পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ফিলিস্তিনি সাঈদ আলইয়ান আওয়াদ স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে নিজের জমির দিকে যাচ্ছিলেন। পথে অবৈধ বসতিতে তাদের ওপর চড়াও হয় ১০ ইসরাইলি দখলদার। দক্ষিণ হেবরনের ইয়াত্তা শহরের পূর্বে আওয়াদের জমি। প্রতি শনিবারই নিজেদের জমি দেখতে যেতে হয় তাদের। ইসরাইলিরা যাতে তাদের জমি দখল করে নিয়ে যেতে না পারে, তা সুরক্ষার জন্যই এই সতর্কমূলক ব্যবস্থা।
লোহার পাইপ দিয়ে এক দখলদার আঘাত করলে তার মাথা ফেটে যায়, চোয়াল ভেঙে যায়। গেল ১০ মার্চের ঘটনা এটি। তার স্ত্রীও পায়ে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। ভয়ে আওয়াদের সন্তান ও ভাতিজারা চিৎকার করতে থাকলে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি হয়। দখলদাররা পাথর নিক্ষেপ করে তাদের গাড়ির সামনের কাচ ভেঙে দিয়ে যায়। ৪৯ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি বলেন, সাত মিনিট ধরে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমার মুখমন্ডল থেকে রক্ত ঝরছিল। কয়েক মিনিটের জন্য আমি অজ্ঞান ছিলাম। তিনি আরও বলেন, আমার বাঁ চোয়াল আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। মুখের ক্ষত সারতেও চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
আশপাশের ফিলিস্তিনিরাও তাদের ওপর হামলা চালাতে দেখেছেন। দৃশ্যপট থেকে দখলদাররা সরে গেলে ইসরাইলি সেনাবাহিনী সেখানে চলে আসে। হামলাকারীদের সেনাবাহিনী দেখলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
আওয়াদ বলেন, সেনাবাহিনীর উচিত ছিল হামলাকারীদের গ্রেফতার করা। কিন্তু তারা তা করেনি। যদিও তারা আমাকে হামলা চালিয়ে হত্যা করতে চেয়েছে। ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালাতে সংঘবদ্ধ দখলদার ইসরাইলিরা অধিকৃত পশ্চিমতীরে ঘুরে বেড়ায়। ইসরাইলি মানবাধিকার গোষ্ঠী বি’টিসেলাম বলছে, ২০২০ সালের ২১ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ১৩ মার্চ পর্যন্ত নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর সহিংস দখলদারেরা ৯৪টি হামলা চালিয়েছে।
এটাকে নজিরবিহীন ঘটনা বলে উল্লেখ করে তারা জানায়, হামলা বন্ধে ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনী কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ নিয়ে অভিযোগ করে লাভ নেই। কারণ হামলাকারীদের শাস্তি না দিয়েই মামলা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। ফিলিস্তিনি কৃষকরা মাঠে কাজ করতে গেলে হামলার শিকার হচ্ছেন। মেষ পালকরাও তাদের পশু দেখাশোনা করতে গেলে অবৈধ ইসরাইলিরা অহরহ তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে।
৪৪ বছর বয়সী ইজ্জ আল-দ্বীন বলেন, গত মাসে ক্ষেতে কাজ করতে যাওয়ার সময় আমাকে এবং আমার বাবাকে মারধর করে ইহুদিরা। দুই দখলদার আশপাশের গাড়ির আড়ালে লুকিয়ে ছিল। আমরা চলে আসতেই তারা হামলা চালায়। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানায়, অধিকৃত পশ্চিমতীরের দখলদারদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার, আটক কিংবা তদন্তের ক্ষমতা তাদের নেই। এটা কেবল ইসরাইলি পুলিশের এখতিয়ার।
মানবাধিকার গোষ্ঠী ইয়েশ দিনের গবেষক মুনির কাদুস বলেন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক দখলদারদের সহিংসতার ঘটনা নজিরবিহীন। অধিকৃত পশ্চিমতীরে আড়াইশটি অবৈধ বসতিতে পাঁচ লাখের মতো দখলদার ইহুদি বসবাস করছে। সূত্র : আলজাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।