Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

উচ্ছ্বাস উদ্বেগ ক্ষোভ

বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয় খুলছে স্কুল-কলেজ প্রাথমিকের চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কি অসচেতন? রমজানে ক্লাস অমানবিক নির্যাতন : মার্চে না খুলে রমজানে কেন? প্রশ্ন অভিভাবকদের : ঝরে পড়া

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

প্রাণঘাতি মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় একবছর ধরে বন্ধ রয়েছে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ সময় পরে আগামী ৩০ মার্চ প্রাক-প্রাথমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরুর ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সরকারের এই ঘোষণায় একদিকে যেমন উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা, অন্যদিকে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভের। বিশেষ করে রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছে না বেশিরভাগ অভিভাবক। তারা মনে করেন, রোযার সময় মায়েদের সেহরি-ইফতারিা প্রস্তুতি, শিক্ষার্থীদের রোযা রাখা, তীব্র ট্রাফিকের মধ্যে স্কুলে ছুটে যাওয়া সকলের প্রতি অমানবিক নির্যাতন। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটি ঈদের পর পর্যন্ত বাড়িয়ে স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তটি মেনে নিতে পারছেন না উচ্চ শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, করোনার কারণে এমনিতেই দেড় থেকে দুই বছরের সেশন জটে পড়েছেন তারা। অনেকেই স্নাতক শেষ বর্ষে থেকে দুই-তিনটি পরীক্ষা না হওয়ার কারণে চাকরির পরীক্ষায় আবেদন করতে পারছেন না। কারো কারো চাকরির বয়সও শেষের দিকে। এই অবস্থায় স্কুল-কলেজ খুলে দেয়াকে মেনে নিতে পারছেন না তারা। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া করোনার প্রকোপে অনেক অভিভাবকের চাকরি চলে যাওয়া, আয় কমে যায়, ব্যবসা বন্ধ হওয়ার কারণে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হারও আশঙ্কাজনক। রাজধানীর নামিদামি কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া বেশিরভাগই জানিয়েছে অভিভাবদের সাথে যোগাযোগ করেও অনেক শিক্ষার্থীকে তারা এবার ভর্তি করাতে পারেননি। স্কুল-কলেজ খুললে বা ক্লাস শুরু হলে তারা আবারও ফিরে আসতে চাইলে টিউশন ফি, ভর্তি ফি নিয়ে নতুন করে বিড়ম্বনা-ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন অভিভাবকরা। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম রনি জানান, করোনার কারণে অভিভাবকরা ৯ মাস টিউশন ফি দিতে পারেনি। এছাড়া নতুন শ্রেণিতেও ভর্তি হতে টাকা লাগবে। এ কারণে অনেক অভিভাবকই তার সন্তানকে ভর্তি করাননি। তিনি জানান, হাতে গোনা কিছু নামি প্রতিষ্ঠান ছাড়া সারা দেশের চিত্র এটি। স্কুল খুললে তারা হয়তো আবার ক্লাসরুমে ফিরতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে বাড়তে পারে বিক্ষোভ: ক্লাস-পরীক্ষা না হওয়ায় দীর্ঘ সেশনজটে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বছরের শুরুতে পরীক্ষার সূচি প্রকাশ করেছিল কিন্তু সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে এসব পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণার পর উদ্বেগ, হতাশায় বাধ্য হয়ে পরীক্ষার দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। রাস্তা অবরোধ ও অবস্থান করে পরীক্ষার দাবি আদায় করে নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভুক্ত সাত কলেজ। বাকীরাও প্রস্তুতি নিচ্ছেন বড় জমায়েতের। এরই মধ্যে আবার গত ২৭ ফেব্রæয়ারি প্রাক-প্রাথমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৩০ মার্চ থেকে খুলে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে দেয়া হবে ঈদুল ফিতরের পর ১৭ মে এবং ক্লাস শুরু হবে ২৪ মে থেকে।

এই ঘোষণার পর থেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাহসিন নিশাত আদিত্য বলেন, শিক্ষামন্ত্রী বলছেন স্কুল-কলেজ খুললে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস চলবে। প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা কি স্বাস্থ্যবিধি বুঝে? ওরা এখনো ঠিক মতো বুঝেই না স্বাস্থ্যবিধি কি তাদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হলো। আর আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আছি, সকলেই অন্তত এটুকু বুঝি কিভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলে মনে করেন নিশাত।

রংপুরে একটি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী নাজিয়া ইসলাম নিপা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ২৪ মে, আর স্কুল-কলেজ ৩০ মার্চ। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কি প্রাথমিকের বাচ্চাদের চেয়ে অসচেতন? সরকারের এসব হাস্যকর সিদ্ধান্তে এমনি মনে হচ্ছে। বরং করা উচিত ছিল উল্টোটা। আগে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে ধীরে ধীরে স্কুল-কলেজ খোলা দরকার ছিল।

জানা যায়, গত একবছরের সেশনজটের সাথে নতুন সিদ্ধান্তের কারণে শিক্ষার্থীরা আরও ৬ মাসের সেশনজটে পড়তে যাচ্ছেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, তিন মাস পরীক্ষা স্থগিত থাকায় হাজার হাজার পরীক্ষা আটকে যাবে। শিক্ষার্থীতে আটকে থাকতে হবে আগের ক্লাসেই। স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা পারবেন না চাকরির আবেদন করতে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে একাধিক পরীক্ষা চলমান ছিল। আগামী মার্চ থেকেও আরো একাধিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল, যা ফের আটকে গেল। এর মধ্যে মাস্টার্স ফাইনাল পরীক্ষা, ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষ, অনার্স চতুর্থ বর্ষ, বিভিন্ন প্রফেশনাল পরীক্ষা, ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষ, মাস্টার্স প্রিলিমিনারি অন্যতম। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই বছরে প্রায় ৪০০ ধরনের পরীক্ষা নেওয়া হয়। এর সবটাই প্রায় আটকা পড়ে গেল।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকিব হাসান বলেন, আমাদের পরীক্ষা কয়েকটা শেষ হয়েছে। আরও চারটা পরীক্ষা বাকি আছে। পরীক্ষার জন্য আমরা অনেকে এই মহামারীর মধ্যে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ঢাকায় এসে মেসে উঠেছি। অনেকেই আর্থিক সঙ্কটে আছে। এর মধ্যে এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নেব না।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা বলছেন, রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা যদি হোস্টেলে না থেকে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন, তাহলে আমাদের পরীক্ষা নিতে সমস্যা কোথায়? আর পরীক্ষা যদি বন্ধই করবে, তাহলে ১০ মাস পর পরীক্ষা শুরুই বা করা হলো কেন? সাত কলেজকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিলে অন্যদেরও দিতে হবে।

হোম ইকোনমিক্স কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি, ২০১৯ সালে শেষ বর্ষের পরীক্ষা আজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণায় এসব পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর দ্রুততার সঙ্গে তাদের ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

রমজানে ক্লাস নিয়ে অভিভাবকদের ক্ষোভ: দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি ছিল বেশিরভাগ অভিভাবক-শিক্ষার্থীর। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ক্লাস শুরু করার বিষয়ে মানসিক প্রস্তুতি ছিল সকলেরই। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও তেমনই আভাস দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এই সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ঘোষণা দেন আগামী ৩০ মার্চ থেকে প্রাক-প্রাথমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ক্লাস শুরু হবে। এর ঠিক ১৫ দিন পরই পবিত্র রমজানের রোযা শুরু হওয়ার কথা। শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, দীর্ঘ এক বছর ছুটি থাকায় এবার শুধু ঈদুল ফিতরের ছুটি থাকবে। রমজান মাসেও ক্লাস করতে হবে শিক্ষার্থীদের। শিক্ষামন্ত্রীর এই ঘোষণায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকদের বড় অংশই। তারা মনে করেন, সরকার চাইলেই মার্চ থেকে ক্লাস শুরু করতে পারতো কিন্তু তা না করে রমজানে খোলা রেখে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের দুর্ভোগে ফেলা।

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক রেবেকা সুলতানা বলেন, রমজানে আমাদের এমনিতেই অনেক কাজ থাকে। বিশেষ করে সেহরী-ইফতার আয়োজন। এর সাথে যদি বাচ্চাকে নিয়ে সারাদিন স্কুলে বসে থাকতে হয় তাহলে কিভাবে সম্ভব হবে। তিনি বলেন, রমজানের বিষয়টি মাথায় রেখে মার্চের প্রথম থেকেই কেন খুলে দেয়া হলো না?

উইল লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের শিক্ষার্থীর অভিভাবক আজিজুল ইসলাম বলেন, সরকারের উচিত ছিল মার্চের শুরু থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া, আর রমজানের সময় বন্ধ রাখা। কারণ রমজানে এমনিতেই ঢাকা শহরে ব্যাপক ট্রাফিক থাকে। তার সাথে প্রচন্ড গরম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সবমিলিয়ে অভিভাবকদের জন্য ভোগান্তিকর হবে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রোযার সময় অভিভাবকদের এমনিতেই বাড়তি ব্যস্ততা থাকে। সে সময় সন্তানদের নিয়ে স্কুলে ছুটা বাড়তি বিড়ম্বনা তৈরি করবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ অন্তর বলেন, আবেগের বসে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত না। এমনিতেই আমাদের এখানে ১৪ এপ্রিল থেকে রোযা শুরু হচ্ছে। তার আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়টি ভেবে-চিন্তে গ্রহণ করা উচিত।

ভর্তি ও টিউশন ফি’র সঙ্কট: করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা, গত বছরের মার্চ থেকে বকেয়া টিউশন ফি, নতুন শ্রেণিতে ভর্তিসহ বড় অঙ্কের আর্থিক চাপে পড়েন অভিভাবকরা। আবার অনেক অভিভাবকের আয় কমে গেছে। ফলে টিউশন ও ভর্তি ফি পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছেন অভিভাবকরা, বাধ্য হয়ে কেউ কেউ নিয়েছেন টিসি (ট্রান্সফার সার্টিফিকেট), ভর্তি বাতিল করে ঝরে পড়েছেন অনেক শিক্ষার্থীই। নতুন করে ক্লাস শুরু হলে এসব শিক্ষার্থীর অনেকেই হয়তো ক্লাসে ফিরতে পারে। ফলে নতুন করে টিউশন ফি, ভর্তি ফি নিয়ে দেখা দিতে পারে সঙ্কট। যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে মানবিক হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। পুনঃভর্তি ফি আদায় না করতে নির্দেশনা জারি করা হলেও সেই ফি বাদ দিয়ে নানা খাত দেখিয়ে টাকা আদায় করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। যেসব প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছে তাদের বিরুদ্ধে সরকারের তরফ থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে নতুন করে ক্লাস শুরু হলেও সেই অর্থের সাথে জরিমানা ছাড়াও বাড়তি অর্থ আদায় করার আশঙ্কা করছেন ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। মিরপুরে বসবাসকারী বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অভিভাবক মাঝহারুল ইসলাম জানান, একটি প্রতিষ্ঠানে তিনি ছোট পদে চাকরি করেন। করোনার সময় চাকরি টিকে থাকলেও বেতন পাচ্ছেন সামান্য। তা দিয়ে সংসার ও বেসরকারি স্কুলে দুই সন্তানের লেখাপড়া চালানো সম্ভব হচ্ছে না। নতুন বছরে তাদের ভর্তি করাতে গেলে বিপুল পরিমাণ টাকার ভাউচার ধরিয়ে দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেহেতু বন্ধ সেজন্য তিনি আর তাদের ভর্তি করাননি। কিন্তু স্কুল খোলার সংবাদে তিনি আবার তাদেরকে স্কুলে পাঠাতে চান। তবে আশঙ্কা করছেন ভর্তি করাতে গেলে এখন কি আবার সেই পুরনো টাকার সাথে নতুন করে জরিমানা ধরিয়ে দেয় কিনা? তিনি বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়ার দাবি জানান। অন্যত্থায় প্রতিষ্ঠানগুলো নৈরাজ্য শুরু করবে বলেও মনে করেন মাঝহারুল ইসলাম।

বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যেসব স্কুলে বছরের শুরুতে ভর্তির জন্য নানামুখী তদিবর হয়, এবার সেসব স্কুলের অবস্থাও ভালো নয়। পুরোনো শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মোবাইলে ফোন করে ভর্তির জন্য অনুরোধ জানালেও তাতে তেমন একটা সাড়া মিলেনি। অভিভাবকরা শিক্ষকদের জানান, চাকরি নেই। বকেয়া টিউশন ফি ও নতুন ভর্তি ফি দেওয়া সম্ভব নয় এমন অসহায়ত্বের কথা জানান। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার কারণে অনেক অভিভাবক চাকরি হারিয়েছেন। পুঁজি হারিয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী অভিভাবক। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি থাকলেও অনেকের বেতন কমেছে। অনেকে চাকরি হারিয়েছে গ্রামে ফিরে গেছেন। ফলে অভিভাবকরা আর্থিক কষ্টে আছেন। এ কারণে স্কুলে সন্তানকে ভর্তি করাতে পারেননি। তবে স্কুল খুললে তারা আবার হয়তো ক্লাসে ফিরে আসার চেষ্টা করবে। সেক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর নির্দেশনা থাকতে হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ব্যবসায়িক মনোভাব থেকে বেরিয়ে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে চিন্তা করতে হবে।

এবিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, জাতীয় পরামর্শক কমিটির পরামর্শেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে সেগুলো সংস্কার করে এবং আবাসিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টিকা নিশ্চিত করেই খোলা হবে। একইভাবে স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও আগামী ৩০ মার্চের আগে টিকা প্রদান করে খোলা হবে। রমজানে ক্লাসের বিষয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘ একবছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তাই রমজানে ক্লাস হবে। শুধু ঈদের সময় ছুটি থাকবে।



 

Show all comments
  • Mohammad Nazrul Islam Akash ২ মার্চ, ২০২১, ১:২১ এএম says : 0
    রমযান মাসে ক্লাস খোলা রাখার যৌক্তিকতা নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • Prodip Kd ২ মার্চ, ২০২১, ১:২১ এএম says : 0
    ছোট কালে আমি পড়া না পারলে মা ছোট আরেকজনকে উদাহরণ দিয়ে বলতো ওর পা ধুয়ে জলখা এখন মনে হচ্ছে সেই কথা
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ মোশাররফ ২ মার্চ, ২০২১, ১:২৭ এএম says : 0
    রোজার মধ্যে এমনিতেই পরীক্ষার চাপ থাকবে।তার উপর সেহরি খেয়ে আবার ২-৩ ঘণ্টা পর উঠে স্কুলে যাওয়া অনেক কষ্টের কেননা সেহরির আগেতো ঘুমই আসেনা।আর যদি সকাল সকাল স্কুল দেওয়া না হয় এই রোজার মধ্যে আর কোনো পারফেক্ট টাইম নাই।কারণ কেউই রোজার সময় নামাজ মিস দিতে চাইবেনা।রোজার ক্লাস নিলে ছাত্রদের ঘুম জিনিসটাই হবেনা।রোজার কষ্ট না হয় বাদ দিলাম
    Total Reply(0) Reply
  • Nasim Uddin ২ মার্চ, ২০২১, ১:২৭ এএম says : 0
    প্রধানমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আমার একটা প্রশ্ন? আমরা যারা পলিটেকনিকে পড়াশোনা করি আমরা কি স্টুডেন্ট না??? নাকি আমরা অন্য কোন গ্রহের প্রাণী? দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে। পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের কোন ক্লাস ছাড়াই পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে । এক দেশে ২ নিয়ম কিভাবে হতে পারে?? কেন এমন অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত। দেশের সকল পলিটেকনিক শিক্ষার্থী জানতে চায়।।
    Total Reply(1) Reply
    • ২ মার্চ, ২০২১, ৫:০০ পিএম says : 0
  • Bitul D ২ মার্চ, ২০২১, ১:২৮ এএম says : 0
    বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলবে ঈদের পর।আবার স্কুল কলেজ খুলবে রমজানের আগে!!!বিষয়টি স্ব-বিরোধী কী না ?এমন সিদ্ধান্ত কতটুকু যৌক্তিক?
    Total Reply(0) Reply
  • Resma Afrin ২ মার্চ, ২০২১, ১:২৮ এএম says : 0
    মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি #কেয়ামত পর্যন্ত বাড়ানোর জোর দাবী জানাচ্ছি, আমরা #হাশরের ময়দানে ফাইনাল পরীক্ষা দেবো।
    Total Reply(0) Reply
  • Dipu Ray Dip ২ মার্চ, ২০২১, ১:২৯ এএম says : 0
    আজকাল এই শিক্ষাববস্থার উপর নির্ভর করাই অর্থহীনের মতো। আমাদের এই করোনার ছুটি যেন শেষেই হতে চাইছে না।যেখানে সবকিছু খোলামেলা চলছে সেখানে লেখাপড়াই কি করোনার শিকার হচ্ছে!
    Total Reply(0) Reply
  • Rakibul Islam Rayhan ২ মার্চ, ২০২১, ১:৩০ এএম says : 0
    শিক্ষকদের বেতন যদি করোনার কারণে বন্ধ থাকতো.. তাহলে আজ কষ্ট করে ছাত্র ছাত্রীদের আন্দোলন করতে হতো না। শিক্ষকরাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য আন্দোলন করতো..
    Total Reply(0) Reply
  • Obaidur Badol ২ মার্চ, ২০২১, ১:৩০ এএম says : 0
    নতুন নাটক মঞ্চস্থ হইল। দেশের শিক্ষাব্যবস্থার মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হইল।
    Total Reply(0) Reply
  • Bablu Afcher ২ মার্চ, ২০২১, ১:৩১ এএম says : 0
    একটা হিসাব মিলাতে পারছি না কেউ কি মিলিয়ে দিবেন? স্কুলে পড়ে কি হবে? কলেজে পড়বে। কলেজ পড়ে কি হবে? ভার্সিটি যাবে। কিন্তু ভার্সিটি তো ২৪ মে পর্যন্ত বন্ধ তাহলে ৩০ মার্চ স্কুল -কলেজ খুলে কি হবে
    Total Reply(0) Reply
  • Shafikul Islam ২ মার্চ, ২০২১, ৮:৪১ এএম says : 0
    রমজান মাসে ক্লাস না করলেই ভালো হত।
    Total Reply(0) Reply
  • Jack+Ali ২ মার্চ, ২০২১, ৫:০১ পিএম says : 0
    In Ramadan all the educational institute must be close.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ