পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
বিক্ষোভকারীরা ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর দুই-তৃতীয়াংশ ঘাঁটি দখলে নেয়ার চেষ্টা করেছে, দাবি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্মকর্তার
ইনকিলাব ডেস্ক : বিক্ষোভ এবং সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের ২৪ ঘণ্টা পর আবারো সেখানে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে কাশ্মিরের অন্তত আটটি জেলায় বলবত করা হয়েছে কারফিউ। পক্ষান্তরে কাশ্মীরের আন্দোলনকারীরা আগামী ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। প্রধানত এই ধর্মঘট মোকাবেলার করার জন্যই বারামুল্লা, নৌহাট্টা এবং এম আর গঞ্জে জরুরি অবস্থা জারি করেছে প্রশাসন। একটি সূত্র থেকে বলা হয়েছে, শুক্রবার জুমার নামাজের পর সমবেত বিক্ষুব্ধ কাশ্মীরিরা আবার রাস্তায় নামতে পারে এমন আশংকা থেকেই জরুরি অবস্থা জারি এবং কারফিউ আরোপ করা হয়েছে কাশ্মীরি জনগোষ্ঠীর উপর। গত বুধবার কাশ্মীর উপত্যকায় জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের পরই নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারায় দানিশ আহমেদ নামে এক যুবক। কুলগ্রাম জেলায় পিডিপির রাজ্যসভার সাংসদ নাজির আহমেদ লাওয়াইয়ের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। গণমাধ্যমকে সূত্র জানায়, প্রথমে নিরাপত্তারক্ষীদের আস্তানা ভাঙার পরে বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। এছাড়াও একাধিক জায়গায় বিক্ষিপ্ত সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে গত ৮ জুলাই হিজবুল মুজাহিদিন নেতা বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কাশ্মীর উপত্যকা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পরেদিন জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। এর ফলে গত ৫৪ দিন ধরে বন্ধ দোকান-বাজার। অনলাইন যোগাযোগ বাধাগ্রস্ত করার জন্য কাশ্মীরে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়। এর ফলে কাশ্মীরিদের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়ে পড়ে। সেখানে এখনো বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এই পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে স্বাধীনতাকামীদের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে ১১ হাজার কাশ্মীরি নাগরিক। এ ছাড়াও কাশ্মীর নিয়ন্ত্রণকারী ভারতীয় বাহিনীর ছররা গুলিতে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে অসংখ্য মানুষ। কিন্তু এতকিছুর পরেও ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠা স্বাধীনতাকামী কাশ্মীরে জনতার স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ থামানো যাচ্ছে না।
অন্যদিকে, দিল্লির একটি সরকারি সূত্র থেকে দাবি করা হয়েছে, কাশ্মীরে ভারতীয় আধা সামরিক বাহিনী সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স বা সিআরপিএফের দুই-তৃতীয়াংশ ঘাঁটি বিক্ষোভকারীদের হামলার মুখে পড়েছে। দখল করার লক্ষ্য নিয়ে গত ৫০ দিনে এসব ঘাঁটিতে হামলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন পদস্থ কর্মকর্তা। জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে হিজবুল মুজাহেদিনের তরুণ নেতা বুরহান ওয়ানি ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হলে বিক্ষোভ প্রতিবাদে ফেটে পড়ে গোটা কাশ্মীর। পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য শ্রীনগরসহ কাশ্মীরের অন্তত ৪০টি স্থানে পুনরায় সিআরপিএফ মোতায়েন করা হয়। ছয় বছর পর এ সব স্থানে আবার সিআরপিএফ মোতায়েন করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আস্থা গঠনের উদ্দেশ্য এসব স্থান থেকে ২০১০ সালে সিআরপিএফের ঘাঁটি উঠিয়ে দেয়া হয়েছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরে এ কর্মকর্তা আরো বলেন, কাশ্মীরে সিআরপিএফের ৬০০ ঘাঁটির মধ্যে ২৪২টি ঘাঁটির ওপর হামলা হয়েছে। ২০১০ সালে কাশ্মীরে ভারত বিরোধী গণআন্দোলনের সময়েও এ জাতীয় সংঘবদ্ধ হামলা হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, ঘাঁটি রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছে সিআরপিএফ। শ্রীনগরে নিয়োজিত সিআরপিএফের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, কাশ্মীরে ভারতীয় এই আধা সামরিক বাহিনীর ৭০০ কোম্পানী অর্থাৎ প্রায় ৭০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। অবশ্য সান্ধ্য আইন তুলে নেয়া সত্ত্বেও সিআরপিএফকে লক্ষ্য করে ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীদের পাথর ছোড়া এখনো বন্ধ হয়নি বলেও জানান তিনি। সূত্র : ইন্ডিয়া টুডে, পার্সটুডে, ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।