পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নিকাহ এবং তালাক নিবন্ধন প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজড করার নির্দেশনা চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ক্রিকেটার নাসির হোসেনের স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মির সাবেক স্বামী রাকিব হাসানসহ তিন ব্যক্তির পক্ষে অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান এ নোটিশ পাঠান। আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব এ নোটিশের ‘প্রাপক’।
নোটিশে বলা হয়, বিবাহ ও ডিভোর্স রেজিস্ট্রেশনের আইনগত বিধান থাকলেও তা ডিজিটাল না করার ফলে অসংখ্য প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। এছাড়া বিয়ে গোপন রেখে ডিভোর্স না দিয়ে বিয়ে করার ঘটনা ঘটতে দেখা যাচ্ছে। এর ফলে সন্তানের পিতৃ পরিচয় নিয়েও জটিলতা দেখা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বিবাহ সংক্রান্ত অপরাধ বেড়ে অসংখ্য মামলার জন্ম নিচ্ছে। তাই বিয়ে ও ডিভোর্স রেজিস্ট্রেশন ডিজিটাল হওয়া একান্ত আবশ্যক। বিয়ে ও ডিভোর্স ডিজিটালাইজেশন করলে তার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে সার্চ করলেই সব তথ্য বেরিয়ে আসবে। এতে প্রতারণা এবং হয়রানির হাত থেকে অসংখ্য মানুষ রেহাই পাবেন। নোটিশ প্রাপ্তির তিন দিনের মধ্যে বিয়ে ও ডিভোর্স রেজিস্ট্রেশন ডিজিটাল করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, বিয়ের পিঁড়িতে বসা ক্রিকেটার নাসিরের স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মি তার পূর্বেকার স্বামীকে ডিভোর্স না দিয়েই ক্রিকেটার নাসির হোসেনকে বিয়ে করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উত্তরা পশ্চিম থানায় এমন অভিযোগ তুলে সাধারণ ডায়েরি করেছেন তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসান। থানায় তামিমার সঙ্গে দীর্ঘ সম্পর্কের কথা জানিয়েছেন রাকিব। তামিমার সঙ্গে রাকিবের ১১ বছরের সংসারে ৮ বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। কিন্তু সব ফেলে নাসিরকে বিয়ে করায় থানায় অভিযোগ করেছেন রাকিব। এরপর এবার লিগ্যাল নোটিশ পাঠান ভুক্তভোগী রাকিব হাসান।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে রাজধানীর উত্তরার একটি রেস্টুরেন্টে নাসির ও তামিমার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। নাসিরের স্ত্রী পেশায় একজন কেবিন ক্রু। বিদেশি একটি এয়ারলাইন্সে চাকরি করেন।
প্রসঙ্গত : বৈবাহিক তথ্যের ডাটাবেজের গুরুত্ব তুলে ধরে গত ৪ জানুয়ারি দৈনিক ইনকিলাবে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। রাকিব হোসেনের লিগ্যাল নোটিশ যেন প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্যের বাস্তব প্রতিফলন। ওই প্রতিবেদনে তথ্য গোপন করে একাধিক বিয়ে, এর ফলে প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইল, হত্যা, আত্মহত্যা এবং নানাবিধ ফৌজদারি অপরাধ সংঘটিত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। বৈবাহিক তথ্যের ডাটাবেজ না থাকায় কিভাবে সামাজিক সঙ্কট ঘনীভ‚ত হচ্ছে তাও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বিদ্যমান ‘মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা, ২০০৯ এর বিধি ২৮(১)(ক) অনুযায়ী মুদ্রিত ‘নিকাহনামা’র দুর্বলতা এবং নানা অসঙ্গতি তুলে ধরা হয়। বলা হয় বিদ্যমান ‘নিকাহনামা’য় বর-কনের নানা ধরনের তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়। এর মধ্যে ৫ নম্বরে কনে কুমারী, বিধবা অথবা তালাকপ্রাপ্ত নারী কি না- উল্লেখ করতে হয়। ২১ নম্বরে বরের কোনো স্ত্রী বর্তমানে আছে কি-না এবং থাকলে অন্য বিবাহ আবদ্ধ হইবার জন্য বর ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ’ মোতাবেক সালিসি কাউন্সিলের অনুমতি নিয়েছেন কি না- উল্লেখ করতে হয়।
কিন্তু এসব তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের কোনো সুযোগ নেই। কনে তালাকপ্রাপ্ত হলে কিংবা বরের বর্তমান কোনো স্ত্রী থাকলেও সেটি গোপন রেখে বিবাহের কাবিন সম্পাদন করা হয়। এ গোপনের শাস্তিও অত্যন্ত গৌন। বর্তমান স্ত্রী ও শালিসি পরিষদের অনুমতি ছাড়া বিয়ের অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হলে ১ বছর কারাদন্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দন্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু অনুমতিবিহীন দ্বিতীয় বা পুনরায় বিয়েটি ‘অবৈধ’ গণ্য হবে না। বরং দ্বিতীয় বিয়ের কারণে প্রথম স্ত্রী আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে বিয়ে বিচ্ছেদ চাইতে পারবেন। অন্য দিকে কনের দেওয়া ৫ নম্বর তথ্যটি মিথ্যা প্রমাণিত হলে কি শাস্তি হবে সুস্পষ্ট নয়।
এ প্রতিবেদন পাঠক মহলে ব্যাপক সমাদৃত হয়। প্রতিবেদনটির অনলাইন ভার্সনে পাঠক মহল বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেন। এর মধ্যে ‘পারভেজ’ নামক একজন মন্তব্যে লেখেন, ‘ক্রমবর্ধিষ্ণু এ সঙ্কটের দায় শুধু মানুষের ব্যক্তিগত নয়। দায় রয়েছে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনারও। ‘রোদেলা’ জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনটির জন্য ধন্যবাদ জানান। ‘নাজিম’ লেখেন, ‘সমাজে নৈতিক শিক্ষার অভাব দেখা দিয়েছে।’ ‘আশিক’ লেখেন, ‘নিকাহ সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণে ডাটাবেজ প্রণয়ন করা জরুরি’।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।