ বিঘিœত হয়েছে। অন্য এলাকাগুলোতেও গ্যাসের স্বল্প চাপ রয়েছে, যা দিয়ে রান্নার কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওইসব এলাকার বাসিন্দারা। রান্না করতে হলে অবলম্বন করতে হচ্ছে ভিন্ন উপায়ের।
রাজধানীর আগারগাও এলাকার শিক্ষক খাদিজা বেগম বলেন, গতকাল সারাদিন গ্যাস ছিল না। সে কারণে রান্না হয়নি। হোটেল থেকে খাবার কিনতে গেলে সেখানেও অতিরিক্ত ভিড়। অনেক হোটেলের খাবারও শেষ হয়ে গিয়েছিল। এ বিষয়ে তিতাসের হেল্প লাইনে কল করা হলে, তারাও সঠিকভাবে কিছু বলতে পারছে না। ধানমন্ডির বাসিন্দা পারভিন সুলতানা জানান, রাতে গ্যাস আসলেও টিমটিম করেই গ্যাস জ্বলছে। রান্না করা যাচ্ছে না। বাইরে থেকেই খাবার এনে খেতে হচ্ছে।
মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা জামাল হোসেন জানান, গ্যাস তো এসেছে, কিন্তু তা দিয়ে রান্না হয় না। সকালে ১০টার পর সেই গ্যাসও চলে গেছে। ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা ফাতেমা বলেন, কালকে কেরোসিনের চুলায় রান্না করে কাজ চালিয়েছি। এখন গ্যাস আছে, কিন্তু দেয়াশলাই দিয়ে চুলা ধরাতে তিন-চারটা কাঠি যাচ্ছে। গ্যাস নাই বললেই চলে। বাধ্য হয়ে আজও কেরোসিনের চুলায় রান্না করছি। মিরপুরের রূপনরগরে বাসিন্দার শাহিন আলম জানান, মঙ্গলবার একেবারেই গ্যাস ছিল না। এখন আগুন জ্বলে তবে টিম টিম করে। যাতে রান্না করা সম্ভব নয়।
রাজধানীর বসিলা এলাকা প্রাইভেটকারের মালিক কামাল হোসেন বলেন, দুই দিন থেকে গাড়িতে গ্যাস নিতে পারছে না। সে কারণে গাড়ি চলাচল বন্ধ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।