Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কুষ্টিয়ায় ইটভাটায় কাঠ পোড়াতে বসানো হয়েছে স’মিল !!

ভ্রাম্যমাণ আদালত চিমনী ফেলে দিলেও ক্ষমতার জোরে চালানো হচ্ছে ভাটা...!

কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ জানুয়ারি, ২০২১, ৪:২২ পিএম

কুষ্টিয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত অবৈধ ইটভাটার চিমনী ফেলে দিলেও গায়ের জোরে ভাটা চালাচ্ছেন প্রভাবশালীরা। এছাড়াও সদর উপজেলায় বেশ কয়েকটি ইটভাটায় নির্বিচারে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। এদের মধ্যে কাঠ ব্যবহার করে ইট পোড়াতে তালবাড়িয়ায় খয়বারের কেবিপি, সাব্বির রানার আরপিকে ও বারখাদায় আলালের এনবিসি এবং এএসএসবি ইটভাটা সহ জেলার বেশকিছু ইটভাটায় স’মিল বসানো হয়েছে।

আইন ও সরকারি বিধি-বিধিানের তোয়াক্কা না করেই আবাদি জমির পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে পরিবেশ বিপর্যয়কারী এসব ভাটা। ভাটায় কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কৃষি জমির উর্বর মাটি। গাছ ও জমির উর্বর মাটি উজাড়ের মাধ্যমে পরিবেশ ধ্বংসের প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, ইটভাটাগুলোতে এসব জ্বালানি কাঠ যাচ্ছে সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বাগান থেকে। ইটভাটায় গাছের ছোট ছোট ডালপালা বা পাতা ব্যবহার হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মোটা মোটা গাছ করাত দিয়ে কেটে ছোট ছোট টুকরা করে ইটভাটার চুল্লিতে পোড়ানো হচ্ছে। জুগিয়া, বারখাদা উত্তরপাড়া ও চারুলিয়াতে গড়াই নদীর পাশে শতশত বিঘা আবাদি জুমি দখল করে এখানে ভাটা তৈরি করে সো মেশিন বসিয়ে অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। সরেজমিনে তালবাড়িয়া চারুলিয়া, কেবিপি ইটভাটার মালিক খইবার প্রামাণিক। সেখানে গয়ে দেখা ভাটার সাথেই বড় কাঠ ফাড়াইয়ের সো মেশিন বসানো হয়েছে। বড় বড় গাছের গুড়ি এনা এখানে ফাড়া হচ্ছে।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একজন শ্রমিক বলেন, এখানে ৪ লাখ ইট তৈরি করতে ভাটায় ২০ থেকে ২২ দিন সময় লাগে। এতে প্রায় ৩৫ হাজার মণ খড়ী পোড়ানো হয়। এব্যাপারে ভাটার মালিক খয়বার প্রামাণিক বলেন এই স্থানে পরপর ১০টি ভাটা রয়েছে সবাই কাঠ ও খড়ি পোড়ায়। প্রায় ভাটায় স’মিল বসিয়ে কাঠ ফাড়ায় করা হয়।

পাশেই আরপিকে ইটভাটায় চলছে অবাধে কাঠ পোড়ানো। এখানেও সো মেশিন রয়েছে। এই ভাটার মালিক সাব্বির রানা পালটুর সাথে যোগাযোগের চেষ্ঠা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার পাশের এস এস বি ইট ভাটার মালিক হেলাল উদ্দিন, কে এ বি ইটভাটার মালিক আশরাফ, তিনি টিনের চিমনী দিয়ে ইট পোড়াছেন কাঠ দিয়ে। ভ্রাম্যমাণ আদালত চিমনী ফেলে দিলেও তিনি গায়েরজোরে ভাটা চালাচ্ছেছেন।

বারখাদা এম আই এইচ ইটভাটার মালিক মঙ্গলবাড়িয়ার বাবু। বারখাদা উত্তরপাড়া দুইটি ভাটা রয়েছে আলাল উদ্দিনের। সে এলাকার প্রভাবশালী। তার ভাটার নাম এনবিসি এবং এএসএসবি ইট ভাটা। প্রায় ১০০ বিঘা আবাদি জমি দখল করে সো মেশিন বসিয়ে সেখানে প্রতিদিন শতশত ট্রাক গাছের গুড়ি এনে মেশিনে ফাড়ায় করে ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে। ভাটা মালিকের ছেলে সিহাব উদ্দিন জানান, কিছু কিছু কাঠ ভাটায় পোড়াতে হয়। একই লাইনে জুগিয়া বাকির ভাটা রয়েছে। ও কমিশনার মহিদুলের এম ই বি নামের ইটভাটা ও তার ভাই মাহাবুলের রয়েছে এম এস কে ইট ভাটা।কানা বিল মোড় থেকে জুগিয়া পর্যন্ত রাস্তার বেহাল দশা। এসব ইট ভাটার গাড়ি চলাচলের কারনে রাস্তার এমন অবস্থা হয়েছে।

কুষ্টিয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আতাউর রহমান বলেন, অবৈধ ইট ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তাদের ভাটায়ও অভিযান চলবে। এবং অবৈধ ইট ভাটার মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এব্যাপারে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন চৌধুরী বলেন, তাদের ওইসব ভাটার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন, এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে পরিবেশ আইন অনুসারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুষ্টিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ