Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উত্তাল পুনর্ভবা এখন বালুচর

নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০২১, ১২:০১ এএম

এক সময়ের উত্তাল পুনর্ভবা নদী নাব্য হারিয়ে এখন বালুচরে পরিণত হয়েছে। সীমান্তবর্তী উপজেলা পোরশার নিতপুর ইউপির পাশ দিয়ে প্রবাহিত। এ নদীতে এক সময় ঢেউয়ের তালে চলাচল করতো অসংখ্য পাল তোলা নৌকা, লঞ্চ, স্টিমার। ভাটিয়ালী ও পল্লিগীতি গানের সুরে মাঝিরা নৌকা নিয়ে ছুটে চলতো চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, গোমস্তাপুর, রহনপুর, নাচোলসহ বিভিন্ন উপজেলার ব্যবসা কেন্দ্রগুলোতে।

উপজেলা গুলোর বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা বড়বড় হাট-বাজার গুলোতে ব্যবসার জন্য মাঝিমাল্লা তাদের ছোট-বড় নৌকায় পাল তুলে ধান, পাট, আলু, বেগুন, সরিষা, কালাই, গমসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ব্যবসায়ীরা ছুটে চলতেন। শুধু পণ্যই নয় হাটবাজারে বিক্রির জন্য তারা নিয়ে যেতেন গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি। সে সময় নদীটি ছিল পূর্ণ যৌবনা। নদীটিকে যোগাযোগের মাধ্যম করে অসংখ্য ব্যবসায়ী ব্যবসা বাণিজ্যের মাধ্যমে তাদের জীবন জীবিকার শক্ত ভীত প্রতিষ্ঠা করেছিল। শুধু একাধিক হাটবাজার নয়। এ নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল অনেক জনপদ। আর নদীর পানি দিয়ে কৃষকরা দুই পাড়ের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে ধানসহ সবুজ ফসল ফলাতো। প্রকৃতির অফুরন্ত পানিতে নানা ফসলে ভরে উঠতো নদীর দুই ধারের ফসলের ক্ষেত। ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছেরও অফুরন্ত উৎস ছিল এই পূর্ণভবা। মাছ পাওয়া যেত সারা বছর ধরে। জীবিকা নির্বাহের জন্য জেলেরা রাতদিন ডিঙি নৌকায় জাল নিয়ে চষে বেড়াতো মাছ ধরার জন্য। সে সুবাদে জীবিকার সন্ধানে নদী সংলগ্ন পাশের গ্রামে অসংখ্য জেলে পরিবারের বসতি গড়ে উঠেছিল।

বর্তমানে জেলে পরিবার নেই বললেই চলে। সময় গড়িয়ে চলার সাথে সাথে সেই ভরা যৌবনা পুনর্ভবা এখন বালুচরে পরিণত হয়েছে। দুই ধারের পাড় গুলো হয়েছে কৃষি জমি। জেলে পরিবার গুলো হয়ে গেছে প্রায় বিলীন। আর সে সময়ের ব্যবসা বণিজ্যের কেন্দ্রগুলো হয়ে গেছে চিরতরে বন্ধ। থমকে গেছে নদী। নিভে গেছে বিপুল সম্ভবনা জাগানো বিভিন্ন কর্মকান্ড। নদী কেন্দ্রীক সম্ভবনা নিয়ে ভাবেনি কেউ। নদীটি কখনও খনন বা ড্রেজিং করা হয়নি। খনন না করার ফলে নদীটি ফসলের জমিতে পরিণত হয়েছে। এ সুযোগে অনেকেই ধান চাষ করছেন। এভাবে চলতে থাকলে এক সময়ের উত্তাল পুনর্ভবা মানচিত্র থেকেই বিলীন হয়ে যাবে বলে অনেকে মনে করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হামিদ রেজা জানান, বর্তমান সরকার বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় নদী খননের লক্ষ্যে জরিপ কাজ করছেন। এরই অংশ হিসাবে সরকারের জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের একটি প্রতিনিধিদল পুনর্ভবা খননের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে জরিপ করেছেন। হয়তোবা দেশের অন্যান্য এলাকার নদীগুলোর সাথে পুনর্ভবারও খনন কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ