চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
লোভ লালসা আত্মার একটি মারাত্মক ব্যধি। লোভ লালসা মানুষকে অন্যায় - অবিচার মারামারি রাহাজানি ঝগড়াঝাটি ও অন্যান্য পাপাচারের দিকে ধাবিত করে।লোভ মানুষের বিবেককে নষ্ট করে দেয়। ধ্বংস করে দেয় সামাজিক জীবন। ফলে হুমকি হয়ে দাড়ায় সামাজিক জীবনে লোভাতুর ব্যক্তির সাথে উঠবসা করা। এমন কী লোভাতুর ব্যক্তির ইহকালীন ও পরকালীন জীবন লোভের কারণে মাটির সাথে মিশে ধূলিসাৎ এর মত হয়ে যায়। লোভ একটি নৈতিক ক্রটি। লোভ মানুষের জীবন অধপতনের দিকে ঠেলে দেয় । লোভাতুর ব্যক্তির কারণে সামাজে ও দেশে বিভিন্ন রকমের ফেতনা ও হাঙ্গামা সৃষ্টি হয়।
লোভ লালসার কিছু ক্ষতি হলো নিম্নরূপ লোভি ব্যক্তি কখনো মানুষের নিকট প্রিয় হতে পারে না।লোভি ব্যক্তি থেকে সবাই দূরে থাকে।কেননা লোভি ব্যক্তি হালাল - হারামের মাঝে তেমন একটা তফাৎ করে চলতে পারে না। কোন কাজে সে সফল হতে পারে না। অল্পতে সে কখনো তৃপ্ত হতে পারে না।যত অর্জন করে তার থেকে দ্বিগুণ সে কামনা করে। লোভ এটি অন্তরের একটি অন্যতম ব্যধি বেশি খাওয়ার লোভ বা বেশি পাওয়ার লোভ অথবা প্রসিদ্ধি কামনার লোভ ইত্যাদি। শরীরের ব্যধির ন্যায় আত্মারো ব্যধি আছে।শরীরের চিকিৎসা করা সুন্নাত। আর আত্মার চিকিৎসা করা ফরজ।আত্মা যদি সঠিক পথে পরিচালিত না হয় তাহলে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ হওয়া ছাড়া বিকল্প কোন উপায় নাই।তাই উচিৎ হলো আত্মার চিকিৎসার দিকে গুরুত্বারোপ করা।
পবিত্র কুরআনের সুরা তাকাসুরের মধ্যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়া’লা এরশাদ করেন প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদেরকে মহাচ্ছন্ন করে রাখে যতক্ষণ না তোমরা কবরের সাক্ষাৎ করবে। (আত-তাকাসুর, ১০২/১-২)। যদি আদম সন্তানকে স্বর্ণে ভরা একটি উপত্যকা পরিমাণ ধন-সম্পদ দেয়া হয়, তবুও সে দ্বিতীয় উপত্যকার জন্য লোভে লোভাতুর থাকবে আর যদি তাকে দ্বিতীয়টি দেয়া হয়। তাহলেও সে তৃতীয় উপত্যকা পাওয়ার জন্য লোভে লোভাতুর থাকবে। আদম সন্তানের পেট মাটি ছাড়া আর কিছুতেই ভরবে না। তবে যে তাওবা করবে আল্লাহ তার তাওবাহ কবুল করবেন। (সহীহুল বুখারী: ৬৪৩৮)
বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের সম্পদের লোভ প্রচন্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে রাসুল (সা.) এরশাদ করেন আদম সন্তানের বয়স বাড়ে আর তার সাথে দুটো জিনিসের আঙ্খাকা বাড়ে; ১. ধন-সম্পদের ভালবাসা ও ২. দীর্ঘায়ু কামনা। (সহীহুল বুখারী: ৩৪৬৪)। লোভ লালসা থেকে প্রত্যেক মুসলমাকে দূরে থাকতে হবে।লোভের কারণে অনেক মানুষের সুন্দর জীবনও ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংস হয়ে গেছে উপার্জিত ধন সম্পদ। হারিয়ে ফেলেছেন কোটি টাকা দিয়ে কেনা সখের গাড়ি বাড়ি। সামান্য পরিমাণ লোভের অনুকরণ অনুসরণ করার দরুন এই বিপর্যয় পরিস্থিতির শিকার হতে হলো।
এথেকে শিক্ষা নিতে হবে সকল মুসলমানদের আজ লোভের কারণে পৃথিবীতে মানুষ অবিরত রক্তপাত ঘটাচ্ছে। মানুষের কাছে মানুষের সামান্য দাম নেই ।লোভের তাড়নায় মানুষকে কচুকাটার ন্যায় মাঠে ঘাটে মানুষকে মানুষ ছুড়ি দিয়ে আঘাত করছে। লোভের কারণে মানুষ মানুষকে হত্যা করে।আপন সহদোর ভাইকেও কুপিয়ে জখম করতে মানুষ এখন দ্বিধা বোধ করে না।এমন কী দুর্বল ব্যক্তির মালেও অন্যায় ভাবে ভাগ বসিয়ে দেয়।উপরোক্ত বিষয় গুলোর মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারলাম লোভ কত জগন্য কাজ। এখানেই কী কথার ইতি গঠলো। আসলেই না। লোভের কারণে হারাতে হলো সুস্থ বিবেকের আলোকিত প্রতিভার সমাজ বিনির্মাণের সমৃদ্ধশীল চিন্তা চেতনা। উর্বর মস্তিষ্কের স্থলে হয়ে গেলো অনুর্বর বিবেক। বিকৃত চিন্তার কিছু ধূসর মরীচিকার রূপ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।