পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
১৯৬২ সালের ৬ অক্টোবর চীনা নেতৃবৃন্দের লিন বিয়াও জানান, পিএলএর গোয়েন্দা সংস্থাগুলো খবর পেয়েছে যে, ১০ অক্টোবর (অপারেশন লেগহর্ন) ভারতীয় ইউনিটগুলো থাগ লাতে চীনা পোস্টগুলোয় আক্রমণ করতে পারে। এরপর বেইজিংয়ে, আসন্ন সঙ্ঘাতের পরিকল্পনা করার জন্য চীনা সামরিক বাহিনীর একটি বৃহত্তর সভা আহবান করা হয়। এদিকে, ১২ অক্টোবর নেহরু ঘোষণা করেন যে, তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ‘নেফার ভারতীয় অঞ্চল থেকে চীনা অনুপ্রবেশকারীদের সাফ করার’ নির্দেশ জারি করেন।
১৪ অক্টোবর চীনের পিপলস ডেইলি’র একটি সম্পাদকীয় ভারতের প্রতি চীনের চ‚ড়ান্ত সতর্কতা জারি করে, ‘সুতরাং মনে হচ্ছে যে, মি. নেহরু আরও বড় আকারে চীনা সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে আক্রমণ করার জন্য তার মনস্থির করেছেন। মি. নেহরুর কাছে চিৎকার করে বলার সময় এসেছে যে, বিদেশী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের গৌরবময় ঐতিহ্যের অধিকারী চীনের বীর সেনাদের তাদের নিজভ‚মি থেকে সাফ করতে কেউ কখনও পারে না।’
১৯৬৪ সালের ৫ মে সিআইএ’র ‘চীন-ভারত সীমান্ত বিরোধ’ নথি থেকে জানা যায় যে, চীন সতর্ক করে বলেছিল, ‘এখনও যদি এমন কিছু উন্মাদ থাকে যারা আমাদের আন্তরিক পরামর্শটিকে উপেক্ষা করার মতো যথেষ্ট বেপরোয়া এবং আরও পাঁয়তারা করার চেষ্টা করে, তবে তারা তা করুক। ইতিহাস তার অনিবার্য রায়টি উচ্চারণ করবে...এ জটিল মুহূর্তে...এখনও আমরা মি. নেহ্রুর কাছে আরও একবার আবেদন করতে চাই: পর্বতপ্রান্তেই কর্তৃত্ব বজায় রাখুন এবং ভারতীয় সৈনাদের জীবনকে আপনার পাশার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করবেন না।’
১৯৬২ সালের ২০ অক্টোবর চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি লাদাখে এবং তৎকালীন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত ম্যাকমাহন লাইন পেরিয়ে আক্রমণ করে। ভারত-চীন যুদ্ধে প্রায় ১০ হাজার থেকে ২০০ হাজার ভারতীয় সেনা এবং ৮০ হাজার চীনা সেনার মধ্যে এক মাসব্যাপী যুদ্ধ চলে। পিএলএ আসাম-উত্তর-পূর্ব সীমান্ত থেকে প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার (৩০ মাইল) দূরে সবথেকে গূরুত্বপূর্ণ শহর আসামের তেজপুরের আশেপাশের অঞ্চলও দখল করে নেয়। সেখানকার স্থানীয় সরকার তেজপুরের দক্ষিণে ব্রহ্মপুত্র নদের দিকে বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয় এবং সব কারাগার উন্মুক্ত করে দেয়। যে সরকারি কর্মকর্তারা থেকে গিয়েছিলেন তারা তেজপুরের মুদ্রার মজুদ ধ্বংস করে দেন।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রধান সম্পাদক এস.এন. প্রসাদ, পি.বি. সিনহা এবং এ.এ. আথালে তাদের ‘হিস্ট্রি অফ দ কনফ্লিক্ট উইথ চায়না, ১৯৬২’তে জানিয়েছেন, ‘আমেরিকার বা সোভিয়েতের জড়িত হওয়ার কোনও সম্ভাবনা এড়াতে চীন আক্রমণ করার জন্য অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিল। কারণ যুদ্ধের সময় আমেরিকা কিউবার বিরদ্ধে ব্যস্ত ছিল।’ কালাহা একই পরিস্থিতি স্বীকার করে বলেছেন, ‘চীনের আক্রমণ পশ্চিম এবং পূর্ব উভয় সীমান্তের সমস্ত সেক্টরে একই সাথে একই সময়ে শুরু হয়েছিল- সম্পূর্ণরূপে বেইজিংয়ের সময় অনুসারে সমন্বয় করে ২০ অক্টোবর ১৯৬২ ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে।’
বেশিরভাগ লড়াই উচ্চ উঁচুতে হয়েছিল। আকসাই চীন অঞ্চলটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫শ’ মিটার (১৬ হাজার ফুট) উপরে লবণের মরুভ‚মি এবং অরুণাচল প্রদেশ ৭ হাজার মিটার (২৩ হাজার ফুট) থেকে উঁচু কয়েকটি পর্বত শৃঙ্গবিশিষ্ট দুর্গম পর্বতমালা। অতি উচ্চতা এবং বরফাচ্ছন্ন্ হিমশীতল আবহাওয়া উভয় দেশের বহু সৈন্যর মৃত্যু ঘটায়। পাশাপাশি, সেখানে প্রয়োজনীয় রসদ ও গোলাবারুদের যোগান দেয়া ভীণষ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। চীনারা ভারতীয় টেলিফোন লাইনও কেটে ফেলেছিল। ফলে ভারতীয় বাহিনীর তাদের সদর দফতরের সাথে সহসা যোগাযোগ করা সম্ভবপর ছিল না।
চীন বা ভারত উভয় পক্ষেরই নৌ ও বিমান ব্যবহার না করার জন্যও চীন-ভারত যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য। বিষয়টি চীনের পক্ষে কাজ করেছে; ভারতীয় নৌবাহিনী তৎকালীন চীনের নৌবাহিনীর চেয়ে যথেষ্ট উন্নত ছিল এবং ভারতীয় বিমানবাহিনী আধুনিক বিমানে সজ্জিত (বেশিরভাগ ব্রিটিশ এবং ফরাসী যোদ্ধাদের দ্বারা সজ্জিত) ছিল। কিন্তু ভারতের প্রশাসন ও প্রতিরক্ষা বহিনীর মধ্যে সমন্বয়হীনতা যুদ্ধ বিমানের ব্যবহারের অন্তরায় ছিল। পাশাপাশি, ভ‚তাত্বিক বৈশিষ্ট্যের কারণে নৌবাহিনীও যুদ্ধটিতে কোনও ভ‚মিকা রাখতে পারেনি।
ভারত চীনের কোনও সতর্কবার্তায় কর্ণপাত করেনি এবং আত্মবিশ্বাসী ছিল যে, চীন সহসা ভারতের বিরুদ্ধে কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেবে না। অবশেষে, অব্যাহত যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি ভারতীয় সেনাদের ভুটানে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে। চীন ১৯৬২ সালের ২১ নভেম্বর যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করে। এভাবেই অতি আত্মবিশ্বাস , সমন্বয়হীনতা ও বরফাচ্ছন্ন সুউচ্চ দুর্গম পর্বতমালা চীনের বিপরীতে ভারতের পরাজয় ডেকে আনে। সূত্র : ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট, উইকিপেডিয়া, ইন্টারনেট। (চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।