Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভূরাজনীতি বদলালেও চীনের আধিপত্য বিরাজমান

যেভাবে চীনের কাছে হেরেছিল ভারত- সমাপ্ত

ডানা ইশরাত | প্রকাশের সময় : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০৪ এএম

ভারতের দুর্বল প্রস্তুতির কারণ ছিল রাজনৈতিক উদাসীনতা এবং দুর্বল গোয়েন্দা তথ্যের সংমিশ্রণ; ভারত সরকার কোনও আক্রমণ প্রত্যাশা করেনি। বরং তাদেও মনোযোগ পাকিস্তানের দিকেই বেশি ছিল এবং চীনা সেনাবাহিনীকে বোঝার এবং বিশ্লেষণ করার সক্ষমতা ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর খুব কম ছিল। বেশিরভাগ ভারতীয় ইউনিট আক্রমণের কবলে পড়ে চীনা বাহিনী সম্পর্কে সচেতন হয়।

চীনের সুবিধার সংখ্যা যথেষ্ট ছিল। পিএলএর ভারতীয়দের তুলনায় প্রায় সাতঃএক অনুপাতে সুবিধা ছিল। চীনা বাহিনী উভয় সীমান্তেই ভারতীয় বাহিনীকে দ্রæত পরাভ‚ত করে। ২৪ অক্টোবরের মধ্যে চীনা সৈন্যরা (হালকা আর্টিলারি সহায়তায়) উভয় সীমান্তেই নিরঙ্কুশ আধ্যিপত্য লাভ করে এবং অঞ্চলগুলো থেকে ভারতীয় বাহিনীকে তাড়িয়ে দেয়।

ইন্টারনেট আর্কাইভ ব্লগের জেফ কাপলান তার ‘ক্রলিং দ্য ওয়েব টুগেদার’-এ বলেছেন, ‘ভারতীয় বাহিনীতে ব্যাপকহারে মৃত্যু ঘটেছিল। ভারতীয় সেনাদের মৃতদেহ বরফের মধ্যে অস্ত্র হাতে জমে যাওয়া অবস্থায় গিয়েছিল। চীনা বাহিনীও বিশেষ করে রেজাং লাতে প্রচুর হতাহতের শিকার হয়েছিল।

এটি আকসাই চীনে যুদ্ধের সমাপ্তির ইঙ্গিত দিয়েছিল। কারণ চীন তাদের দাবি করা সীমানায় পৌঁছে গিয়েছিল এবং বহু ভারতীয় সেনাকে এ অঞ্চল থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। চীন দাবি করে যে, ভারতীয় সেনারা তীক্ত সমাপ্তির আগ পর্যন্ত লড়াই করতে চেয়েছিল। যুদ্ধটি তাদের প্রত্যাহার করে নেয়ার মাধ্যমে শেষ হয়েছিল, যাতে হতাহতের সংখ্যা কম করা যায়’। ১৮৬২ সালের ১৯ নভেম্বর একতরফাভাবে চীনা যুদ্ধবিরতি দিয়ে এই লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটে। পিএলএ যুদ্ধের সময় ভারতের অন্তর্ভুক্ত অঞ্চলটি দখল করে নিয়েছিল সেখান থেকে সরে আসে এবং চীনের দাবি করা অঞ্চলে অবস্থান নেয়। পরিশেষে, মাও সেতুং বিদেশ ও সামরিক নীতিতে যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখে যুদ্ধে জয় লাভ করেন। দ্রুত বিজয় সিসিপিতে তার প্রতিপত্তি ও ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। আপাত দৃষ্টিতে যুদ্ধটি নিঃসন্দেহে চীনের জন্য একটি বিজয় ছিল, যা কেবল তার শক্তিই প্রদর্শন করেনি, সেইসাথে সহনশীলতার মাত্রাও দেখিয়ে দিয়েছিল।

চীনের এ বিজয় তিব্বতের ওপর চীনা নিয়ন্ত্রণকে নিশ্চিত করেছিল এবং পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছিল। ভারতের দিক থেকে এ মর্মস্পর্শী পরাজয় জওহরলাল নেহ্রুর সরকারকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করেছিল এবং সম্ভবত তার স্বাস্থ্যেরও অবনতি ঘটিয়েছিল। যুদ্ধ সমাপ্তির দুই বছর পর নেহেরু মৃত্যুবরণ করেন। তবে এ যুদ্ধে ভারত ও চীনকে বিভক্তকারী সীমানার মৌলিক বিষয়গুলো পুরোপুরি মীমাংসিত হয়নি। কারণ বেইজিংয়ের দাবির প্রতি দিল্লি কখনই সম্মতি দেয়নি।

একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থে, দোকলাম মালভ‚মির চারপাশের বিষয়গুলো নিয়ে দ্ব›দ্বটি মূলত একইরকম আছে, ঠিক যেমন দেশ দু’টি ১৯৬২ সালে সমাধান না করে রেখে দিয়েছিল। সেই থেকে এই অঞ্চলের ভ‚-রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলে গেলেও বদলায়নি ক্ষমতার ভারসাম্য, যেখানে এখনও আধিপত্য ধরে রেখেছে চীন। সূত্র : ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট, উইকিপেডিয়া, ইন্টারনেট।



 

Show all comments
  • তাসফিয়া আসিফা ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১:০৮ এএম says : 0
    ভারতের কপাল মনে হচ্ছে অনেক দুঃখ আসতেছে
    Total Reply(0) Reply
  • তোফাজ্জল হোসেন ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১:০৮ এএম says : 0
    এই অঞ্চলের শান্তির জন্য ভারতকে দমিয়ে রাখা দরকার
    Total Reply(0) Reply
  • কে এম শাকীর ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১:০৮ এএম says : 0
    বাংলাদেশের উচিত ভারত বিরোধী শিবিরে যোগদান করা । ভারত সব সময়ই আমাদের শোষন করছে ।
    Total Reply(0) Reply
  • কায়সার মুহম্মদ ফাহাদ ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১:০৯ এএম says : 0
    চীনের সাথে পাঞ্জা লড়তে গেলে দাদাদের ধুতি নিয়ে টানাটানি দেখা দিবে।
    Total Reply(0) Reply
  • নাসিম ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১:০৯ এএম says : 0
    পুরো বিশ্বের মধ্যে একটা অসভ্যা, বর্বর ও ন্যারো মাইন্ডের দেশ ভারত। যাদের কোনো প্রতিবেশীর সাথে ভালো সম্পর্ক নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • দু খী জীবন ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১:১০ এএম says : 0
    পৃথিবীর একমাত্র অসভ্য জাতী হলো ভারতীয়রা
    Total Reply(0) Reply
  • AZAD ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৯:০০ পিএম says : 0
    একথা সত্যি যে বর্তমান সরকার সে দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে শেষ করে দিয়েছে । এটা নিঃসন্দেহে ভাবনার এ কারনে যে ওদের ছিল একটা অভিজাত গণতন্ত্রের ধারা যাকে এই ধর্ম নিয়ে নোংরা খেলায় মত্ত সরকার এই গণতান্ত্রিক ধরাকে দুমড়ে মুচড়ে চিরে টুকরো টুকরো করেছে। আর দেশের অন্ধ জনগণ চোখ বন্ধ করে বাড় বআর ওদেরকে নির্বাচিত করেছে । তাহলে তাদের জনগণকে কি বলবেন ? ওরা ধর্ম সচেতন নাকি ধর্মআন্ধ? ধিক ওদের জনগণকে - যারা এখনও ধরনান্ধতার লেবাজ ছেড়ে আধুনিক হতে পারলো না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ