বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় সর্বশেষ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ জনে। বুধবার বিকালে দুর্ঘটনাস্থলে ৯ জন ও বিভিন্ন হাসপাতালে আরো ২ জন সহ ওইদিন মোট ১১ জন নিহত হয়েছিল। নিহত ১২ জনের মধ্যে ৬ জনই যশোর এম এম কলেজের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র। তারা পরীক্ষা শেষে যাত্রীবাহী জে কে পরিবহনে বাড়িতে ফিরছিলেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার মারা গেলেন যশোরে চিকিৎসাধীন নড়াইলের আব্দুর রশিদ মোড়ল।
এদিকে মর্মান্তিক ওই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। শিক্ষা জীবনের শেষ পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বাস দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল তাদের। কালীগঞ্জ উপজেলার বড় ভাটপাড়া গ্রামের সনাতন দাশের মৃত্যুতে পরিবারে শোকের মাতম থামছেনা। তাদের একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে দিশেহারা বাবা-মা।
নিহত সনাতনের বাবা রনজিৎ দাস বলেন, রাজমিস্ত্রীর কাজ করে ছেলেকে পড়ালেখার খরচ চালাচ্ছিলেন। খুব কষ্ট করে খেয়ে না খেয়ে ছেলের ভবিৎসত গড়ছিলেন। আশা ছিল একদিন সে চাকরি করে সংসারের অভাব ঘুচাবে। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন ধুলিৎসাত হয়ে গেল।
একই উপজেলার সুন্দরপুর গ্রামের নিহত মুস্তাফিজুর রহমান কল্লোলের ভাই নাসির উদ্দিন বলেন, সে বর্তমানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাতক্ষিরাতে চাকুরীরত ছিলেন। আশা ছিল উচ্চ শিক্ষা লাভ করে চাকুরীতে প্রমোশন পাবে। কিন্তু চালকের অসচেতনতায় বাস দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল তার। এখন আমাদের পরিবারের সব স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল।
কল্লোলের দুলাভাই আলমগীর কবির বলেন, পরিবার ও সরকার এত টাকা খরচ করে তাদের লেখাপড়া শিখিয়েছে। গাছটি লালন পালন করে মাত্র ফুল ফুটেছে। সে থেকে ফল পাওয়ার আশা ছিল প্রত্যেকের। সেই ফুল অকালে ঝড়ে গেল। এ দায় ভার কার।
এদিকে ওইদিনের মর্মান্তিক ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী উপজেলার সাদিকপুর গ্রামের সাজেদুল ইসলাম তার অনুভুতি জানিয়ে বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। স্থানীয় সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার, কালীগঞ্জের ফায়ার সার্ভিস ,বারোবাজার হাইওয়ে পুলিশের কর্মীরা ও স্থানীয় লোকজন প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে আহতদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি ও মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন। আর মানুষের রক্তে লাল হয়েছে ঘটনাস্থল। মানুষের এমন বিপদ সে কোনদিন দেখেনি। সে আরো জানায়, আমি গিয়ে উদ্ধারে অংশ নিয়ে কাজ করেছি আর অঝোরে কেঁদেছি। আরও কেঁদেছি স্থানীয় সাংসদসহ প্রশাসন, আর এলাকাবাসীর বাড়ানো আন্তরিক সাহায্য দেখে।
উল্লেখ্য, বুধবার বিকেলে উপজেলার বারোবাজার তেলপাম্পের সন্মুখে ঝিনাইদহগামী জেকে পরিবহনের একটি বাস ও ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে যাত্রীবাহী বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আড়াআড়ি উল্টে পড়ে ঘটনাস্থলেই ৯ জন ও পরে আরো ৩ জন মারা যায়। দুর্ঘটনায় আহত হয় অন্তত ৩০ জন।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান জানান, নিহতদের ১২ জনেরই পরিচয় মিলেছে। পরিবারের কাছে তাদের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।