বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
যশোরে বাড়ছে কিশোর অপরাধ। পর পর কয়েকটি ঘটনায় তা প্রমাণিত। পুলিশ ঘটনাগুলোর তদন্তে তৎপর। কিন্তু কুল কিনারা মিলছে না। একসময় সশস্ত্র বিপ্লব ও গোপন রাজনীতির নামে সীমান্তবর্তী যশোরের আন্ডারওয়ার্ল্ড ছিল উত্তপ্ত। অস্ত্রবাজ চরমপন্থী ও সন্ত্রাসীরা মাটি কাঁপিয়ে বেড়াতো। জড়াতো খুনোখুনিতে। রুদ্ধশ্বাস আতংক ও ভয়ভীতি সৃষ্টি করে অস্ত্রবাজরা করতো অর্থ বাণিজ্য। সেই অধ্যায়ের ইতি ঘটেছে।
রোববার রাতে মোবাইলে গেমস খেলা নিয়ে বিরোধের জের হিসেবে সহপাঠীর হাতে কিশোর রাকিবুল ইসলাম (১৫) খুনের ঘটনা, শুক্রবার (১৯ মার্চ) যশোর সদর উপজেলার ছোট হৈবতপুর গ্রামে পাঁচ বছরের এক মেয়ে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে ১১ বছরের এক কিশোরের বিরুদ্ধে। নির্যাতিত মেয়েটিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যশোরের মণিরামপুরে হাত, পা ও মুখ চেপে ধরে পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তিন শিশুর বিরুদ্ধে। শনিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে উপজেলার পলাশী পশ্চিমপাড়ায় ঘটনাটি ঘটে। খেলার কথা বলে ডেকে নিয়ে বাড়ির পাশে একটি বাগানে শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়।
অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, তুচ্ছ বিরোধকে কেন্দ্র করে ভয়ঙ্কর অপরাধ ঘটাতে বুক কাঁপছে না কিশোর অপরাধীদের। মাদকের ভয়াবহতায় কিশোর গ্যাং কালচারের প্রবনতা বাড়ছে। সৃষ্টি হচ্ছে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তাজুল ইসলাম সোমবার জানান, যশোরে কিশোর হত্যাকান্ডের ঘটনায় আমরা গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছি। ¯্রফে মোবাইল গেমস খেলা নিয়ে না এর পেছনে অন্য কোন ঘটনা আছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পিবিআই এর এক কর্মকর্তা বিভিন্ন মামলার তদন্তের অভিজ্ঞতায় বলেন, অভিভাবকদের কেয়ারলেস, আগের মতো পাড়া মহল্লার মুরব্বী ও বড় ভাইদের শাসন না থাকা, শিশু-কিশোরদের হাতে মোবাইল ও অসৎসঙ্গসহ নানা কারণে শিশু কিশোরসহ উঠতি বয়সের ছেলেরা বেপথে ধাবিত হচ্ছে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন শিকদার দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, পুলিশ ব্যাপক তৎপর কিশোর অপরাধ দমনে। জেলার কোথাও যাতে তারা মাথাচাড়া দিতে না পারে তার জন্য পুলিশ কঠোর অবস্থানে।
যশোর সরকারী এম এম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগি অধ্যাপক কামরুল এনাম আহমেদ জানান, পরিবার এবং নৈতিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভগ্নপ্রায় অবস্থায়। নাবিক ছাড়া জাহাজের মতো অবস্থা। কোন গাইড লাইন নেই। সামাজিক অবক্ষয় মারাত্মক পর্যায়ে। পারিবারিক নিয়ন্ত্রণ প্রায় বিলীন হওয়ার পথে যে কারণে ভয়ঙ্কর অপরাধের দিকে ধাবিত হচ্ছে যুব সমাজ। যে কোন তর্ক বিতর্ক বিরোধ সর্বোচ্চ আহত হওয়ার পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকতো হত্যাকান্ডে রূপ নিতো না। তিনি বলেন, টিনএইজের ছেলেদের হাতে স্মার্ট ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকতে হবে। মোবাইলে ভালো এবং মন্দ দুটোই থাকে। উঠতি বয়সের ছেলেরা মন্দটার দিকে ঝুঁকে পড়ছে। তার পরামর্শ, পরিবার, পাড়া মহল্লায় পাস্পরিক সৌহার্দ্যরে মেলবন্ধন সৃষ্টি করতে হবে। সমাজকে সঠিকভাবে টিকিয়ে রাখতে কাটাতে হবে সামাজিক অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।