পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পাহাড়ের ঢালু আর মাইনী নদীর তীরে ফসলি জমিতে পেঁপে চাষ করে সাফল্য অর্জন করেছেন এক শিক্ষিত তরণ। তিনি কয়েক বছর চাকরি করার পর নিজেই কিছু করার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। সেই স্বপ্ন বাস্তব হয়ে ধরা দেয় নিজেদের পতিত জমিতে। বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেন রেড লেডি জাতের পেঁপে চাষ। গত বছর বাগান করেন। আর গত দুই মাস ধরে ফলন আসতে শুর করেছে। ইতোমধ্যে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার পেঁপে বিক্রি করেছেন। তার এমন সাফলতা দেখে অনেক চাষি পাহাড়ী ভূমিতে পেঁপে চাষে এগিয়ে এসেছেন।
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার কামাক্যাছড়া গ্রামের প্রিয়দর্শীর চাকমার পেঁপে বাগান। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মাইনী নদীর তীরে নিজেদের জমিতে রবিশস্য কিংবা ধানের চাষ করতেন সেখানেই গড়ে তুলেছেন পেঁপের বাগান। প্রায় ৩০ শতক জায়গায় রোপণ করেছেন রেড লেডি জাতের ৩২০টি পেঁপে গাছ।
প্রিয়দর্শী চাকমা বলেন, কাচালং ডিগ্রী কলেজ থেকে ২০০০ সালে স্নাতক পাস করার পর দীর্ঘসময় বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় (এনজিও) কাজ করেন। এক পর্যায়ে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজেই কিছু একটা করার সিন্ধান্ত নেন। কর্মস্থলে ইস্তফা দিয়ে বাড়ি ফিরে কৃষি কাজে মনোযোগ দেন। পত্রিকায় রেড লেডি জাতের পেঁেপ চাষের প্রতিবেদন পড়ে বিষয়টি সর্ম্পকে খোঁজ খবর নেন। সহযোগিতার জন্য ছুটে যান কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগে।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ তার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। তাদের পরার্মশে রেড লেডি জাতের পেঁপে আবাদের সিন্ধান্ত নিয়ে সামনের দিকে পা বাড়ান প্রিয়দর্শী চাকমা। নিজের জমানো টাকা ও কৃষি ব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে রেড লেডির বীজ নিয়ে নিজেই পলিব্যাগে চারা তৈরি করেন। ৩০ শতক জায়গায় সারিবদ্ধ করে প্রায় ৩২০টি চারা রোপন করেন। পাহাড়ের মাটি পেঁপে চাষের জন্য উপযুক্ত এবং নদীর তীরের জমিতে প্রচুর পলি জমার কারনে ফলনও ভালো হয়।
চারা রোপণের প্রায় ৮ মাস পর পেঁপে গাছে ফুল আসতে শুরু করে। দুই মাস পরই ফলন তোলার সময় হয়। গত দুই মাসে প্রতি সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার করে ফলন বিক্রি করছেন। একটি বড় আকারের পেঁপে স্থানীয় বাজারে ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়। বড় পেঁপের ওজন ২ থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত হয়।
এই পেঁপে বেশ সুমিষ্ট হওয়ায় বাজারে অনেক চাহিদা। ইতোমধ্যে ৬০ হাজার টাকার পেঁপে বিক্রি করলেও বাগানে রয়েছে আরো ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার ফলন। বৈরী আবহাওয়া না থাকলে বাগান থেকে কমপক্ষে দুই লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করা যেত। বিভিন্ন সময় একটানা বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি ও বন্যায় গাছের ক্ষতি হয়েছে। গত মৌসুমে শিলাবৃষ্টিতে প্রায় দুই হাজার পরিপক্ক পেঁপে নষ্ট হয়েছে।
প্রিয়দর্শী চাকমার কথায় নিয়মিত পানি সেচ ও জৈব সার প্রয়োগে বাগান থেকে ভালো ফলন পাওয়া গেছে। আগামীতে আরো বড় আকারের বাগান করার পরিকল্পনা রয়েছে। পার্বত্যাঞ্চলের নদীর তীরে জমি আর পাহাড়ের ঢালু অংশে এই জাতর পেঁপে চাষের দারুন সম্ভাবনা আছে। তবে ভালো বিপণন ব্যবস্থা থাকলে কৃষক আরো লাভবান হত। শুধুমাত্র ছত্রাকের আক্রমণ ছাড়া অন্য রোগবালাই নেই বলে বাড়তি খরচ কম হয়।
কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, ‘রেড লেডি জাতের পেঁপে বেশ সুস¦াদু। পাহাড়ের ঢালু অংশে এর চাষাবাদ বেশ সহনীয়। বিশেষ করে পাহাড়ের ২৫ থেকে ৪৫ ডিগ্রি ঢালু অংশে এই জাতের পেঁপের ফলন অনেক বেশি হয় যাকে বলে বাম্পার। সমতল অঞ্চলে বাজারজাত করা গেলে কৃষক পেঁপে চাষে আরো আগ্রহী হবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।