বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
১৪ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের দরপত্র আহবান করেছে সিলেট কৃষি বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দরপত্রদাতাদের মধ্যে ৩য় হয়েছে দেশের আলোচিত ব্যবসায়ী জিকে শামীম সহযোগী দি বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ারিং এসোসিয়েটস লি:। এমনকি ২য় দরদাতাও তাদের। কিন্তু প্রথম সর্বনিম্ন দরদাতাকে নিয়মের ব্যতয় ঘটিয়ে কাজ নিতে মরিয়া হয়ে উঠছে জিকে শামীম চক্র। সেই মোতাবেক ছকও চুড়ান্ত করেছে তারা। জিকে শামীম চক্রের ঠিকাদারী প্রতিষ্টানগুলো কালো তালিকভূক্ত সহ বির্তকিত নানাভাবে। তারপরও সিকৃবিতে প্রভাব বিস্তার করে একাজ হাতিয়ে নিতে চাইছে তারা। কিন্তু এর নৈপথ্যে রয়েছে খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের দূর্নীতিবাজ একটি চক্রের বিশেষ ভূমিকা। তারাই কলকাটি নাড়ছে শামীম চক্রের হাতে কাজটি তুলে দিতে। এর মধ্যে দিয়ে পকেটভারী করতে চায় নিজদের। গোপন এ খবর ফাঁস হচ্ছে নানাভাবে।
ইতিপূর্বে শামীম চক্রের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৫কোটি টাকার কাজ হাতিয়ে নেয়ার পর দূর্নীতির ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। সেই মামলার তদন্তে উল্লেখ করা হয়েছে, ঠিকাদার প্রতিষ্টানগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়ের দরপত্র মুল্যায়ন কমিটির অযোগ্যতা ও অদক্ষতার সুযোগে ব্যবসায়ী হিসেবে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে অতি সুক্ষ্রভাবে তথ্যগত জালিয়াতির মাধ্যমে ক্রয় প্রক্রিয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহনে প্রভাব বিস্তার করে ওই কার্যাদেশ হাসিল করে নেয় তারা। এই মামলায় গত ২ ফেব্রুয়ারী সিনিয়র স্পেশাল দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেন দূর্নীতি দমন কমিশনের দুদক আইনজীবির করা এক আবেদনের প্রেক্ষিতে জিকে শামীমের বিরুদ্ধে শোর্ন এ্যারেষ্ট ও তার সহযোগী দি বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েটসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: ফজলুল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন।
এখন প্রশ্ন উঠছে কোন পরশে জিকে শামীম চক্রের কালো থাকা মোকাবেলা করবে সিকৃবি। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সেক্রেটারী হলেন ইঞ্জিনিয়ার মো: কামাল হোসেন মোল্লা। তিনি নিজেই আগাগোড়া বির্তকিত। সিকৃবির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নিয়োগ বাণিজ্যের ঘটনা শুরু হয় ২০১২ সালে। তৎকালীন ভিসি প্রফেসর শহীদ উল্লাহ তালুকদার, ভিসি পিএস টু ডা: খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার শাহজাহান ও প্রফেসর জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া ছিলেন এ নিয়োগ সিন্ডিকেটের হোতা। এ ঘটনায় তোলপাড় ঘটে। সচেতন শিক্ষক ও কর্মকর্তারা এ অবৈধ নিয়োগের উচ্চ আদালতে একটি রীট করেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) নিয়োগ প্রাপ্তদের আর্থিক সুবিধা ছাড় দেয়নি দীর্ঘকাল। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ মৌখিকভাবে এ নিয়োগ বন্ধের জন্য নির্দেশনা দেন। বেপরোয়া এ অবৈধ নিয়োগে বির্তকিত হয়ে ভিসি শহীদ উল্লাহ ক্যাম্পাস ছাড়তে হয় বিদায়ী সংবর্ধনা ছাড়াই। সেই সময়কার অবৈধ নিয়োগের বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী জুটিয়ে নেন দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সেক্রেটারী হলেন ইঞ্জিনিয়ার মো: কামাল হোসেন মোল্লা। পল্লী বিদ্যুতের একজন কর্মকর্তা ছিলেন তিনি। একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হয়ে অবৈধ নিয়োগের পথে আর্থিক ফায়দা প্রদান করে সিকৃবির সিভিল বিভাগে সরাসরিই নির্বাহী প্রকৌশলীর পদ বাগিয়ে নেন তিনি। অথচ একজন সহকারী প্রকৌশলী সরকারী দপ্তরে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হয়। কিন্তু তার কিছুই লাগেনি যোগ্যতা ছাড়াই রাম-রহিম হয়ে গেছেন অর্থের জোরে অবৈধ নিয়োগের সুযোগে। ‘বানরের হাতে কুড়াল’ উঠার মতো অবস্থা, যেদিকে গাছ পায় সে দিকে কূপায়। তিনিও তাই করছেন শুরুতেই অযোগ্যতা দিয়ে জাম্প দিয়েছেন ওই সিভিল বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদে। বিদ্যুতের মিস্ত্রি, ইট-পাথরের হিসেব কষা অসাধ্য হলেও তাই করতে পারছেন সিকৃবিতে তিনি। এমনকি বিশাল অংকের উন্নয়ন কাজের দরপত্র আহবান কারী মূল্যায়ন কমিটির সেক্রেটারী হয়েছেন এখন তিনি। তার কথিত যোগ্যতা দিয়ে জিকে শামীম চক্রের সহযোগীতায় ম্যানেজ প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন তিনি। তিনি একা নন, তার সময়ে বির্তকিত আর্থিক খেলায় নিয়োগ লাভ করেছিলেন এ প্রকল্পের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার সারফউদ্দিন।
সিকৃবি সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানিয়েছে, ‘ব্যাক ডোরে যারা এ বিশ^বিদ্যালয়ে নিয়োগ নিয়েছেন, তাদের কাছে বৈধ অবৈধের কোন দাম নেই।’ সেকারনে প্রশ্ন থেকেই যায় কোন শক্তিতে জিকে শামীম চক্রকে রুখবে সিকৃবি কর্তৃপক্ষ ! কারন অবৈধ নিয়োগ প্রাপ্তদের হাতেই দরপত্রের মূল্যায়ন, অথচ তাদের নিয়োগ, যোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ। নিজেদের নৈতিক মানদন্ডের মূল্যায়নেই অশ্বডিম্ব।!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।