Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কি আছে মঙ্গল অভিযানে?

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৭:৫৮ পিএম

১৮ ফেব্রুয়ারি নাসার রোভার পার্সিভিয়ারেন্স মার্স বা মঙ্গল গ্রহের নিরক্ষীয় অঞ্চলের নিকটবর্তী জেজেরো নামক একটি গিরিখাতে অবতরণ করে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের অরবিটার হোপ ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে মার্সের চারপাশে চক্কর দিচ্ছে। চীনের তিয়ানওয়েন-১ গ্রহটির কক্ষপথে প্রবেশ করেছে এবং এর ল্যান্ডার ও রোভার আগামী মে বা জুনে গ্রহটিতে নামার চেষ্ট করবে।

হোপ-এর আসার আগে মার্সের কক্ষপথে ৬ টি কৃত্রিম উপগ্রহ ছিল। নাসার কিউরিওসিটি রোভার এবং ইনসাইট ল্যান্ডার, যেগুলি যথাক্রমে ২০১২ এবং ২০১৮ সালে মার্সে পাঠানো হয়েছিল, সেগুলিও গ্রহটি থেকে তথ্য পাঠাচ্ছে। তবে, কেন এতগুলি দেশ এবং সংস্থা মার্স অভিযানে মনোনিবেশ করেছে? কি আছে মার্সে? এ প্রশ্নের উত্তর পেতে দশকের পর দশক ধরে ধারণা পেতে অরবিটার, ল্যান্ডার এবং রোভারগুলি পাঠানো হয়েছে। গ্রহটিতে রয়েছে স্রোত চিহ্ন। শুস্ক নদী উপত্যকা, অববাহিকা এবং ব-দ্বীপের অস্তিত্ব থেকে ধারণা করা হচ্ছে যে, এর উত্তর গোলার্ধে পানির অস্তিত্ব থাকতে পারে। মার্সের ভৌগলিক বিবরণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা অনুজীবের অস্তিত্ব বিকাশকারী পদার্তের সন্ধান পান, যা থেকে তারা ধারনা করেন যে, গ্রহটিতে অতীতে প্রানের অস্তিত্ব ছিল বা আজও বিদ্যমান থাকতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের রোভার মার্সের পাথরের ওপর গবেষণা করবে এবং প্রাচীন অণুজীবের রাসায়নিক চিহ্নগুলি সন্ধান করবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের হোপ অরবিটার বিজ্ঞানীদের বুঝতে সাহায্য করবে যে, কীভাবে মার্সের বায়ুমণ্ডলে নির্গত গ্যাস গ্রহটিকে ঠান্ডা ও শুষ্ক করে তুলেছে। তবে মহাকাশে বিকল্প বসবাস ও প্রানের অনুসন্ধান শুধু প্রযুক্তগত উৎকর্ষেই আটকে নেই। বিষয়টি বর্তমানে প্রভাবশালী দেশগুলির প্রতিপত্তি ও প্রযুক্তি-জাতীবাদের রাজনীতিতে পরিণত হয়েছে।

প্রতিবেশী দেশ ভারত ও জাপানের সাথে চীনের ক্রমবর্ধমান মহাকাশ প্রতিযোগিতা পৃথিবীতে তাদের আধিপত্য বিস্তারের অভিপ্রায়কে প্রতিফলিত করে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, যার মহাকাশ সংস্থাটি সবে ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত, তারাও এই প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়ে দাবি করেছে যে, তাদের হোপ অরবিটার আরব দেশগুলোর মধ্যে সর্ব প্রথম আন্ত:মহাকাশ পরিভ্রমনকারী।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং তুরস্ক সহ বেশ কয়েকটি দেশ ২০১০ সাল থেকে নিজেদের মহাকাশ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। আপাতত, মার্সে দেশগুলোর একচেটিয়া আধিপত্য রয়েছে। কিন্তু বিলিয়নেয়াররাও মার্স চায়। বেসরকারী রকেট নির্মাতা সংস্থা স্পেসএক্স-এর প্রধান ইলন মাস্ক দাবি করেছেন যে, তিনি ২০২৬ সালের মধ্যে মানুষকে মার্সে নিয়ে যাবেন।

জেফ বেজোসও সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, তিনি তার মহাকাশ উদ্যোগ ‘ব্লু অরিজিন’র প্রতি মনোনিবেশ করতে সাময়িকভাবে অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী হিসাবে পদত্যাগ করবেন। গত মাসে সংস্থাটি যাত্রী বহনের জন্য নকশাকৃত একটি রকেট সফলভাবে পরীক্ষা করে। বেজোস মার্সের ধূলির ওপর ভাসমান মহাকাশ উপনিবেশ স্থাপনের ধারণাটিকেও যুৎসই মনে করেন।

এভাবেই একসময় হয়তো গ্রহটিতে মানুষের ভ্রমণগুলি বৈজ্ঞানিক গবেষণার থেকে চেয়ে অবসর যাপন সম্পর্কিত বেশি হতে পারে। পার্সিভিয়ারেন্স যেমন মার্সে প্রাচীন জীবনের চিহ্নগুলি খুঁজে বেড়াচ্ছে, ঠিক সেভাবে নতুন সভ্যতাও সেখানে পা রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সূত্র: দ্য ইকোনোমিস্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মঙ্গল অভিযান

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ