Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তৃতীয় ঢেউয়ের মুখে ইইউ

করোনা বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জার্মানিতে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০২১, ১২:০১ এএম

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর দিকে ধীরে ধীরে আঘাত হানতে যাচ্ছে করোনার তৃতীয় দফা ঢেউ। এই অঞ্চলের অধিকাংশ দেশে করোনার টিকা দেওয়ার প্রচারণা চালানোর মধ্যেই সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করেছে। দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারির পর ইউরোপীয় ইউনিয়নে এখন সংক্রমণের হার সর্বোচ্চ। এর জন্য করোনার নতুন রূপটিকে দায়ী করা হচ্ছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কয়েকটি দেশ নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করতে যাচ্ছে। এবারের লকডাউনে কড়াকড়ি বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। ইতালিতে শুক্রবার নতুন করে ২৭ হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে। একই দিন মারা গেছেন ৩৮০ জন আক্রান্ত। প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি বলেছেন, ‘জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি দেখা দেওয়ার এক বছরেরও বেশি সময় পর দুর্ভাগ্যবশত আমরা সংক্রমণের নতুন ঢেউয়ের মুখোমুখি। গত বসন্তে যা ঘটেছিল তা স্মরণীয়ভাবে স্পষ্ট এবং এটি আবার যাতে আবার না ঘটে সেজন্য আমরা সব কিছু করব।’ সোমবার থেকে ইতালির অধিকাংশ এলাকায় লকডাউন কার্যকর হয়। কেবলমাত্র জরুরি প্রয়োজনে বাসিন্দাদের বাড়ির বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ফ্রান্সের পরিস্থিতিও অনেকটা ইতালির মতো। বিশেষ করে প্যারিসের পরিস্থিতি অনেক বেশি উদ্বেগজনক বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলিভার ভেরান। তিনি বলেছেন, ‘দিনে-রাতে প্রতি ১২ মিনিটে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে প্যারিসের এক জন করে বাসিন্দাকে ভর্তি করা হচ্ছে।’ প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রন বেশ কয়েকটি অঞ্চলে কারফিউ ও অন্যান্য সামাজিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন। অনেক চিকিৎসকই প্রেসিডেন্টকে জরুরি ভিত্তিতে জাতীয় লকডাউন ঘোষণার জন্য চাপ দিচ্ছেন এখন। জার্মানিতে শনিবার নতুন করে ১২ হাজার ৬৭৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। গত সপ্তাহে দেশটিতে দৈনন্দিন সংক্রমণ ছিল গড়ে তিন হাজার। সংক্রামক রোগ সংস্থা জানিয়েছে, দেশ এখন কোভিড-১৯ এর তৃতীয় ঢেউয়ের মুখে। একই অবস্থা পোল্যান্ডে। গত বুধবার দেশটিতে ১৭ হাজার ২৬০ জনের সংক্রমণের তথ্য জানানো হয়েছিল। সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহে কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে। জার্মানিতে করোনা বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করেছে কয়েক হাজার মানুষ। ড্রেসডেনে পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে। আরেকটি শহরে সাংবাদিকদের ওপরও হামলার ঘটনা ঘটেছে। জার্মানির প‚র্ব অঞ্চলের শহর ড্রেসডেনে ১২ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ডানপন্থী ক্যোয়ারডেনকেন এর সদস্যরাও ছিল, যারা করোনার অস্তিত্বই অস্বীকার করে। একইসঙ্গে তারা টিকাবিরোধী হিসেবেও পরিচিত। ড্রেসডেন শহরে প্রায় এক হাজার মানুষ প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন। তাদের র‌্যালিতে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি সহিংস আচরণের মতো ৪৭টি আইন ভঙ্গের ঘটনা ঘটেছে। ৩৬ বছর বয়সী একজনকে সাময়িকভাবে আটক করা হয়েছে। আরও তিন জনকে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে অপরাধম‚লক আচরণের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজধানী বার্লিনেও হাজারখানেক মানুষ প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন। তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সামনে জড়ো হন। এ সময় স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিধি না মানায় ৫০ জনকে বাধা দেয় পুলিশ। সেখানে করোনার নিয়মকানুন বজায় রাখার পক্ষে পাল্টা বিক্ষোভ করেছেন অনেকে। দক্ষিণের শহর স্টুটগার্টে ৭৫০ জনের বেশি প্রতিবাদে অংশ নেন। তাদের অনেকেরই মুখে ছিল না মাস্ক, মানেননি সামাজিক দ‚রত্ব। এ সময় তারা সেøাগান দেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে।’ স্টুটগার্টে বিক্ষোভকারীদের আক্রমণের শিকার হয়েছেন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন স¤প্রচার মাধ্যমে এসভেআরএর সাংবাদিকরা। তবে কেউ আহত হননি। সাংবাদিকদের একটি ইউনিয়ন এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। মিউনিখে আড়াই হাজার আন্দোলনকারী বাভারিয়া রাজ্যের পার্লামেন্টের সামনে জড়ো হয়। গার্ডিয়ান, ডিডবিøউ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জার্মানি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ