Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আমেরিকার সালভিয়া চাষ হচ্ছে ঝিনাইদহে

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০২১, ৬:২২ পিএম

আমেরিকার ঔষধি ও পুষ্টি গুন সম্পন্ন সুপার ফুড হিসেবে খ্যাত সালভিয়া হিসপানিকা প্রচলিত নাম চিয়া চাষ হচ্ছে এখন ঝিনাইদহে। হরিণাকুন্ডু উপজেলার শিতলী গ্রামে ডাঃ রাজিবুল ইসলাম নামে এক ইউনানী চিকিৎসক ২৯ শতক জমিতে এ বছর পরীক্ষামুলক ভাবে চিয়া চাষ করে সফলতা পেয়েছেন।

হরিণাকুন্ডু অঞ্চলের মাটিতে চিয়ার বাম্পার ফলন কৃষকদের মাঝে এক নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। চিকিৎসক রাজিবের ক্ষেতে চিয়া চাষ এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে। অনেক কৃষক এই চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন বলে জানান রাজিব।

ঝিনাইদহ সংবাদদাতা জানান, আমেরিকা ও মেক্সিকোসহ বিভিন্ন দেশে চিয়া একটি ঔষধি ফসল হিসেবে চাষ হয়। এর বৈজ্ঞনিক নাম সালভিয়া হিসপানিকা। ২০১৭ সালে দিনাজপুর সদর উপজেলার সুন্দরবন গ্রামে চিয়া’র প্রথম চাষ শুরু করেন কৃষক নুরুল আমিন। ডাঃ রাজিবুল অনুপ্রাণিত হয়ে চিয়া চাষ শুরু করেন।

মরুভূমিতে জন্মানো সালভিয়া হিসপানিকা উদ্ভিদের বীজ হচ্ছে চিয়া সিড বা বীজ। যার আদি জন্মস্থান সেন্ট্রাল আমেরিকা। সেখানকার প্রাচীন আদিবাসীরা খাদ্য তালিকায় থাকা চিয়া বীজকে অত্যন্ত মূল্যবান মনে করেন। তারা বিশ্বাস করেন এটা তাদের শক্তি ও সাহস জোগাবে।

সব ধরনের আবহাওয়ায় জন্মানো চিয়া বীজ দেখতে সাদা ও কালো রঙের তিলের মতো ছোট সাইজের হয়ে থাকে। অনেকেই চিয়া বীজকে তোকমা বলে ভুল করে থাকেন। দেখতে প্রায় একই রকম হলেও জন্মস্থান, পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্যগত দিক থেকে রয়েছে কিছু পার্থক্য। চিয়া সাধারণত তিন মাসের ফসল। অক্টোবর মাসে বীজ রোপন করতে হয়। ৩৩ শতকের বিঘায় মাত্র তিন’শ গ্রাম বীজ লাগে। চাষ পদ্ধতিও খুব সহজ।

হরিণাকুন্ডু উপজেলা কৃষি অফিসার হাফিজ হাসান জানান, ঔষুধি গুন থাকায় চিয়া একটি লাভজনক চাষ। হরিণাকুন্ডুর শিতলী গ্রামের রাজিবুল ও চাঁদপুরের জিল্লুর রহমান এই চাষ শুরু করেছেন। আমাদের দেশের আবহওয়া ও মাটি চিয়া চাষের জন্য উপযোগী।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের ইউনানী মেডিকেল অফিসার ডাঃ আসমাউল হুসনা জানান, সুপার ফুড হিসেবে খ্যাত চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, কোয়েরসেটিন, কেম্পফেরল, ক্লোরোজেনিক এবং ক্যাফিক এসিড নামক এন্টিঅক্সিডেন্ট। রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, দ্রবনীয় এবং অদ্রবণীয় আঁশ। তিনি জানান, এক আউন্স চিয়া বীজে রয়েছে প্রায় ৬ গ্রাম প্রোটিন, ৮.৫ গ্রাম ফ্যাট, ১১ গ্রাম ফাইবার, ১৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট (যার মধ্যে ১১ গ্রাম হল ফাইবার)। দৈনিক এক আউন্স চিয়া বীজ খেলে ১৮% ক্যালশিয়ামের চাহিদা, ২৭% ফসফরাসের চাহিদা এবং ৩০% ম্যাঙ্গানিজের চাহিদা পূরণ হতে পারে।

বর্তমানে চিয়া সিড শুধু ওজন কমানোর জন্য বা ডায়েটের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে না। নিরপেক্ষ স্বাদের কারণে চিয়া সিড সব ধরনের খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ার উপযুক্ত। জানা যায়, দেহের শক্তি ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরো শক্তিশালী, ওজন কমানো, বøাড সুগার স্বাভাবিক রাখা, হাড়ের ক্ষয়রোধ, প্রচুর পরিমানে ফাইবার সমৃদ্ধ চিয়া মলাশয় পরিষ্কার রাখে ফলে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।



 

Show all comments
  • আসিফ ই ১২ মার্চ, ২০২১, ৮:১৯ পিএম says : 0
    এধরনের ব্যতিক্রমধর্মী খবরগুলো আমরা পড়তে চাই
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঝিনাইদহ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ