বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কুষ্টিয়ার হরিপুরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে শ্বশুর বাড়িতে আত্মীয়র আঘাতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে আনসার আলী (৭০) নামক এক ব্যক্তির।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়ার হরিপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এম সম্পা মাহমুদের পরিবারে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। গত ১৯ফেব্রুয়ারী বিকেলে বিরোধ চলাকালে আত্মীয়দের আঘাতের কারণে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে জামাই আনসার আলীকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ভর্তি করে। সেখানে সেবা দেওয়ার একপর্যায়ে অবস্থার অবনতি হলে হলে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বেশ কিছু দিন চিকিৎসা নেওয়ার পরে অবস্থার উন্নতি না হলে পরিবারের সিদ্ধান্তে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার নিউরোসাইন্স হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেও তার অবস্থার উন্নতি না হলে পুনরায় তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে এনে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। ০৫ জানুয়ারী সকাল আনুমানিক ১১ ঘটিকার সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনসার আলী মৃত্যুবরণ করেন।
নিহতের ছেলের দাবী, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ এর জেরে হরিপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এম সম্পা মাহমুদের যোগসাজশ ও উপস্থিতিতে তার খালা মিলি, বেলি ও খালাতো ভাই মাহিন তার বাবার উপর আঘাত করে এবং মাহিন তার বাবার মাথার ডানপাশে লোহার তালা দিয়ে সজোরে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার বাবা মারাত্মক আহত হলে তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে, রাজশাহী মেডিক্যাল, ঢাকার নিউরোসাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হলেও তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। উন্নতি ঘটাতে ব্যর্থ হয়ে তাকে কুষ্টিয়া এনে জেনারেল হাসপাতালে পুনরায় ভর্তি করি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আমার বাবার মৃত্যুর জন্য এম সম্পা মাহমুদ, খালা মিলি ও বেলি এবং খালাতো ভাই মাহিন দায়ী। তিনি তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেন।
নিহতের এক শ্যালিকার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার বাবার বাড়ী হরিপুর ইউনিয়নের শালদাহ গ্রামে। আমার বাবার মৃত্যুর আগে আমাদের পৈত্রিক বাড়ি মায়ের নামে রেজিস্ট্রি করে দিয়ে যান। হঠাৎ কিছু দিন পূর্বে আমরা জানতে পারি, আমাদের অজান্তে আমার মাকে দিয়ে জোর করে আমাদের পৈত্রিক বাড়ি রেজিস্ট্রি করে নিয়েছে আমার বোন নিলুফা হোসেন বেলি ও সম্পা মাহমুদ। বিষয়টির সত্যতা পাওয়ার পর আমরা মহামান্য আদালতে পৈত্রিক ভিটা ফিরিয়ে নিতে একটি মামলাও করেছি। যেই মামলাটি এখনও চলমান। আর এই মামলা সংক্রান্ত সকল বিষয়াবলী দেখাশুনার দায়িত্ব ছিল আমাদের আনসার দুলাভাইয়ের। এই কারণেই আমার দুলাভাইকে মেরে ফেলা হয়েছে। হরিপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এম সম্পা মাহমুদের উপস্থিতিতে আমার বোন মিলি, বেলি ও ভাগ্নে মাহিন তাকে মারধর করে। মাহিন তাকে লোহার তালা দিয়ে মাথায় আঘাত করলে সে গুরুতর আহত হয়। তাকে আমরা কুষ্টিয়া, রাজশাহী, ঢাকা বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করিয়েছি কিন্তু কোন লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এ ব্যাপারে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম সম্পা মাহমুদের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এটি একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। আসছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমাকে হেও প্রতিপন্ন করার জন্য তারা এই গুজব ছড়াচ্ছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো: শওকত কবির বলেন, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত চলমান। নিহতের পোস্টমর্টেম করা হয়েছে। রিপোর্ট আসার পরে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।