Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যশোর হাসপাতালে আয়ার কান্ড

যশোর ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১০:০৪ এএম | আপডেট : ১২:০৬ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
যশোর জেনারেল হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডের আয়ার কারনে নবজাতকের কান্না শুনতে পেলেন না গৃহবধু আন্না।
 
 হাসপাতালের চিকিৎসক ও সেবিকাদের  অনুপস্থিতিতে ডেলিভারির সময় নবজাতকের গলা কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে আয়ার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আয়ার কান্ডে বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন আন্না ও তার পরিবারের সদস্যরা। 
 
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, নবজাতকটি মৃত ছিলো। শরীরে পচন ধরেছিলো। যার জন্য আয়ারা নবজাতকের পা ধরে টান দিতেই মাথা ছিড়ে মায়ের পেটের ভিতর থেকে গেছে। গৃহবধু আন্না যশোরের বেনাপোলের গাজীপুরের ইয়াকুব আলীর স্ত্রী। আন্না ও ইয়াকুব দম্পতি প্রথম সন্তানের পিতা মাতা হতে যাচ্ছিলেন।  
 
স্বজনেরা ও হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, শুক্রবার রাতে শার্শা উপজেলার বেনাপোল গাজীপুর  গ্রামের ইয়াকুব আলীর স্ত্রী পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আন্না বেগম (২৫) টয়লেটে পড়ে যায়। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে মধ্যরাতে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। 
 
শনিবার সকালে ওয়ার্ডের চিকিৎসক তানজিলা ইয়াসমিন একবার দেখে যান। ঐ ওয়ার্ডের নার্সদের চিকিৎসক তানজিলা রোগীর জরায়ুর মুখ খোলার ওষুধ দিতে বলে।  চিকৎসকের কথা মত আন্নাকে ওষুধ দেয়া হয়।
 
 শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আন্নার গর্ভে থাকা ছেলের দু পা বেরিয়ে আসলে ওই ওয়ার্ডের আয়া মোমেনা আন্নাকে ওটিতে নিয়ে বেরিয়ে পড়া পা ধরে টানাটানি করার এক পর্যায়ে বাচ্চাটির মাথা পেটের মধ্যে থেকে যায়। ছিড়ে  বেরিয়ে আসে বাচ্চার গলার নিচ থেকে বাকি অংশ। আন্নাকে ওটিতে ফেলেই পালিয়ে যায় আয়া মোমেনা।
 
ওই নবজাতকের পিতা ইয়াকুব আলী বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় স্ত্রীর শরীর থেকে নবজাতকের পা বেরিয়ে আসে।  প্রথমে ওয়ার্ডের সেবিকারা রোগী দেখে জানায় নরমাল ডেলিভারি হবে। এরপর দুপুরে চিকিৎসক তানজিলা ইয়াসমিন এসে চেকআপ করে বলেন নরমাল ডেলিভারিতেই হবে। এর কিছু সময় পর সেবিকা আবারও  জানায় সিজার লাগবে। 
 
সিজারের জন্য মেডিসিন আনার জন্য একটা স্লিপ দিয়ে হাসপাতালের একজন ব্যক্তি আমার সাথে দিলেন মেডিসিন আনার জন্য। আমি ওর সাথে না গিয়ে অন্য একটি ফামের্সি থেকে ঔষধ কিনে নিয়ে আসি। এর কিছুক্ষণ পরে সেবিকারা এসে জানান, আপনার বাচ্চা আর বেঁচে নেই। মায়ের অবস্থাও ভালো না। রোগীর কাছে যখন ভিতরে গেলাম তখন জনতে পারেন ওয়ার্ডের বেডের উপরেই আয়া মোমেনা তার স্ত্রীর নরমাল ভেলেভারি করাতে ডানা ছিড়ে ফেলছে আর বাচ্চার মাথা মায়ের শরীরের ভিতর। আমি দৌঁড়ে সেবিকাদের আনার জন্য এসে দেখি একটাও সেবিকা নেই, সবাই পালিয়েছে।
 
এ বিষয়ে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক তানজিলা ইয়াসমিন বলেন, আয়াদের ত্রুটি ছিল। তবে বাচ্চাটি আগেই মায়ের গর্ভে মারা যায়। আর যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায় ডাঃ দিলিপ কুমার রায় বলেন, ঘটনাটি শুনে আমিও হতবাক হয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হবে। 


 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অপচিকিৎসা

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
১২ নভেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ